ঈদে নিরাপত্তায় সিলেট মহানগরীতে মাঠে দুই হাজার র্যাব-পুলিশ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ শুক্রবার পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দে মেতে উঠবে পুরো দেশ। ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়েছে সিলেট মহানগরীর ব্যস্ততা। জমে উঠেছে কোরবানির গরু বেচাকেনা। এই সুযোগে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে অপরাধীরা। তবে ঈদকেন্দ্রীক যেকোনো ধরনের অপরাধ ঠেকাতে মাঠে নেমেছে সিলেট মহানগর পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব।
ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ঈদকেন্দ্রীক অপরাধীদের ধরতে বিশেষ পরিকল্পনাও করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। সিলেটের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, পশুর হাটসহ বিভিন্ন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পশুবাহী ট্রাকে যাতে চাঁদাবাজী করা না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখছে পুলিশ। এদিকে নগরীর বিপণীবিতানগুলোর প্রতিও দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। সূত্র জানিয়েছে, ঈদকেন্দ্রীক নিরাপত্তায় সিলেটে কাজ করছেন প্রায় দুই হাজার র্যাব-পুলিশ।
এসএমপি সূত্রে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে কোনো অপরাধী চক্র যাতে নগরীতে বিচরণ করতে না পারে, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা যাতে বজায় থাকে, এজন্য পুলিশ প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। নগরীর পশুর হাট, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল প্রভৃতি এলাকায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি মহানগর পুলিশের এক সভায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মহানগরী জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। নগরীতে নিরাপত্তায় কাজ করছেন দেড় সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য। রয়েছে স্ট্রাইকিং ফোর্সও। এছাড়া মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ‘ফুট পেট্রোল’র সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঈদকে কেন্দ্র করে সিলেট মহানগরীতে এসএমপির ৮০ ভাগ জনবলকে নিরাপত্তার কাজে লাগানো হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের উৎসব ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। পুরো নগরীর প্রত্যেক মোড়ে মোড়ে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। বিশেষ করে ব্যাংক ও বিপণীবিতানগুলোতে কড়া নজর রাখছে এসএমপি। পুলিশের নিয়মিত বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নগরীজুড়ে সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য এবং নগর গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা কাজ করছেন বলেও জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কোরবানির পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজী ঠেকাতে সতর্ক চোখ রাখছে পুলিশ। এ লক্ষে নগরীর বিভিন্ন সড়কে নিয়মিত টহল দিচ্ছে মোবাইল টিম। এছাড়া জাল টাকা ঠেকাতেও কাজ করছে পুলিশ। নগরীর পশুর হাটগুলোতে জাল টাকা সনাক্ত করতে বসানো হয়েছে বিশেষ বুথ।
সূত্র আরো জানায়, ঈদকে সামনে রেখে মানুষ যেন নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে ও রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে পারে, সেজন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নগরীর মার্কেট, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছাড়াও রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরা ছাড়াও পুলিশ প্রহরা থাকছে ব্যাংক ও ব্যাংকের বুথগুলোর সামনে। এসবের নিয়ন্ত্রণকক্ষ সরাসরি এসএমপি সদর দফতরে থাকবে। এ ছাড়াও নগরীতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
নগরীতে ১৩০ জন র্যাব সদস্য টহল কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তন্মধ্যে সাদা পোশাকে রয়েছেন ৩০ জন র্যাব সদস্য।
এ ব্যাপারে র্যাব-৯-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে র্যাব। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঈদকেন্দ্রীক নিরাপত্তায় কাজ করবে র্যাব।’
এসএমপি অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘ঈদকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। নগরীর পশুর হাট, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল সর্বত্র কঠোরভাবে নজরদারী করা হচ্ছে।’