শফিক রেহমানকে গ্রেফতার স্বাধীন মতপ্রকাশের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ

শফিক রেহমানের মুক্তির প্রতিবাদে নিউইয়র্কে সমাবেশে বক্তারা

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন মনজুর আহমদ। ছবি- এনা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন মনজুর আহমদ। ছবি- এনা।

নিউইয়র্ক থেকে এনা: প্রখ্যাত সাংবাদিক, সাপ্তাহিক মৌচাকে ঢিল’র সম্পাদক ও লেখক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার বাংলাদেশে স্বাধীন মত প্রকাশের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং মিডিয়ার উপর কালো ধাবা হিসাবে দাবি করেছেন নিউইয়র্কে বসবাসরত লেখক ও সাংবাদিকরা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনু হত্যা ও বৈদেশিক রিজার্ভ চুড়ির বিষয়টি আড়াল করতেই সরকার শফিক রহমানকে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা সাজিয়ে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তারা। তারা অবিলম্বে এই বয়োজেষ্ঠ্য সাংবাদিকের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান। গত ১৮ এপ্রিল সোমবার নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা অডিটরিয়ামে নিউইয়র্কে বসবাসরত লেখক ও সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদে এসব কথা বলেন বক্তারা। বাংলাদেশ জার্নালিষ্ট এন্ড রাইটার্স এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার সভাপতি অধ্যাপক ড. শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মঞ্জুর আহম্মেদ, কলামিষ্ট মিনা ফারাহ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট মইনুদ্দিন নাসের , দৈনিক মানব জমিনের উপ সম্পাদক মনির হায়দার, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাপ্তাহিক ঠিকানার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাভেদ খসরু, বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ইমরান আনসারী, লেখক ও গবেষক ড. আবুল কাসেম, লেখক ও সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিন, সাংবাদিক রিমন ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা ফরহাদ খান, রাইটার্স ফোরাম অব নর্থ আমেরিকার সেক্রেটারি নঈম উদ্দিন, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আবু সুফিয়ান প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশটি পরিচালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সেক্রেটারি মনোয়ারুল ইসলাম।
সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুর আহম্মেদ বলেন, দেশকে ধ্বংস করবার সূদূর প্রসারী পরিকল্পনা থেকে শফিক রেহমানের মতো সিনিয়র সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হচ্ছে। দেশ আজ বাকশালের চেয়েও ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। কলামিস্ট মিনা ফারাহ বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিজ্ঞানী ও মুক্ত মনের মানুষরা দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নিয়েছিল । ঠিক সেই কায়দায় সাংবাদিকরা দেশ ছেড়ে বিদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, পরশক্তিগুলোর পুতলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানকে কেন্দ্র করে দেশে আরো বাঁশখালির ঘটনা ঘটবে। এ থেকে মুক্তির একটিই পথ গণবিপ্লব। তিনি মনে করেন শফিক রেহমানকে গ্রেফতার বেগম জিয়াকে গ্রেফতারের পূর্বাভাস। সাংবাদিক মইনুদ্দিন নাসের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের সভ্যতা, ভদ্রতা ও সৌজন্যতাবোধ উপড়ে ফেলে শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করেছেন। তিনি দাবি করে বলেন , প্রধনামন্ত্রী যা বলেন এবং যা করেন তার নির্দেশনা অন্য যায়গা থেকে আসে। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সবাইকে সংগ্রাম করতে হবে।
সাংবাদিক মানবাধিকার কর্মী ইমরান আনসারী বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে দেশের মানুষ দুই পরিবারকেই নেতৃত্বে দেখতে চায়। সুতরাং এই দুই পরিবারের কোনো সদস্যের প্রতি ক্ষতির প্রয়াস কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আদালত চূড়ান্ত রায়ের অবজার্ভেশনে যেখানে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে কারো দ্বারা কোনো প্রকারের অপহরণ কিংবা কোনো ধরণের ক্ষতিগ্রস্ত হবার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে সেখানে শফিক রেহমানকে এক্ষেত্রে জড়ানো অনৈতিক ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। ঠিকানা বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, শুধু মাত্র শফিক রেহমানের মুক্তির দাবি জানালেই সংকটের সমাধান হবে না। জাতির সামগ্রিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম এখন সময়ের দাবি। তিনি শফিক রেহমানের মুক্তি দাবি করেন বলেন, শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে, তিনি এর সাথে জড়িত নন বলেও দাবি করেন।