কানাডার শহরে শহরে মহান একুশে পালিত
সদেরা সুজন সিবিএনএ কানাডা থেকে।। অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কানাডার বিভিন্ন প্রভিন্সের বাংলাদেশী প্রবাসী অধ্যুষিত শহরে প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহের মাঝেও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের আয়োজনে পৃথক পৃথক ভাবে ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস পালন করেছে। ২০ ফ্রেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি শুরু হলেও একুশে ফ্রেব্রুয়ারি বই মেলা ও রকমারি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে। একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২ টা ১ মিনিটের সময় সংগঠনগুলো পৃথক পৃথক ভাবে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে একুশের শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে। মধ্যরাতে একুশের প্রথম প্রহরে নগ্ন পায়ে বুকে সংগঠনের নামাঙ্কিত শোকের প্রতীক কালো ব্যাজ হৃদয়ে ধারণ করে ফুলের তোড়া নিয়ে অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ সবার কন্ঠে কণ্ঠে মুখরিত হয়ে উঠে। কানাডার মন্ট্রিয়লের পার্ক এলাকার পুরাতন ইমিগ্রেশন সেন্টারে সেন্টরক অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কানাডা শাখার উদ্যোগে সার্বজনীন একুশে উদযাপন করা হয়। একুশের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইতরাদ জুবেরী সেলিম। অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কানাডা আওয়াশী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মুহিবুর রহমান, সাপ্তাহিক বাংলা মেইলের সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিন্টু, প্রকাশক রেজাউল কবীর, উদীচী কানাডা সভাপতি বাবলা দেব এবং কানাডা বাংলাদেশ সলিডারিটির সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া। সাংস্কৃতিক পর্বে উদীচী কানাডা শাখা ও শর্মিলা ধরের তত্ত্ববধানে মন্ট্রিয়লের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী চম্পা, মুক্তা, মুনমুন, রাখি সূপর্ণা ও কেয়া একুশের গান এবং নৃত্যে ঋশিতা, তিথী ও ঋশাসহ স্থানীয় আবৃত্তিকাররা অংশগ্রহণ করেন।
একুশে শুরুর প্রাক্কালে/প্রথম প্রহরে মন্ট্রিয়লের বাংলাদেশী কৃষিবিদরা মিলিত হয়েছিল শোয়েবের বাসায়। একুশের প্রথম প্রহরে বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয় ভাষা শহীদদের প্রতি। কানাডায় জন্ম নেওয়া বা বেড়ে উঠা প্রজন্মের/সন্তানদের কাছে বাংলা, ইংরেজি আর ফরাসী ভাষায় বর্ণনা করা হয় একুশের পটভূমি, ঘটনাপ্রবাহ, আর এর ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস। বাংলাদেশের সেলেব্রেটি আবৃতিকার আহকামউল্লাহ কিছুটা সময় দিয়েছিলেন কৃষিবিদদের এই আড্ডায়। আহকামউল্লাহ কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি কর্তৃক আয়োজিত একুশে বইমেলা উপলক্ষ্যে মন্ট্রিয়লে অতিথি হয়ে আসছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মন্ট্রিয়লের উদ্যোগে কোট দে নেইজ মিলানায়তনে ‘বিপ্লব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই একুশ’ শ্লোগানে ব্যাপক কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালিত করে মহান একুশে। একইভাবে মন্ট্রিয়লের পার্কভিউ রিসেপশন হলে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মন্ট্রিয়ল এবং ক্যাফে রয়েল রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্যুইবেক প্রাদেশিক শাখার উদ্যোগে ক্যুইবেক আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী বশীরের সভাপতিত্বে এবং সাজ্জাদ হোসেইন সুইটের সঞ্চালনায় মহান একুশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পালন করা হয়।
অপরদিকে অটোয়া, টরন্টো, মন্ট্রিয়ল, ভ্যাংকুভার, আলবাট্রা, সাসকাচুয়ান থেকে খবর পাওয়া গেছে, প্রবাসী বাঙালিরা নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে দিনটি পালন করছে। অটোয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে রিচলিউ ভানিয়ের সেন্টারে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাই কমিশনার কামরুল আহসান। অটোয়ার শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান, নৃত্য ও কবিতা পরিবেশন করেন।