ওসমানী হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ধর্মঘট : যানবাহন প্রবেশে বাধা, রোগী ও লাশ নিয়ে বিপাকে স্বজনরা

Osmani Medical Ambulance dhormogotডেস্ক রিপোর্টঃ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাপাতালে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিংয়ের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে অ্যাম্বুলেন্স শ্রমিক ইউনিয়ন মেডিকেল কলেজ শাখা। শনিবার সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
মাইক্রোবাস (অ্যাম্বুলেন্স) শ্রমিক ইউনিয়ন মেডিকেল কলেজ শাখার সহ-সভাপতি জুয়েল খান দুপুরে জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিকেলের ভেতর থেকে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং বাতিল করেছে। এতে লাশ বহনকারী কোনো অ্যাম্বুলেন্স মেডিকেলের ভেতর পার্কিং করতে পারছে না। তাই পার্কিংয়ের সুযোগ দেওয়ার দাবিতে অ্যাম্বুলেন্স শ্রমিকরা সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করছে। তিনি আরও জানান, অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করতে না দেওয়া পর্যন্ত তাদের ডাকা ধর্মঘট চলবে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল আহমদ জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে হাসপাতালে কোনো ধরনের যানবাহন প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পরিবহণ শ্রমিকরা। রোগী ও মরদেহবাহী গাড়ি চলাচলেও বাধা দিচ্ছে তারা। ফলে রোগী ও লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্বজনরা। শনিবার দুপুরে ওসমানী হাসপাতালে মরদেহ নিয়ে স্বজনদের হাসপাতালে বারন্দায় অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। এই সময় রোগীদের কোলে করে হাসপাতালে নিয়ে আসতে দেখা যায় স্বজনদের। ধর্মঘটের কারণে ওসমানী হাসপাতালে সব ধরনের যানবাহন প্রবেশ ও বাহির হতে বাধা দিচ্ছে শ্রমিকরা। এরফলে সকাল থেকে দূর্ভোগে পড়েন রোগীর স্বজনরা।
শুক্রবার বিকেলে জামালগঞ্জ উপজেলার খিদিরপুর গ্রাম থেকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হন সুনাই মিয়া। শনিবার সকাল ১১টায় তিনি মারা যান। তবে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত হাসপাতালের জরুরী বিভাগের বাইরে লাশ নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় স্বজনদের। পরিবহনের অভাবে লাশ নিয়ে যেতে পারছেন না তারা। সুনাই মিয়ার ছেলের বৌ চম্পা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, হাসপাতালের ভেতরে পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি চলাচল করতে না দেওয়ার কারণে বাড়িতে যেতে পারছি না।
মাইক্রোবাস (এ্যাম্বুলেন্স) শ্রমিক ইউনিয়ন মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি আকমল হোসেন লুকু জানান, মেডিক্যাল কলেজের ভেতরে মাইক্রোবাস (এ্যাম্বুলেন্স) পার্কি করতে না দেওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
ওসমানী হাসপাতালে দ্বায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরে এলোমেলোভাবে গাড়ি রাখার কারনে ইমার্জেন্সি রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে। গাড়ি রোগি নিয়ে হাসপাতালে ঢুকবে, রোগিকে নামিয়ে দিয়ে হাসপাতালের বাইরে গাড়ি অবস্থান করবে। হাসপাতালের পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে এলোমেলো পার্কিং রোধে এই ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত আছেন।
হাসপাতালের টলিতে লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সুনামগঞ্জের অনুকুল রায়। অনুকুল রায় জানান, ভোরে আমার মা মারা গেছেন। মার লাশ বাড়ি নেওয়ার জন্য কোনো মাইক্রবাস পাচ্ছি না। মাইক্রোবাস ধর্মঘট থাকায় লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জানান, শনিবার সকাল থেকে আমরা সব ধরনের এম্বুলেন্স ও মাইক্রোতে রোগি পরিবহন বন্ধ রেখেছি। আজকের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা না হলে আগামীকাল থেকে বৃহত্তর কর্মসূচী দেয়া হবে।