হোটেল বিলাসে অভিযান : প্রতারক মারজানা গ্রেফতার
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ নগরীর বন্দরবাজারস্থ আবাসিক হোটেল বিলাস থেকে মারজানা নামক এক দুর্ধর্ষ প্রতারককে আটক করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিলেট কোতোয়ালী থানার এসআই মাসুদ রানার নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে বুধবার রাত ১টায় এক যুবক সহ মারজানাকে আটক করেন।
সিলেট নগরীর আখালিয়ার বাসিন্দা আব্দুল আলিম জানান, ২০১৩ সালের শুরুতে আখালিয়া এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া নেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা মারজানা আক্তার। সে তার মাকে নিয়ে বসবাস করত। এক পর্যায়ে তার মায়ের সাথে আব্দুল আলিমের পরিচয় হয়। পরে মারজানা আক্তারের সাথে পরিয়চয় হয়।
এক পর্যায়ে মারজানা আখালিয়া থেকে বাসা পরিবর্তন করে নগরীর নবাব রোডে চলে যায়। তখন মারজানার সাথে আব্দুল আলিম মোবাইল ফোনে কথা বলা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাদের বিয়েও হয়। কিন্তু বিয়ের পর আব্দুল হালিমের কাছ থেকে চাপ দিয়ে টাকা নেওয়া শুরু করে মারজানা ও তার মা সোনাবালা বেগম। শুধু টাকা নয়, তারা কৌশলে আব্দুল হালিমকে নিয়ে স্বর্ণসহ ভিন্ন দামি জিনিসপত্রও ক্রয় করেন। কিন্তু মারজানা আব্দুল হালিমকে বিয়ের পরও অন্য ছেলেদের সাথে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলত। এ নিয়ে এক পর্যায়ে মারজানার সাথে বিবাদ বাধে আব্দুল হালিমের। গত জানুয়ারি মাসে শেষ হয়ে যায় তাদের সংসার।
আব্দুল হালিম আশ্রয় নেন কোতোয়ালী থানা পুলিশের। থানায় অভিযোগ দায়ের করে মারজানার বাসা থেকে কিছু মালামাল উদ্ধার করতেও সক্ষম হয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
মারজানার শুধু আব্দুল আলিমের সাথে প্রতারাণা করেনি, তার ফাঁদে ছাতক উপজেলার বাসিন্দা সুমন আহমদ, হবিগঞ্জ জেলার রাকিব আহমদ, কামালপুর বাজারের লিটন আহমদ, রাজা মিয়াসহ আরো অনেকেই পড়েছে। অনেকেই নিঃস্ব হয়ে মারজানার কাছে।
মারজানার ফাঁদে পড়া সুমন আহমদ জানান, মারজানার সাথে তার প্রথম পরিচয় হয় মোবাইল ফোনে। পরে মারজানা তার মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। একপর্যায়ে তারা দুজনে বিয়েও করেন। আব্দুল আলিমের মতো তার কাছে থেকেও মারজানা ও তার মা টাকাসহ দামি মালামাল হাতিয়ে নেন। একপর্যায়ে তিনিও বুঝতে পারেন মারজানার পাতনো ফাঁদের বিষয়টি। কৌশলে তিনি সরে যান।
সর্বশেষ মারজানার ফাঁদে পড়েন বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা সাজিদ খানের ছেলে ইকবাল খান। ইকবালকে নিয়ে মারজানা বুধবার সিলেট নগরীর বন্দরবাজারস্থ আবাসিক হোটেল বিলাসে রাত্রিযাপন করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার এসআই মাসুদ রানার নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ওই হোটেলে অভিযান চালন। রাত ১টায় মারজানা ও ইকবালকে আটক করে নিয়ে আসেন থানায়।
এ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি সুহেল আহমদ জানান, মারজানা একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বুধবার রাতে হোটলে বিলাস থেকে আটক করা হয়েছে। ওসি আরো জানান, মারজানার কাছ থেকে একাধিক মোবাইল ও সিম উদ্ধার করা হয়েছে।