মিরের ময়দানে অগ্নিদগ্ধ মা ও মেয়ের মৃত্যু

বিদ্যুত বিভ্রাটই কাল হলো মা-মেয়ের

monowara_burntসুরমা টাইমস ডেস্কঃ নগরীর মিরের ময়দানে অগ্নিকান্ডে দগ্ধ হওয়া মা ও মেয়কে বাঁচানো গেলো না। সেফটিক ট্যাংকের গ্যাস থেকে আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হওয়া মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন ছেলে। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃতরা হলেন- নগরীর মীরের ময়দান অর্ণব ৭ নম্বর বাসার মৃত জাকির হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৫) ও মেয়ে জাহিদা আক্তার (২০)। এছাড়া আহত হয়েছেন মনোয়ারা বেগমের ছেলে জহির হোসেন (১৪)। নিহত মনোয়ারা সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার মঙ্গলপুর গ্রামের সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিকীর স্ত্রী। সিলেট নগরীর মিরের ময়দানে অর্ণব ৭ নং বাসায় ভাড়াটে থাকতেন তারা।
ঝড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন কাল হলো স্বামী হারা মনোয়ারা বেগম (৪৫) ও মেয়ে জাহিদা আক্তারের (২০)।  স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে সিলেট দমকল বাহিনীর স্টেশন অফিসার জাবেদ হোসেন তারেক জানান, শুক্রবার রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে বাথরুমে যান জাহিদা। বাথরুমের কোমডের ঢাকনা খোলার সাথে সাথে সেফটিক ট্যাংকের গ্যাস বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। জাহিদাকে রক্ষা করতে গিয়ে তার মা মনোয়ারা বেগম ও ভাই জহির হোসেন দগ্ধ হন।
এদিকে, আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনোয়ারা বেগম ও জাহিদা আক্তারকে গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে জাহিদা আক্তার ও ৬টা ৫০ মিনিটে মনোয়ারা বেগম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। মা ও বোনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জহির হোসেন।
দমকল বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান মিথেন গ্যাস থেকেই আগুনের সূত্রপাত । আর দু’টি কারণে মিথেন গ্যাসের সৃষ্টি হতে পারে। একটি হচ্ছে-দীর্ঘদিন ধরে কমোডের ঢাকনা লাগানো অথবা স্যুয়ারেজের ট্যাঙ্কি থেকে কমোডে এসে গ্যাস ফর্ম করা। আগুনে বাথরুমের ফরমিকার দরজা ছাড়াও বাসার কিছু আসবাবপত্র ও মালামাল পুড়ে গেছে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স দিপালী জানান, মনোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে জাহিদার শরীরের প্রায় ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে। অবস্থা খারাপ হলে রাতেই তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু বিধি বাম। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন অগ্নিদগ্ধ মা ও মেয়ে।
শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের করুণ মৃত্যু সিলেট নগরবাসীকে শোকাহত করেছে। প্রতিবেশীরা জানান বাবা হারা নিহত জাহিদা আক্তার সিলেট মঈনউদ্দিন কলেজের সমাজ কল্যাণ বিভাগে (অনার্স) এর ছাত্রী ছিল।