শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের সাফল্যের প্রতীক

চিত্রন চারুশিক্ষালয়ের চিত্রন উৎসবের সমাপনী দিনে শিক্ষামন্ত্রী

Sylhet education minister pic-2‘রেখায় দেখি এবং দেখাই দিন, রঙে রাঙাই পৃথ্বীমর্ত্য মুক্ত ও ভয়হীন’ স্লোগানকে সামনে রেখে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে চিত্র ও চারু বিষয় বিদ্যালয় ‘চিত্রন চারুশিক্ষালয়’ আয়োজিত ৩দিনব্যাপী ‘চিত্রন উৎসব’। কয়েকশত শিশু-কিশোর, অভিভাবক ও শুভানুধ্যায়ীদের সমাগমে উৎসবমূখর ছিল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদমিনার। সমাপনী দিনে ভাঙল উৎসবের এ মিলনমেলা।
উৎসবের সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আজকে এখানকার মধ্যমনি হচ্ছে শিশুমনিরা। তাদেরকে কেন্দ্র করেই এই উৎসব, আমরা তাদেরকে সম্মান জানাতে এসেছি, তাদেরকে উৎসাহিত করতে আমরা এসেছি। তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ। আমাদের সামনের দিকে তাকানো উচিত, কিন্তু আমরা পিছনে পড়ে গেছি, শিশুরা সামনে। তাই শিশুরাই আমাদের সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু, তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের সাফল্যের প্রতীক।
চিত্রন চারুশিক্ষালয়ের পরিচালক সত্যজিৎ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক-সংগঠক দেবাশীষ দেবুর সঞ্চালনায় উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আজকের এ উৎসবে যে সকল অভিভাবকরা এসেছেন, শুভানুধ্যায়ীরা এসেছেন। তাদেরকে দেখে আমরা বুঝতে পারি তাদের আগ্রহ, সেইসাথে সিলেটের সংস্কৃতির চেতনাবোধ দেখে আমরা গর্ববোধ করতে পারি।
Sylhet education minister pic-1শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে দারিদ্রতা, নিরক্ষরতা, দুর্নীতি ও পশ্চাদপদতা থেকে মুক্ত করে একটি আধুনিক বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। সে লক্ষ্যে তাদের মধ্যে দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে নিয়ে গৌরববোধ করার চেতনা জাগিয়ে তুলতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষার উন্নয়নে নতুন শিক্ষানীতি নির্মাণ করে শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিক করতে কাজ করছে সরকার। আগে মেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল, বর্তমানে সকল ক্ষেত্রেই ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রাথমিকে শতকরা ৫১ ভাগ ও মাধ্যমিকে শতকরা ৫৩ ভাগ মেয়ে পড়াশোনা করছে। তাছাড়া উচ্চ মাধ্যমিকে ২বছরের মধ্যে এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ৬বছরের মধ্যে ছেলে-মেয়ের সংখ্যা সমান হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের যে লক্ষ্য ছিল শতকরা ৫০ভাগ মেয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে আসবে, আমরা ৩বছর আগেই সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আর আমরা প্রায় ৯৯ভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে আনতে পেরেছি। আমরা দেশকে বদলাতে চাই, দারিদ্রতা থেকে, নিরক্ষরতা থেকে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তার আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিশুদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন এবং এ সময় তিনি শিশুদের নিয়ে এধরণের উৎসব আয়োজন করায় চিত্রন চারুশিক্ষালয়কে ধন্যবাদ জানান।
সমাপনী আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রেসকাবের সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, সিলেট প্রেসকাবের সভাপতি ইকরামুল কবির ইকু ও অ্যাডভোকেট আব্বাস উদ্দিন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চিত্রন চারুশিক্ষালয়ের উপদেষ্টা সাংবাদিক বিলকিস আক্তার সুমি, চিত্রনের শিক্ষক আফরোজা আক্তার ফাতেমা, গোবিন্দ বর্ধন, কুহেলিকা খানম কলি, পাপলু চক্রবর্তী, শর্মিলী চৌধুরী রিয়া, রতœদ্বীপ চৌধুরী, জাহিদা খানম রিমা, ধনঞ্জয় চৌধুরী ধ্রুব, মালিহা সামিহা জামান, মামুন আহমেদ, আফরা ইবনাত খান প্রমূখ।
এ সময় উৎসবের উদ্বোধনী দিকে আয়োজিত চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরষ্কার প্রদান করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ক বিভাগে ১ম ঈষাণ কুমার বর্ষণ, ২য় আয়শা খান নায়না, ৩য় অর্পিতা অমি; খ বিভাগে প্রিয়ন্তী দাস পূর্ণম, ২য় অন্বেষা চৌধুরী অহনা, ৩য় বিদিপ্তা ভৌমিক বিপাশা; গ বিভাগে ১ম ওফেলিয়া, ২য় নাফিসা তানজীন, ৩য় রাকিব উদ্দীন প্রত্যয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে পুরষ্কার গ্রহণ করে।