নগরীতে নয়া পরিকল্পনায় অভিযান শুরু-২৫ লাখ টাকার ওষুধ খেয়েও মশা মরে না!

images ডেস্ক রিপোর্ট ::  গেল বছরও মার্চে ২৫ লাখ টাকার ওষুধ ছিঁটানো হয়েছে সিলেট নগরীর ড্রেন, নালা আর বাসাবাড়িতে। কিন্তু ২৫ লাখ টাকার ওষুধের খেয়েও মশা মরেনি। ওই বছরজুড়ে মশার কামড় সহ্য করেছেন নগরবাসী। অভিযোগ ছিল, মশার ওষুধ কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে পানি মিশিয়ে ওষুধ স্প্রে করা হয়েছিল। এবারও মার্চ মাসে ২৪ লাখ টাকার ওষুধ মশাকে টার্গেট করে কেনা হয়েছে।
গতকাল থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)-এর মশক নিধন শাখা নগরীতে সাত দিনের মশা নিধন অভিযান শুরু করেছে। নগরবাসীর প্রশ্ন, মশা মরবে তো, নাকি বছরজুড়েই এবারও কামড় খেতে হবে ?
সিসিক মশকনিধন শাখা জানায়, ২০১৫ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে নগরীতে ২৫ লাখ টাকার ওষুধ কিনেছিল নিধন শাখা। সেই ওষুধ এক-এক দিন এক-এক ওয়ার্ডে স্প্রে করা হয়।
কিন্তু বিভিন্ন ওয়ার্ডবাসীরা জানিয়েছেন, কোনো ওষুধ স্প্রে করা হয়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, লোক-দেখানো অভিযানে ওষুধের সঙ্গে পানি মিশিয়ে ড্রামের পানি স্প্রে করা হয়েছে। আর গুদামের ওষুধ বিক্রি কওে দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গত বছরে নগরীর বাসাবাড়ির মশা নিধন না হওয়ায় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তৎকালীন নগর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও মশক শাখার পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ বুলবুল। তার বিরুদ্ধে মশার টাকা লুটপাট ও ওষুধ বিক্রির অভিযোগ ওঠে। যে কারণে, ওই পদ থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে মশক নিধন পরিদর্শক মোহাম্মদ উল্লাহ বুলবুল বলেন,‘ অভিযোগ ছিল মানুষের, এটা সত্য। তবে, ওই সময়টায় সময়মতো স্প্রে করতে না পারায় বৃষ্টির সময়ে স্প্রে করেছি। যে কারণে পানিতে ওষুধ মিলিয়ে গেছে, মশা মরেনি।’
সিসিক সূত্র জানায়, এবার মশকনিধন শাখাকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন মো. হানিফুর রহমান। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর মশা নিধনে নতুন করে পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, দুমাস আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে ড্রেন-নালা । এবারও ২৪ হাজার টাকার ওষুধ কিনে গুদামজাত করা হয়েছে। বৃষ্টির আগেই সাত দিনের অভিযানে নামতে করা হয়েছে একটি কমিটি । এই কমিটির তদারকিতে নগরীর ২৭ টি ওয়ার্ডেই এক সাথে ওষুধ স্প্রে কার হবে।
মশক শাখা সূত্র জানায়, গতকাল পয়লা মার্চ মঙ্গলবার থেকে সাত দিনের মশক নিধন অভিযান শুরু হয়েছে। নগরীতে সিসিকের ৫৪ জন কর্মী ওষুধ স্প্রে করছেন । প্রতি ওয়ার্ডে ৩ লিটার ওষুধ বরাদ্দ আছে। ৮ লিটার পানিতে ২০ মিলি গ্রাম ওষুধ মিশিয়ে স্প্রে করা হচ্ছে।
সিসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা হানিফুর রহমান জানান, গত বছর পরিকল্পনায় ভুল ছিল। তাই মশা মরেনি। এবার নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একটি কমিটি করিয়ে অভিযান দেখভাল করা হচ্ছে। সাত দিনের অভিযানে যদি মশা না মরে, তবে অভিযান আরও চলবে। সারা বছরের ওষুধই আমরা কিনে রেখেছি।
২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাকবির ইসলাম পিন্টু জানান, সকাল থেকেই তার এলাকায় মশা নিধন শুরু হয়েছে। তিনি নিজে থেকে মশার উৎস স্থানগুলোতে স্প্রে করিয়েছেন। এবার অভিযান সুন্দরভাবেই হচ্ছে।
সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব বলেন, এবার একটু নতুন পরিকল্পনায় সবকিছু গুছিয়ে মাঠে নেমেছে মশক নিধন টিম। সব ওয়ার্ডের একসঙ্গে ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। সাত দিন চলবে। ওষুধও পর্যাপ্ত আছে। ওয়ার্ডগুলো থেকে মনিটরিং কমিটির রিপোর্ট এলে আরও স্প্রে করা হবে।’