সিলেটে হরতাল অবরোধের থাবায় বিপর্যস্ত কৃষি
মুকিত তুহিনঃ দেশের সারা বছরে যে ফসল হয়,তার প্রায় ৮০ শতাংশ উৎপাদিত হয় ডিসেম্বর থেকে মার্চ এই চার মাসে। আমন ধান বেচাকেনার মোক্ষম সময় এখন । মাঠে বোরোর চারা প্রস্তুত,গম ও আলুর ভরা মৌসুম হচ্ছে জানুয়ারী। হরেক রকম সবজি,ভুট্রা ও সরিষা চাষের সময়ও এখন। বোরোর জন্য সেচ ও সারের এখনই প্রকৃষ্ট সময়। কিন্তু অবরোধের কারণে কৃষকের কাছে তেল,বীজ ও সার পৌছাতে সমস্যা হচ্ছে। টানা চার বছর আমন ধানের দাম পাচ্ছেন না কৃষক। ঘামঝরানো কষ্ঠের সবজি ক্ষেত্রেই নষ্ট হচ্ছে।
লাগাতার অবরোধ-হরতালে চাহিদা ও সময়মতো সার-ডিজেল পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না কৃষকের। এরই মধ্যে নন-ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে বিভিন্ন স্থানে। অনেক স্থানে মজুদ থাকলেও অবরোধ-হরতালের বাহানা তুলে দ্বিগুন দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কৃষিবিদরা বলছেন,এ সময়ে যদি কৃষক উৎপাদনে বাধা পান ,তাহলে তার নেতিবাচক ফল সারা বছর ভোগ করতে হবে। সামগ্রিক ভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তায় সংকট তৈরি হবে। তারা বলেন খাদ্যশস্য ও কৃষি উপকরণ সরবরাহের বিষয়টি অবরোধের আওতার বাইরে রাখা উচিত।
সিলেটে চালের মোট চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ আসে বোরো থেকে। তাই প্রয়োজন মতো সার ও সেচের জ্বালানি না পাওয়া গেলে এ মৌসুমে লক্ষ্য মাত্রার তুলনায় চালের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে প্রতি মণ ধানের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। মাঠে মাঠে শীতের সবজি গড়াচ্ছে নষ্ট হচ্ছে।মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তা ভোক্তাদের কাছে ঠিকমতো পৌছানো যাচ্ছে না।আবার শহরে যারা চাল ও সবজি কিনে খান,তাদের খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে জেলেরা অবরোধের কারণে মাছ নিয়েও পড়েছেন বিপাকে।এখন মাছের ভরা মৌসুম।খাল-বিলে পানি কম,তাই প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে।বিপুল পরিমান দেশীয় জাতের মাছ প্রতিদিন পচে যাচ্ছে। দক্ষিন সুরমার তেতলি গ্রামের সিরাজ মিয়া বলেন,রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে জমিতে ফসল ফলিয়েছি।কিন্তু যখন দাম পাওয়ার কথা তখন অবরোধ আর হরতালে সব কিছু নষ্ট করে দিয়েছে। তাই এখন বেচে থাকা কষ্ঠ হয়ে পড়ছে।