জিয়ার জন্ম দিনের শপথ হোক হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ
জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃবৃন্দ
নিউইয়র্ক থেকে এনা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমানের আহবানে সারা বাংলাদেশে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেই আন্দোলনে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘনিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনার পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বাংলাদেশে যারা বাকশালী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আহত হচ্ছে এবং যারা সংগ্রাম করছে আপনারা তাদের পাশে দাঁড়ান এবং হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে ফোন করে সবাইকে উৎসাহিত করুন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৭৯তম জন্মবার্ষিকীর দিনে আজকে আমাদের শপথ হোক হাসিনা ও বাকশাল মুক্ত বাংলাদেশ। গত ১৮ জানুয়ারি (নিউইয়র্ক সময়) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, যুব দল, ছাত্র দল ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৭৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা ও দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হামলার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিল্লুর রহমান জিল্লু এ কথা বলেন। নিউইয়র্কের বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা ব্রুকলীনের একটি রেস্টুরেন্টে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং বিএনপি নেতা এমলাখ হোসেন ফয়সালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ, আবু সুফিয়ান, যুক্তরাষ্ট্র যুব দলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র জাগপার সভাপতি রহমতুল্লাহ, বিএনপি নেতা এস এম ফেরদৌস, প্রফেসর নূরুল ইসলাম, পেনসিলভেনিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল খান হারুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রফেসর কাজী ইসমাইল।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুবদল নেতা ইকবাল হায়দার, সাজেদুল ইসলাম নিপু, অধ্যাপক আহসান উল্যাহ মিন্টু, যুক্তরাষ্ট্র যুব দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মাহমুদ, সিটি যুব দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ হায়দার আলী, জাহিদ খান, সোয়েব চৌধুরী, সিটি যুব দলের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভুইয়া, যুব দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমানত হোসেন আমান প্রমুখ।
জিল্লুর রহমান জিল্লু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আগে বাংলাদেশে আন্দোলনের কিছুটা চিত্রটা হলেও বিভিন্ন টিভিতে দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণের ফলে সব টিভি বিটিভিতে পরিণত হয়েছে। ৫ জানুয়ারি অবৈধ নির্বাচনের পরেও বেগম খালেদা জিয়া অবৈধ সরকারকে এক বছর সময় দিয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটাকে দুর্বলতা মনে করেছেন। তাদের নেতারা বলেছিলেন বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করার পর তিনি শুধু একটি ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর সেটি হচ্ছে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বেগম জিয়ার সেই ঘোষণার পরই আজ সারা দেশ অবরুদ্ধ। তিনি বলেন, স্বৈরশাসকের পায়ের নিচের মাটি যখন সরে যায় তখন ফ্যাসিস্ট রূপ লাভ করে, নির্যাতনের মাত্রা বাড়ে, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, সামাজিক গণমাধ্যম বন্ধ করে। স্বৈরচারি শেখ হাসিনাও এখন তাই করছে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারুণ্যের প্রতীক তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন দেশব্যাপী শুরু হয়েছে সেই আন্দোলনে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। শেখ হাসিনার পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, দেশে যারা বাকশালী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
আবু সাঈদ আহমেদ তার বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আজকে আমাদের আনন্দ- উল্লাস করার কথা কিন্তু অবৈধ শেখ হাসিনার সরকারে নির্যাতনে আমাদের উল্লাস নেই। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তার দুটো সন্তানকে তার কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। সেই সাথে সারা দেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তারেক আতঙ্কে ভুগছেন যে কারণে বিচারবিভাগ ব্যবহার করে তারেকের বক্তব্য প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। আজকে ভাইভার ও ট্যাঙ্গোও বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলে জাতিকে থ্রি জি উপহার দিয়েছেন। এক জন পুলিশের আইজি শাহীদুল হক, একজন র্যাবের ডিজি বেনজির আহমেদ অন্যজন বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।
অধ্যাপক নূরুল ইসলাম বলেন, আমি তখন ছাত্রলীগের নেতা ছিলাম। আমি নিজে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণায় যুদ্ধে গিয়েছি। তখন আওয়ামী লীগের কোন নেতাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে মুনাফেক এবং শয়তানের দল। তাদের নেতারা বলেন, আমি মুসলমান না, হিন্দুও না। এমনকি বঙ্গবন্ধু পরিবারের লোকজন ইহুদী এবং খ্রীস্টানদের বিয়ে করেছে। আজকে যে অবস্থা আমি যদি দেশে থাকতাম তাহলে আবার অস্ত্র ধরতাম। পাকিস্তানী হানাদারাও এভাবে বাঙালিদের উপর নির্যাতন করেনি, এখন শেখ হাসিনা যেভাবে নির্যাতন করছেন।
সভাপতি হেলাল উদ্দিন অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আজকে জিয়ার জন্ম দিনের শপথ হোক শেখ হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা দিদারুল আলম।