নব আনন্দে জাগো
অহী আলম রেজা:: ‘কালের যাত্রার ধ্বনি কি শুনিতে পাও?/ তারি রথ নিত্যই উধাও।/ জাগাইছে অন্তরীক্ষে হৃদয় স্পন্দন
বুকফাটা তারার ক্রন্দন।’ কালের রথ তার নিজস্ব গতিতে চলে। পেছন ফিরে তাকানোর অবকাশ তার নেই। এ রথ চরম নিরাসক্ত, আবেগহীন। এ রথে ভর করে অনেক ঘটনা নিয়ে বিদায় নিয়েছে আরো একটি বছর। অতীতের গ্লানিকে মুছে নতুন সম্ভাবনায় শুরু হয়েছে নতুন বছর।
বিদায় ১৪২২, স্বাগত ১৪২৩। শুভ নববর্ষ।
১৪২৩ সনের আজকের এই সূর্যোদয় সব অন্ধকার কেটে আমাদের নিয়ে যাবে অন্য এক সকালের দিকেÑযেখানে থাকবে না প্রতিক্রিয়াশীলতার অন্ধকার, অশিক্ষার অন্ধকার, দারিদ্র্য আর অনটনের অন্ধকার-এই আশা জাতির।
আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সকল অশুভ তৎপরতার বিরুদ্ধে জাগ্রত সংস্কৃতিই আমাদের শক্তি জোগাবে। শত দুর্বিপাকে শত বিপর্যয়ে মানুষের এই হার না মানা সংগ্রাম বৈশাখেরই রুদ্র চেতনার বহিঃপ্রকাশ যেন। এই চেতনার কাছে তাবৎ উৎপীড়ক, অশুভ শক্তির পরাজয় ঘটবেই। এই পয়লা বৈশাখে মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা আর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের নতুন শপথে দাঁড়াতে হবে।
পয়লা বৈশাখ বাঙালি জাতির সার্বজনীন উৎসবগুলোর মধ্যে প্রধান। এ দিনে বাঙালি জাতি পুরানো দিনের সব জরাজীর্ণতা দূর করে নতুনকে বরণ করে নেয়ার অন্যরকম এক আনন্দে মেতে উঠে। নতুন বছরে নতুন হালখাতা খুলেন মহাজন ও ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের নিমন্ত্রণ করে মিষ্টিমুখ করানোর মাধ্যমে নতুন ব্যবসায়িক লেনদেন শুরু করেন। পুরনো এই ‘হালখাতা’র ঐতিহ্য এখন খুব কমই দেখা যায়। তবে পান্তা-ইলিশ খেতে ভুল করেন না অনেকেই।
নববর্ষকে বরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত উৎসবের মধ্যে অন্যতম মঙ্গল শোভাযাত্রা। বর্ষবরণের অসাম্প্রদায়িক এ উৎসবে আজ মেতে উঠবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে আপামর বাঙালি। আজ সকল বয়সী নারী পুরুষ সাজবে বৈশাখি সাজে।