এবার ভোলায় ‘বৃক্ষমানব’র সন্ধান মিলল, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছে অনেকেই

59142ডেস্ক রিপোর্টঃ মিডিয়ার কল্যাণে বৃক্ষমানব খুলনার আবুল বাজনদার আজ দেশব্যাপী পরিচিত একটি মুখ। সম্প্রতি ভোলায় তারই মতো আলমগীর মনির নামে আরও এক ‘বৃক্ষমানব’র সন্ধান পাওয়া গেছে। রোগটি ছোঁয়াচে মনে করে আলমগীর মনিরের প্রতিবেশীদের মধ্যে বৃক্ষমানব রোগ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই আতঙ্কে ইতোমধ্যে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
তবে, চিকিৎসকরা বলছেন, এতে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই। এটি গোঁদ রোগ। পুরুষ জাতীয় মশার কামড়ে এই রোগ হয়। এটা ছোঁয়াচেও নয়। ভোলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের গোলকপুর গ্রামে বসবাস করেন আলমগীর মনির।

তিনি জানান, প্রায় এক বছর আগে হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। এর কিছুদিন পর হাত ও পা ফুলে গাছের শিকড়ের মতো হতে থাকে। ভোলা ও বরিশাল গিয়ে ডাক্তার দেখানোর পরও কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখন গ্রামের মানুষ ঘৃণায় তার সঙ্গে কথা বলে না। কোনো কাজে নেয় না। তাকে দেখলেই সবাই এড়িয়ে যায়।

বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে আলমগীরের সংসার। প্রায় ২০ বছর আগে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারান আলমগীর। তার পর থেকে তাদের অনেক কষ্টে জীবন কাটে। মা ও ছেলের পরিশ্রমে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান তারা। আলমগীর পেট্রোলচালিত টেম্পো চালিয়ে সংসার চালাতেন।

আলমগীরের মা রাহেলা বেগম ও স্ত্রী কমলা বেগম জানান, আলমগীর তাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এ রোগের কারণে কেউ তাদের কোনো কাজে নেয় না। সবার মনে ভয় এটি ছোঁয়াচে রোগ। টাকার অভাবে তাকে চিকিৎসা করতে পারছেন না।

এদিকে, আলমগীরের এ রোগের কারণে তার বাড়ির আশপাশের প্রায় ৩০ পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে অন্য গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামবাসী আবুল কাশেম, ইউসুফ, কবির ও জসিম জানান, আলমগীরের এই রোগের কারণে তারা আতঙ্কিত। এ রোগ কোনো দিন দেখেননি তারা। তাই ভয়ে অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে অন্য গ্রামে চলে গেছেন।

শম্ভপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল হক দেওয়ান জানান, এ রোগে গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত। আলমগীরের এ অবস্থা দেখে তাকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, এটি গোদ রোগ। পুরুষ মশার কামড়ে এ রোগ হয়। এটি কোনো ছোঁয়াচে নয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসায় এ রোগ ভালো হওয়া সম্ভব।