দুই মন্ত্রীর সাজায় বহুত ক্ষতি হয়েছে: সুরঞ্জিত

4ডেস্ক রিপোর্ট :: আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রী সাজা পাওয়ায় সরকারের ‘অনেক’ ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

বুধবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুই মন্ত্রীর ঘটনায় বর্তমান সরকার, সকলেরই বহুত ক্ষতি হয়েছে, বহুত ক্ষতি হয়েছে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত তার কমিটির বৈঠক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

মার্চের শুরুতে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতিকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তারা ওই বক্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করলেও আদালত অবমাননার দায়ে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে রবিবার সাজা দেয় আপিল বিভাগ।

দুইজনকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, আদালত অবমাননার বিষয়ে দেশের জনগণকে একটি বার্তা পৌঁছে দিতেই দুই মন্ত্রীকে এ দণ্ড।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মন্ত্রী পদে থাকা যৌক্তিক কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেননি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত।

তিনি বলেন, আমি এই বির্তকে জড়াতে চাই না। তবে রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে নৈতিক দিক দিয়ে সবাই দায়বদ্ধ। কেনো আমি পদত্যাগ করি নাই, পদত্যাগ করতে হলে আবার কারো কাছে কইয়া করতে হইবো না কি? এটা তাদের ন্যায়-নীতির উপর। আমাদের মনে রাখতে হবে, অসামাজিক, অনৈতিক, অন্যায় ও অবিচার কোনোটিই জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

২০১২ সালের ৯ এপ্রিল রাতে তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের ব্যক্তিগত সহকারী ওমর ফারুকের গাড়িতে বিপুল অর্থ পাওয়ার খবর প্রকাশের পর তা নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোল শুরু হয়। এরপর ১৬ এপ্রিল ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ দায় নিজের কাঁধে নিয়ে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

দণ্ডপ্রাপ্ত দুই মন্ত্রীর প্রসঙ্গ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সবাইকে ন্যায়-নিষ্ঠার মধ্যে থেকে কাজ করার আহ্বান জানান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

তিনি বলেন, ন্যায়-নিষ্ঠা বাদ দিয়ে পৃথিবীর কেউ চলতে পারে না। বিচার ব্যবস্থাও হতে হবে ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে। আমার হাতে ক্ষমতা থাকলেই আমি যা ইচ্ছা তাই করতে পারি না। এসব বিষয় নিয়ে যিনি দায়িত্বে আছেন বা যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের আরো বেশি করে ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনা হয়।

সুরঞ্জিত জানান, বিলটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

বৈঠক সম্পর্কে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মাননীয় সংসদ সদস্যগণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আর সরকারি কর্মকর্তাগণ জনগণের সেবক। সেদিকে লক্ষ্য রেখে কমিটি ‘ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্স’ এবং মাননীয় সংসদ সদস্যদের সম্মানী ভাতা নির্ধারণের লক্ষ্যে অধিকতর আলোচনার সুপারিশ করেছে।