সিরাজগঞ্জে ছাত্রীকে অপহরণ লম্পট শিক্ষকের

132927_1ডেস্ক রিপোর্টঃ সিরাজগঞ্জে এক সন্তানের জনক এক লম্পট স্কুল শিক্ষক বিয়ের জন্য এক কিশোরী ছাত্রীকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শাহজাদপুর ইব্রাহিম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভোকেশনাল শাখার শিক্ষক শিহাব উদ্দিন সাগর একই স্কুলের ছাত্রী আরিফা সুলতানা তামিমকে (১৫) নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আরিফার বাবা আহম্মদ আলী বাদি হয়ে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ওই শিক্ষক শিহাবের বাবা মোহাম্মদ আলী খান বাদশাকে গত বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে।
এলাকাবাসী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার রূপপুর মহল্লার আহম্মদ আলীর ছোট মেয়ে আরিফা সুলতানা তামিম ২০১৫ সালে ইব্রাহিম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় এক সন্তানের জনক শিক্ষক শিহাবের কু-নজর পড়ে আরিফার ওপর। শিহাব প্রতিনিয়তই আরিফাকে নানাভাবে উত্যক্ত করতো। এক পর্যায়ে গত ২০ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় আরিফা নিজ বাড়ি থেকে একই গ্রামের তার বড় বোনের বাসায় যাওয়ার পথে শিক্ষক শিহাব ও তার সহযোগিরা আরিফার হাত-মুখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
লোক লজ্জার ভয়ে ঘটনাটি গোপন রেখে আরিফার আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার কোন সন্ধান না পেয়ে অবশেষে শিক্ষক শিহাবকে প্রধান আসামি করে ৮জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
শাহজাদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, নিখোঁজ ছাত্রী আরিফা সুলতানা তামিমের বাবা আহম্মদ আলী বাদি হয়ে শিক্ষক শিহাব উদ্দিন সাগর সহ ৮জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ গত বুধবার রাতে দ্বারিয়াপুর গ্রামের নিজ বাসা থেকে শিহাবের বাবা মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি জানান, নিখোঁজ ছাত্রী আরিফাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, শিহাব ২০০৩ সালে পাবনা টেক্সটাইল কলেজে পড়ার সময় শিপ্রা সরকার (বর্তমান নাম ফারিয়া খান) নামে এক হিন্দু মেয়েকে ফুঁসলিয়ে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করে।
তাদের ঘরে ৪ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। শিহাবের স্ত্রী ফারিয়া খান একই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
এ বিষয়ে ফারিয়া খান স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ছাত্রী আরিফার ওপর শিহাবের লোলুপ দৃষ্টি পড়ার ঘটনা আঁচ করতে পেরে তিনি প্রতিবাদ করলে শিহাব ও তার বাবা-মা প্রায়ই তাকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতো। এদিকে শিক্ষক শিহাবকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকার অভিভাবকরা। তবে তার এক ভাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা বলে তিনি ছাড় পেয়ে যাবেন বলে অনেকের আশঙ্কা।
অপহরণের দিন থেকে শিক্ষক শিহাব স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আহমেদ জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ধরণের কাজ যেই করুক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।