সিলেটে সাইফুরপন্থীদের কাছে ধরাশায়ী ইলিয়াস বলয়

Elias-Saifurডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির কাউন্সিলে সাইফুরপন্থীরা নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছেন। অপরদিকে ধরাশায়ী হয়েছেন ইলিয়াস বলয়ের প্রার্থীরা।
রোববার অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে কাউন্সিলরদের ভোটে শীর্ষ ছয়টি পদে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের অনুসারীরা জয় লাভ করেন। অপরদিকে এম. ইলিয়াস আলীর অনুসারীরা ভোটে পরাজিত হন।
সিলেট বিএনপিতে সাইফুর রহমান ও ইলিয়াস আলী বলয়ে বিভক্তি দীর্ঘদিনের। এই দুই মেরুকরণের একাধিকবার সংঘাতে জড়িয়েছে সিলেট বিএনপি। সাইফুর রহমানের প্রয়াণে এই বিভক্তি কিছুটা কমে আসলেও ইলিয়াস আলীর রহস্যজনক নিখোঁজ হওয়ার পর আবার তা চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
এই বিভক্তির কারণে অতীতে কেন্দ্র থেকে গঠন করে দেওয়া সিলেট জেলা মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের সকল কমিটির বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ-আন্দোলন-অসন্তোষ দেখা গেছে। এই বিক্ষোভ ঠেকাতেই এবার নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব।
রোববার কাউন্সিলরদের ভোটে জেলা কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সাধরাণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন আলী আহমদ। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সমান ভোট পেয়েছেন এমরান আহমদ চৌধুরী ও রিপন পাটোয়ারী।
অপরদিকে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন বদরুজ্জামান সেলিম। এছাড়ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মিফতাহ সিদ্দিকী নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচিতদের মধ্যে আবুল কাহের শামীম এম সাইফুর রহমানের একান্ত অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ পদে অপর একমাত্র প্রার্থী ছিলেন দিলদার হোসেন সেলিম। তিনি একসময় সাইফুরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত থাকলেও পরে বিএনপির নিখোঁজ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক এম. ইলিয়াস আলীর বলয়ে যোগ দেন।
জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন আলী আহমদ। তিনিও ছিলেন সাইফুর অনুসারী। তবে একসময় ইলিয়াস বলয়ের সাথে যুক্ত হলেও পরবর্তীতে সাইফুর বলয়ের রাজনীতিকদের সাথে বেড়ে যায় তার সখ্যতা। এই পদে হেরেছেন ইলিয়াস আলীর ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান।
জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সমসংখ্যক ভোট পেয়েছেন এমরান আহমদ চৌধুরী ও হাসান আহমদ পাটোয়ারি রিপন। তাদের মধ্যে এমরান চৌধুরী সাইফুর বলয়ের আর পাটোয়ারি রিপন ইলিয়াস বলয়ের। জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হেরেছেন ইলিয়াস আলীর আরেক ঘনিষ্টজন কারাবন্দি থাকা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল আহাদ খান জামাল। একটি ভোটও পাননি ইলিয়াস অনুসারী জেলা বিএনপির সাবেক দফতর সম্পাদক ময়নুল হক।
সিলেট মহানগর বিএনপির তিনটি পদেও ভরাডুবি ঘটেছে ইলিয়াস বলয়ের। নির্বচিত তিন নেতাই সাইফুর বলয়ের সাথে যুক্ত।
সভাপতি পদে হেরেছেন ইলিয়াস বলয়ের নেতা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী। সাধারণ সম্পাদক পদে হেরেছেন ইলিয়াস বলয়ের নেতা সিটি কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম। সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে একাধিক প্রার্থী ছিলেন সাইফুর বলয়ের। সকলেই পরাজিত হয়েছেন।
মহানগর বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, কাউন্সিলররা স্বতস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করেছেন। ‘এরপর আর যাতে কেউ কমিটির বিরুদ্ধে না দাঁড়ান’ এমন আহ্বান জানিয়ে বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, এবার আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইয়ে নামবো।
রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়।