আরও চার ব্লগার হত্যা মামলায় অগ্রগতি নেই

Blogger BDডেস্ক রিপোর্ট : দুই বছরের বেশি সময় পর ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় রায় হলো বৃহস্পতিবার। এখন ব্লগারদের হত্যা মামলাগুলোরও দ্রত বিচারের দাবি তুলছেন অনলাইন ব্লগার অ্যাক্টিভিস্টরা। তাদের দাবি, এরই মধ্যে অনেক ব্লগারকে জীবন বাঁচাতে দেশ ছাড়তে হয়েছে। ব্লগারদের বড় অংশ লেখা বা প্রতিবাদের ভাষা বলা ছেড়ে দিতে বসেছেন নিরাপত্তার অভাবে। এ পরিস্থিতিতে হত্যাকাণ্ডের শিকার বাকি চার ব্লগারের মামলা দ্রুত নিস্পত্তি না হলে ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে শঙ্কা তাদের।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্লগার রাজীবকে হত্যা করা হয়। এরপর খুন হন আরও কয়েকজন ব্লগার। এ বছরই ঢাকা ও সিলেটে খুন হন চারজন ব্লগার। তবে রাজীব হত্যা মামলাটি ছাড়া অন্য ব্লগার হত্যাকাণ্ডগুলোর বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি নেই। ‘সন্দেহ আর তদন্তে’র মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে এসব মামলার আসামিদের গ্রেফতার চেষ্টা।
এ বছর খুন করা হয়েছে মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু, মুক্তমনা ব্লগের আরেক ব্লগার, লেখক ও ব্যাংক কর্মকর্তা অনন্ত বিজয় দাস, ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (নিলয় নীল)।রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে ৭ আগস্ট নিজ বাড়িতে খুন হন ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (নিলয় নীল)। এই ঘটনায় খিলগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের চার সদস্যের সূত্র ধরে আরও তিনজনকে শনাক্ত করা গেছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় অনন্ত বিজয় দাস নামে এক ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় গত ১২ মে। নিহত এ ব্লগার রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন। এর আগে ৩০ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার বেগুনবাড়ি এলাকায় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার সময় আরেক ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সবকটি মামলাই ডিবি তদন্ত করছে। কেবল ওয়াশিকুরের মামলায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
এধরনের মামলার তদন্ত হতে কতদিন লাগে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিজিতের বাবা অজয় রায়। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে মামলার কোনও অগ্রগতি নেই। আমরা জানিও না মামলা কোন পর্যায়ে আছে। খুব বেশি আশান্বিতও না। দেখা যাক কী হয়।’
এদিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের (ডিবি) উপকমিশনার (পূর্ব) মো. মাহবুব আলম জানান, ‘সব ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। বেশকিছু ঘটনার অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়েছে। একে একে সব অপরাধী বিচারের মুখোমুখি হবে।’
এদিকে অনলাইন ব্লগার অ্যাক্টিভিস্ট ইমরান এইচ সরকার বলেন, ‘আমার মনে হয় এই মামলাগুলোর দ্রুত বিচার না করলে যারা অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট তাদের নিরাপত্তা আরও বিঘ্নিত হবে।’ বাকি মামলাগুলোর অগ্রগতি দ্রুতই দেখা যাবে আশা করে তিনি বলেন, ‘মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাউকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হলে এর দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।’