কতদূর এগুলো মানুষ!

Alvi-nusrat20160303105841অহী আলম রেজা :: কতদূর এগুলো মানুষ ! মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকে কবি আল মাহমুদের এ উক্তি। মুনীর চেীধুরী তাঁর বিখ্যাত রক্তাক্ত প্রান্তর নাটকে বলেছেন- মানুষের রক্তে পিয়াস মেটায় মানুষ, জানোয়ার চাটে জানোয়ারের রক্ত। আমরা কি তবে এগিয়েছি ? নাকি অন্ধকার পথে যাত্রা করছে আমাদের বিবেক।
দাবি করছি- এই একুশ শতকের আধুনিক মানুষ আমরা কিন্তু প্রত্যক্ষ করছি জানোয়ার রুপী মানুষের আস্ফালন। পশুর মতো আচরণ করছি। বুদ্ধি- বিবেক লোপ পাচ্ছে দিন দিন। ঠুনকো বিষয়ে একজন আরেক জনকে খুন করছে অবলীলায়। যেন আমরা মধ্যযুগে বাস করছি। আমরা যারা মানবতাবাদী দাবি করছি তাদেরও অনুভ’তি ভোতা হয়ে গেছে। এসব খবর আমাদের নাড়া দেয়না, স্পর্শ করেনা।
দেশে শিশু খুনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। এটা কোনো অবস্থাতেই স্বাভাবিক বিষয় হতে পারেনা। এতকাল একটা সয়ে যাওয়া বিষয় ছিল যে, ক্ষমতাশীল রাষ্ট্র আরেকটা দেশ আক্রমণ করে বোমা ছুঁড়লে সেখানে খুন হয় শিশুরা। দেশে দেশে যুদ্ধ যখন চলে, খাবার সংকটে ঘাস, মাটি লতাপাতা এমনকি নিজের শরীরের মাংস খায় শিশুরা। তারপর বোমা এসে তার শরীর উড়িয়ে দিয়ে মুক্তি দিয়ে যায়। ঘর নাই, বাড়ি নাই, আশ্রয়ের সন্ধানে এখানে ওখানে সীমান্তে সীমান্তে ঘুরে মরছে তার আগেই ধর্ষণের শিকার হয় শিশুরা। কিন্তু ফুলের মতো শিশুরা এখন নিজের ঘরে মায়ের হাতে খুন হয়।
গত চার বছরে দেশে এক হাজারেরও বেশি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই হত্যা করা হয়েছে ২৯ শিশুকে। সোমবার রাজধানীতে নুসরাত আমান অরণী (১৪) ও আলভী আমান (৬) নামে
দুই ভাই-বোনকে হত্যা করে তাদের মা। এ কোন অন্ধকারের দিকে যাত্রা শুরু করেছে আমাদের বিবেক, মনুষত্ব?
এর আগে শিশু খুনীদের মৃত্যুদন্ড নিশ্চিতের কথা বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন এই ঘৃণ্য কীঠদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
স্বামী সন্তান রেখেও যারা পরকীয়া করছে আর পরকীয়ার ঘোরে পড়ে নিজেদের সন্তানদের নিজ হাতে খুন করছে সেইসব পশুদের জন্য এমন একটা দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা হোক, যেন এই বিচার দেখে, এখন যারা পরকীয়া করছে আর ভবিষ্যতে যারা পরকীয়ার দিকে যাচ্ছে, তাদের শরীর যেনো সারা জীবনের জন্য একদম বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যায়। হাজার চেষ্টা করলেও যেন আর শরীর গরম না হয়। এই গরম মানুষকে পশুর চেয়েও অধিক পশু করে তোলে।
রাজধানীতে দুই শিশুর খুনের কথা স্বীকার করেছে ওই মহিলা। পরকীয়ার এতো তেজ? মায়ের মমতাকে, মাতৃত্বের শক্তিকে তুচ্ছ করলো। বয়স আছে। শরীরে যৌণ উত্তেজনাও আছে নিশ্চয়, কিন্তু দেখলে মনে হয় না। মধ্যবয়স্কা এই নারী স্বামী ছাড়াও অন্য পুরুষের কাছে তৃপ্ত। সেই তৃপ্তি তাকে এতোটাই পাগল করেছে নিজের ঔরষজাত সন্তানকেও খুন করতে দ্বিধা করেনি। খুনের পর সে সুস্থ আছে। শরীর-চাহিদা এত্ত খারাপ? মানুষকে এতোটা পশু করে দেয়? ।
সন্তানের কাছে সবচেয়ে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় মায়ের আচল। আর সেই মা ছোট্ট দুটি ফুটফুটে বাচ্চাকে কিভাবে হত্যা করল? একবার ফাঁসি হলেও তো এই নিষ্ঠুর ভয়ংকর মা’র বিচার সঠিক হবে না। ফাঁসির থেকেও ভয়ংকর বিচার হতে হবে তবে। যাতে আর কোন মা এ ঘৃণ্য কাজ করতে না পারে।