রাগীব আলীর ‘বিশেষণের বাহার’!

17939ডেস্ক রিপোর্ট :: সিলেটে আলোচিত সমালোচিত এক নাম রাগীব আলী। নানা কারণেই বিভিন্ন সময়ে এই শিল্পপতি উঠে এসেছেন আলোচনায়। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সমালোচনাও কম হয়নি তাকে নিয়ে।

দেবোত্তর সম্পত্তি দখল, নিজের জন্মগ্রামের নাম বদলে নিজের নামে করে ফেলাসহ নানা কারণে সমালোচিত হয়েছেন রাগীব আলী। সর্বশেষ দখল করা দেবোত্তর সম্পত্তি তারাপুর চা বাগান ফিরিয়ে দিতে আদালতের রায় ঘোষণার ফলে ফের আলোচনায় উঠে আসেন রাগীব আলী।

রাগীব আলীর নামের সাথে ‘দানবীর’ বিশেষণটি অনেকটা যেনো নামেরই অংশ হয়ে উঠেছে। বারবার ব্যবহারের ফলে সিলেট অঞ্চলে এখন রাগীব আলীর নাম বলতে গেলেও অনেকে বলেন- দানবীর রাগীব আলী।

কেবল দানবীরই নয়, রাগীব আলীর নামের আগে ব্যবহৃত হয় আরো নানা বিশেষণ। যেনো একেবারে বিশেষণের বাহার। রাগীব আলীর মালিকানাধীন ও তার পুত্রের সম্পাদিত ‘দৈনিক সিলেটের ডাক’ পত্রিকার এই বিশেষণের বাহার সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়।

গত বছর থেকে রাগীব আলীর নামের আগে ‘সৈয়দ’ পদবী ব্যবহার শুরু হয়। তাঁর আগে নামের সাথে যুক্ত হয় ড.। সাম্প্রতিক সময়েই ‌’প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক’ বিশেষণও যুক্ত হয় রাগীব আলীর নামের আগে। নিজের মালিকানাধীন পত্রিকায় যুগশ্রেষ্ট দানবীর, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ দানবীর, মানবসেবায় কিংবদন্তি- এসব বিশেষণ তো ব্যবহৃত হয় অহরই। গত কয়েকদিনের ‘দৈনিক সিলেটের ডাক’ পত্রিকা ঘেঁটে বিশেষণের এই বাহারের কিছুটা খোঁজ মিলে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সিলেটের ডাক’র একটি সংবাদে রাগীব আলীর নাম লেখার পূর্বে বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়- ‘সমাজসেবামূলক অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বরেণ্য শিল্পপতি, প্রবাসে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, শিল্প সাহিত্য ও সাংবাদিকতার পৃষ্ঠেপাষক, মানবকল্যানে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান রাগীব রাবেয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, দানবীর…’।

৩ ফেব্রুয়ারি একই পত্রিকায় রাগীব আলীর নামের পূর্বে এসব বিশেষণের সাথে আরো যুক্ত হয় ‘উপমহাদেশের প্রখ্যাত দানবীর’ বিশেষণটি।

১৬ ফেব্রুয়ারিতে একই পত্রিকায় রাগীব আলীর নামের পূর্বে পরিচিতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়- ‘সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান, দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক ব্যাংক সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা ও সাবেক চেয়ারম্যান….’।

১৭ ফেব্রুয়ারিতে লেখা হয়- ‘শিক্ষানুরাগী, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, সফল চা শিল্প উদ্যোক্তা’।

২০ ফেব্রুয়ারি উপরের বিশেষণগুলোর সাথে যুক্ত হয়- ‘ সিলেটের প্রথম বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ক্রীড়া একাডেমী রাগীব-রাবেয়া বাংলাদেশ স্পোর্টস একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান, রাগীব রাবেয়া সাহিত্য পদকের প্রবর্তক, সমাজহিতৈষী, অসংখ্য মানবসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা’।

কেবল এক মাসের সিলেটের ডাক পত্রিকা ঘেঁটে দেখা যায় রাগীব আলীর এমন বিশেষণের বাহার।

রাগীব আলীর নামের পাশে ব্যবহৃত এমন বিশেষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। রাগীব আলীর নামের পূর্বে ‘প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক’ বিশেষণ যুক্ত করা হলেও তিনি আদৌ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন কী না এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল।