কংগ্রেসম্যান কেভিন ম্যাককারথির সাথে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের সাক্ষাত
নিউইয়র্ক থেকে এনাঃ যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন গত ১৮ মার্চ (নিউইয়র্ক সময়) হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভের রিপাবলিকান মেজরটি লিডার কংগ্রেসম্যান কেভিন ম্যাককারথির সাথে তাঁর ক্যাপিটাল হিলস্থ কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত বলেন যে, এই মুহূর্তে সংগ্রাম কার্যত উগ্রবাদী, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্ম হয় চল্লিশ দশকের শেষার্ধে। এই দলের ভিত্তিগত মূলনীতি হলো গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের আশা -আকাঙ্খা ও ন্যায্য দাবির প্রতিফলন ঘটিয়েছিলো। পরবর্তীতে সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আরো শক্তিশালী ও সুসংহত হয় এবং তারই নেতৃত্বে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের আপামর জনসাধারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। রাষ্ট্রদূত বলেন যে, অপরদিকে ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নি:শংস হত্যাকান্ডের পর সামরিক শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জামায়াত ইসলামীর জন্ম হয় । তিনি বলেন যে, ৭৫ পরবর্তী সামরিক শাসকগণ সুচিন্তিতভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সুরক্ষা প্রদান করেছে এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিগুলোকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন জানান যে, ১০ম সংসদীয় নির্বাচনের এক বছর পুর্তিতে বিএনপি ও তার মিত্র জামায়াত ইসলামী অবিরত অবরোধ ও হরতালের ডাক দেয় এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, বোমা বিস্ফোরণ, যানবাহনে অগ্নিকান্ডের মাধ্যমে নির্বিচারে নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে। সাধারণ জনগণ বিএনপি ও তার মিত্রদের ধ্বংসাত্বক কার্যক্রম ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সাড়া দেয়নি।
রাষ্ট্রদূত জানান যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। রাষ্ট্রদূত কংগ্রেসম্যানকে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারীবান্ধব নীতি গ্রহণের মাধ্যমে নারীদেরকে দেশের মূল ধারায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদানের জন্য অনুরোধ জানান। কংগ্রেসম্যান ম্যাককারথির বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে অবহিত করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত পণ্যের প্রবেশাধিকারের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। কংগ্রেসম্যান ম্যাককারথি জিয়াউদ্দিনকে কার্যকালীন সময়ে সকল সম্ভাব্য সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর তৌফিক হাসান উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।