পুলিশের খাঁচায় সিলেটের আলোচিত সোর্স রুবেল
ডেস্ক রিপোর্ট :: সিলেটের আলোচিত পুলিশের সোর্স রুবেল আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঁদাবাজির দুটি মামলায় গতকাল সকালে সিলেটের কোতোয়ালি থানা পুলিশ রুবেলকে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে, রুবেল গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। রুবেল নিরীহ লোকজনকে মামলায় ঢুকিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতো। কখনও কখনও সে মাদক মামলায় সাধারণ লোকজনকে হয়রানিও করে। এসব কারণে ঘাষিটুলা ও কলাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা
তার ওপর অতিষ্ঠ ছিল। অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ঘাষিটুলা এলাকার মোস্তফা কামাল ও রকিব মিয়া। এরমধ্যে মোস্তফা কামালের করা মামলায় রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ২রা নভেম্বর ঘাষিটুলা এলাকার প্রবীণ মুরব্বি মোস্তফা কামাল একই এলাকার ভাড়াটে বসবাসকারী সোর্স রুবেলের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করেন। এর আগে তিনি সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি। পরে তিনি আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, রুবেল নিজেকে পুলিশের সোর্স দাবি করে এলাকার লোকজনের ওপর নানা রকম নির্যাতন ও হয়রানি করে। এছাড়া, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে পুলিশের বড় কর্তাদের দোহাই দিয়ে চাঁদাবাজি করে। তার এসব অপকর্মের ঘটনায় এলাকার লোকজন মানববন্ধনের আয়োজন করে। রুবেলের ইন্ধনে ওই মানববন্ধন থেকে আছাব আলী ও রকিব মিয়া নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে টাকার বিনিময়ে রকিবকে ছেড়ে দিলেও আছাব আলীকে ছাড়া হয়নি। এসব কারণে পরবর্তীতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। আর এ কারণে রুবেল মামলার হুমকি দিয়ে মোস্তফা কামালের কাছেও ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে কুপিয়ে হত্যা করার হুমকি দেয়। এদিকে, আদালত মোস্তফা কামালের মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই’র কাছে পাঠান। পিবিআই’র কর্মকর্তা ঝলক মোহান্ত অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পান। গেল জানুয়ারি মাসে পিবিআই’র পক্ষ থেকে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করা হয় আদালতে। তদন্ত রিপোর্টে আদালতে পিবিআই কর্মকর্তা ঝলক জানান, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় আসামি রুবেলের বিরুদ্ধে ৩৮৫/৫০৬ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আর পিবিআই’র তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এদিকে, গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি রুবেলের বিরুদ্ধে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় আরও একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন ঘাষিটুলা এলাকার রকিব মিয়া। ওই মামলায় রকিব মিয়া জানিয়েছেন, সোর্স রুবেল ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার কথা বলে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তার কথামতো চাঁদা না দেয়ায় গত ৫ই ফেব্রুয়ারি রকিব মিয়াকে মারধর করে সে। লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. মহিউদ্দিন খান জানিয়েছেন, গতকাল সকালে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। লামাবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বেনু চন্দ্র দেব রুবেলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিকে, চাঁদাবাজি মামলার বাদী মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, রুবেল শুধু চাঁদাবাজি নয়। পুলিশের দাপট দেখিয়ে সে মাদক ব্যবসা সহ নানা অপরাধে জড়িত। তার অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয় লোকজন। কয়েক মাস আগে তাকে এলাকায় গণধোলাই দিয়েছিল স্থানীয় জনতা।