ধানক্ষেতে ফেলে শিশুকে নির্যাতন করলেন আ.লীগ নেতা!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ তুচ্ছ ঘটনায় পঞ্চম শ্রেণির এক মেধাবী ছাত্রকে ধানক্ষেতে কাদায় ফেলে পায়ে পিষ্ট করলেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। এক পর্যায়ে বেধড়ক পিটিয়ে শিশুটিকে আহত করে ওই নেতা। গত মঙ্গলবার এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজাপুর উপজেলার নৈকাঠি এলাকার একটি ধানক্ষেতে। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের নাম সজীব হোসেন (১১)। সে নৈকাঠি এসহাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। তাকে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতনকারীর নাম ফিরোজ জমাদ্দার। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতা।
ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় সজীবের মা শিরিন আক্তার রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ফিরোজ জমাদ্দাকে মঙ্গলবার বিকেলে আটক করে। তবে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সোবাহান খানের জিম্মায় দেয়া হয় ফিরোজকে।
এদিকে, পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বুধবার সকালে স্বাভাবিক থাকলেও বিকেলে বেপরোয়া হয়ে নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া শুরু করেছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
বুধবার দুপুরে চিকিৎসাধীন ছাত্র সজীব ও তার মা শিরিন আক্তার অভিযোগ করে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল বিরতির সময় ফিরোজ জমাদ্দারের ছেলে রাসেলের সাথে খেলাধুলা নিয়ে কথাকাটাকাটি হয় সজীবের। এসময় সজীবকে মারধর করে রাসেল। ওই সময় ফিরোজ বিদ্যালয়ের পাশেই গাছ কেনা বেচা করছিলেন। তার কাছে সজীব নালিশ জানাতে গেলে কিছু বুঝে ওঠার আগে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ফিরোজ জমাদ্দার। মারপিট করেন সজীবকে।
শিরিন আক্তার আরো অভিযোগ করেন, সজীব প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে ধান ক্ষেতের মধ্যে গেলে ফিরোজ ধান ক্ষেতে কাদার মধ্যে সজীবকে ফেলে বুকসহ সারাশরীরে পা দিয়ে দলন করেন। এতে সজীব সংজ্ঞা হারিয়ে ফেললে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে।
রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আবুল খায়ের রাসেল জানান, ওই শিশু বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষ করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। রাজাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাইউম জানান, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ জমাদ্দারকে মঙ্গলবার বিকেলে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
তার দাবি, উভয়েই আত্মীয় হওয়ায় শালিস বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়ায় রাতে তাকে সাতুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সোবাহান খানের জিম্মায় দেয়া হয়। এসআই জানান, তবে অভিযোগকারীরা মামলা করলে ফিরোজের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।