অগ্নিঝরা মার্চ ‘বাংলাদেশ স্বাধীন করো’
ডেস্ক রির্পোট :: বাঙালির অনন্য গৌরব ও সংগ্রামী চেতনার অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। এ মাসেই বাঙালি তার অধিকার আদায়ের চূড়ান্ত লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলেও চূড়ান্ত আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ১ মার্চ। এ দিন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষণে পূর্বনির্ধারিত ৩ মার্চের গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এর রেশ ধরে বাঙালি সমাজ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ সময় ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) পাকিস্তান বনাম বিশ্ব একাদশের ক্রিকেট খেলা চলছিল। ইয়াহিয়া খানের এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেট খেলা বন্ধ হয়ে যায়। দর্শকরা স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে আসে। প্রতিবাদমুখর দর্শকদের শায়েস্তা করার জন্য আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্টেডিয়ামে ঢুকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। রাজধানীর পল্টন-গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। বিক্ষোভ-সেøাগানে উত্তাল ঢাকাসহ সারাদেশ। অধিবেশন স্থগিত করার প্রতিবাদে উত্তেজিত জনতা পাকিস্তানি পতাকায় অগ্নিসংযোগ করে।
একাত্তরের এই দিনে মতিঝিল-দিলকুশা এলাকার পূর্বাণী হোটেলে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক ছিল।
১৯৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ীদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হোটেলের বাইরে তখন ঐক্যবদ্ধ জনতার মিছিলে সেøাগান চলছিলÑ ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ভুট্টোর মুখে লাথি মার, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’। এই মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ছাত্রনেতারা। ‘বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ এই সেøাগান সেদিনই প্রথম উচ্চারিত হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। ছাত্ররা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে কর্মসূচি ঘোষণার দাবি জানায়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ২ ও ৩ মার্চ তৎকালীন পাকিস্তানে সর্বাত্মক হরতালের ডাক এবং ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভার ঘোষণা দেন।
এদিকে স্বাধীনতার মাস উপলক্ষে সিলেটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রশাসন শিক্ষা প্রতিষ্টান মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে।