কমলগঞ্জে মাদকের অবাধ বিস্তার ॥ আক্রান্ত হচ্ছে যুব সমাজ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলায় ভারতীয় মাদকের বিস্তার লাভ করেছে। শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কের কানিহাটি, চাতলাপুর চা বাগানে ভারতীয় মাদকের আস্তানা গড়ে উঠেছে। চা বাগানের দেশীয় চোলাই মদের সাথে রীতিমতো ভারতীয় মাদকের হাটে পরিণত হয়েছে। মৌলভীবাজার সদর সহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যুবকরা প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবন ও কেনা-বেচা করেন। অবাধে মাদক সেবন প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চা শ্রমিকদের মধ্যে নেশা প্রবণতা ও পারিবারিক কলহ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের কৈলাশহর ও উত্তর ত্রিপুরার সাথে যাতায়াতের সড়ক হিসাবে শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানী হচ্ছে। ফলে এই রুট দিয়ে সহজেই ভারতীয় বিভিন্ন ধরণের মাদক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এই সড়কটি ডানকান ব্রাদার্স শমশেরনগর, চাতলাপুর চা বাগান ও ফাঁড়ি কানিহাটি চা বাগানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কানিহাটি ও চাতলাপুর চা বাগানের কয়েকটি স্পটে অবাধে মাদক সেবন ও বেঁচাকেনা চলছে। এর পাশাপাশি নছিরগঞ্জ-সরিষতলা হয়ে পতনউষার বাজার দিয়েও মাদকসহ ভারতীয় বিড়ির রুট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব মাদক কমলগঞ্জ উপজেলাসহ জেলা সদরেও স্থানান্তর হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যায় চাতলাপুর বাগান ও কানিহাটি চা বাগানের বড় লাইনসহ রাস্তার ধারে, ঘরের কোনে, গাছের নিচে বসে যুবকরা ভারতীয় কোরেক্স, হুইস্কিসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক সেবনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরাও মাদক কেনা বেচা করেন। এমনকি বর্তমানে এই এলাকায় ইয়াবা ট্যাবলেট এর ব্যবসাও শুরু হয়েছে। কানিহাটি চা বাগানের স্থানীয় ও আশপাশ বস্তির কয়েকজন ব্যবসায়ী অবাধে ভারতীয় মাদকের জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কার, লাইটেস, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল যোগে যুবকরা এসে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবন ও বেচাকেনা করেন। এর সাথে চা বাগানের কিছু যুবকরাও মাদক সেবনের পর নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
কানিহাটি বাগানের শ্রমিকরা জানান, চা বাগানে মাদক সেবনের পর পারিবারিক কলহ ও দাঙ্গা হাঙ্গামার বাড়ছে। কানিহাটি চা বাগানের স্থানীয় ইউপি সদস্য সীতারাম বীন বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে কানিহাটি বাগানসহ চাতলাপুর সড়কে মাদকসেবীদের ভিড় জমে ওঠে। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের ভিড় দেখা যায়। তিনি আরও বলেন, অবাধে মাদক সেবন ও মাদকাসক্তদের কারনে চা বাগানের যুব সমাজ বিপথগামি হচ্ছে এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়ছে। এদিকে উপজেলার পতনঊষার এলাকা দিয়েও নছিরগঞ্জ-সরিষতলা রুটে ভারতীয় বিড়ি, মদ, গাজা, ফেন্সিডিল ও চোরাই পণ্য সামগ্রী এসে জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. এনামুল হকের বক্তব্য জানতে কয়েকদফা মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।