নবীগঞ্জে স্বর্ণকারকে হত্যা : স্বর্ণালংকার সহ ২০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট
পুলিশ বলছে পূর্ব শক্রতার জের ধরে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড
উত্তম কুমার পাল হিমেল: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার সঈদপুর বাজারে হাজী আব্দুস ছত্তার ম্যানশনে স্বর্ণ দোকানের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও একটি দামী মোবাইল ফোনসহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতদল। তবে পুলিশ বলছে পারিবারিক বিরুধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে আশপাশের লোকদের সাথে কথা বলেও এমন ধারনা করা হচ্ছে নিহতের নিকট আত্মীয়দের ধারনা সংঘবদ্ধ দল এ খুনের সাথে জড়িত থাকতে পারে। ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সার্কেল এ.এস.পি ও নবীগঞ্জ থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
জানাযায়, গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সঈদপুর বাজারে গভীর রাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুমন দেব (২০) কে নির্মম ভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করে নগদ টাকা স্বর্ণ-রৌপ্য সহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। পরদিন রবিবার সকালে নিহতের বাবা ভাত নিয়ে দোকানে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া না পেয়ে সার্টার খুলে দেখেন ঘরের ভিতরে মেঝতে ছেলের নিথড় দেহ পড়ে আছে এবং ঘরের মূল্যবান স্বর্ণালংকার, রৌপ্য ও নগদ টাকা কিছুই নেই। এ সময় তিনি চিৎকার করলে বাজারের পার্শবর্তী ব্যবসায়ীরা ছুটে আসেন। নিহত সুমন দেব দীর্ঘ ৩ মাস পূর্বে বানিয়াচং উপজেলার রঘু চৌধুরী পাড়া গ্রাম থেকে স্বপরিবারে আউশকান্দি ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামে বসবাস করে আসছেন। সে প্রায় দেড় মাস পূর্বে সঈদপুর বাজারস্থ হাজী আব্দুস ছত্তার খাঁন ম্যানশনে একটি দোকান কোটা ভাড়া নিয়ে স্বর্ণ রৌপ্যের ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারনা ডাকাতদল অত্যান্ত সুকৌশলে বন্ধুত্বের সুবাধে রাতে গল্প করে এক সাথে ঘুমিয়ে। রাতের কোন এক সময় ঐ ডাকতদল তাকে শাসরোধ করে হত্যা করে দোকের সন্ধুকে রক্ষিত স্বর্ণালংকার, নগদ তিন লক্ষ টাকা ও একটি দামী মোবাইলসহ প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। গতকাল সরেজমিনে ওই লাশের পাশে একটি সেভেন আপ ৫০০ এম এল, একটি এর্নাজি ড্রিংকস ও পটেটোর খালি প্যাকেট পাওয়া যায়। এতে ধারনা করা হচ্ছে তার কোন বন্ধু অত্যান্ত সুপরিকল্পিতভাবে একসাথে ঘুমানোর বাহানা করে ঠান্ডার সাথে অচেতন জাতীয় কোন কিছু পান করিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
সুমন দেবের প্রতিবেশী সেলুন ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ বৈদ্য বলেন, রাত অনুমান ১২টার দিকে সুমন দেবের দোকানে কয়েক জন লোকের কথা বার্তা শুনেছেন। এ সময় তিনি ধারনা করেন কোন পরিচিত লোকের সাথে শান্ত ভাবে কথা বলছেন। হয়তো কোন আত্মীয় হবে তাই এ ব্যাপারে তিনিও তেমন কোন গুরুত্ব না দিয়ে নিজ কক্ষে শুয়ে পড়েন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সার্কেল এএসপি নাজমূল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই হত্যাকান্ডের প্রাথমিক ক্লু-পাওয়া গেছে এতে মনে হয়েছে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের নিহত সুমনের দুই চাচাতো ভাই মিটন দেব ও রতন দেব নিহত সুমনের বন্ধু সোহেলের মাধ্যমে রাতে ওই দোকানে এসে ঘটনাটি সংঘটিত করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আসামী ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।