সিলেটে আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলা : আদালতে যুক্তি উপস্থাপন শুরু
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটের শাহজালঅর (র.) মাজারে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আসামিপক্ষে হাই কোর্টে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়েছে।
আলোচিত এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো শুনানি শেষে বুধবার পরবর্তী দিন ঠিক করে দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
এদিন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির ও সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল মো. শহীদুল ইসলাম খান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ, মোহাম্মদ আলী ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন।ঘটনাস্থলে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক কামাল উদ্দিন নিহত হন। পুলিশ কনস্টেবেল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায়, আনোয়ার চৌধুরী ও সিটেলের জেলা প্রশাসকসহ ৪০/৪৫ জন আহত হন। ওই দিন সিলেট কোতোয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
এই মামলার তদন্ত করে ২০০৭ সালের ৭ জুন মুফতি আব্দুল হান্নান ওরফে আবুল কালাম, হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। যথাযথ ঠিকানা না থাকায় তদন্তে আসা মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম বাদ পড়ে।৩১ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
২০০৮ সালের ১১ মার্চ মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালের নাম যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই বছর নভেম্বরে অভিযোগ গঠন করা হয়।
এ মামলায় ৫৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামীম মো. আফজাল তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন- মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন-হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল।
পাঁচ আসামিই কারাগারে রয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে।
নিম্ন আদালতের রায়ের পর শুনানির জন্য ২০০৮ সালে আসামিদের ডেথরেফারেন্স (মুত্যুদণ্ড অনুমোদন) হাই কোর্টে আসে। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিল ও পরে আপিল করেন।
এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি হাই কোর্টে এসবের ওপর শুনানি শুরু হয়। ৬, ৭ ও ১৩ জানুয়ারি শুনানিতে পেপারবুক উপস্থাপন শেষ করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে আসামি রিপনের পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।
সুপ্রিম কোর্টের এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, আলোচিত এই মামলাটি ছাড়া ২০০৮ সালের সব ডেথরেফারেন্স হাই কোর্টে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।