ফখরুলকে দিয়ে এক নেতার এক পদ শুরু
ডেস্ক রিপোর্ট :: বিএনপিতে এক নেতা এক পদ নীতি চালুর চেষ্টা ছিল দীর্ঘদিনের। কিন্তু এত দিনেও সেটি না হওয়ার কারণ গঠনতন্ত্রে একাধিক পদের ব্যাপারে ছিল শিথিলতা। তবে এবারের কাউন্সিলে এই নীতি সুনির্দিষ্টভাবে গঠনতন্ত্রে সংযোজন হওয়ায় তা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে দলটি।
আর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দিয়েই এই যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে।
মির্জা ফখরুলের কাছ থেকেও এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
এখন থেকে বিএনপির নেতারা দলে একটি মাত্র পদে থাকতে পারবেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে থাকলে অন্য কোনো কমিটির পদে থাকতে পারবেন না। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হলে দলের চেয়ারপারসন চাইলে সাময়িক সময়ের জন্য কাউকে একাধিক দায়িত্ব দিতে পারবেন।
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় অনেক নেতা তৃণমূলের নেতৃত্বে থাকায় সেখানকার নেতাকর্মীরা বঞ্চিত। অনেক নেতা বিএনপির শীর্ষ পদে আছেন, আবার জেলা সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন। অথচ বেশির ভাগ সময় এসব নেতা ঢাকায় অবস্থান করেন।
এ জন্য বিভিন্ন সময় দলের নেতাকর্মীরা সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদককে বিপদ-আপদে তাদের পাশে না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছেন হাইকমান্ডে। অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে না থেকে ঢাকায় আত্মগোপনের।
এ কারণে খালেদা জিয়া একাধিক পদে থাকার সুযোগ বন্ধ করার কথা ভাবেন। পরবর্তী সময়ে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। নেতারাও একমত হওয়ায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে কাউন্সিলরদের কণ্ঠভোটে এক নেতার এক পদ নীতি কার্যকরের কথা গঠনতন্ত্রে সংযুক্ত করা হয়। গঠনতন্ত্রে আগে একাধিক পদে থাকার ব্যাপারে নেতাদের নিরুৎসাহিত করার কথা বলা ছিল।
এদিকে কাউন্সিলের এমন সিদ্ধান্তে বেশির ভাগ নেতাকর্মী খুশি হলেও দীর্ঘদিন ধরে একাধিক পদে আছেন এমন নেতাদের কেউ কেউ ভেতরে ভেতরে নাখোশ। তবে এবার যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই বলে জানা গেছে।
দলের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা এমনটাই জানান।
বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, “এক নেতার এক পদের নীতি বাস্তবায়নের কথা এবার গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হয়েছে। এটা কার্যকর হবে। ফলে তৃণমূল থেকে নেতা তৈরির সুযোগ হবে। দলও শক্তিশালী হবে।”
এদিকে কাউন্সিলের ১২ দিনের মাথায় বুধবার মির্জা ফখরুলকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব এবং রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মিজানুর রহমান সিনহার নাম ঘোষণা করে বিএনপি। এই তিন নেতাকে খালেদা জিয়া অনুমোদনের পর সামনে চলে আসে- মহাসচিব ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি ও কৃষক দলের সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না!
মহাসচিব হওয়ার এক দিন পর প্রথমবারের মতো বুধবার সংবাদ সম্মেলনে আসা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, “ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠনতন্ত্রে এক নেতার এক পদ চূড়ান্ত করা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শিগগিরই কৃষক দল ও ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির পদ থেকে পদত্যাগ করব।সেখানকার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিয়েছি।”
ফখরুল আরো বলেন, “এক নেতার এক পদ’ নীতি আমাকে দিয়েই শুরু করব।