দীর্ঘ ২৯ বছর পর নৌকা-ধানের শীষের দেখা পেল গোলাপগঞ্জের মানুষ
কে এম আব্দুল্লাহ গোলাপগঞ্জ থেকে: দীর্ঘ ৭ বছর পর নৌকা আর দীর্ঘ প্রায় ২১ বছর পর ধানের শীষের দেখা পেল গোলাপগঞ্জবাসী। আর তাই ভোটযুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তৃণমূল ভোটাররা। নৌকা, ধানের শীষ ও লাঙ্গল প্রতীকের পোষ্টারে ছেয়ে গেছে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকা। দলীয় প্রতীকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪টি পৌরসভার মতোই গোলাপগঞ্জ পৌরসভায়ও পৌর নির্বাচন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে গোলাপগঞ্জেও নৌকা-ধানের শীষ ও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন মেয়র প্রার্থীরা। তবে নৌকা প্রতীক থেকে এবার পৌর জনগণ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বর্তমান মেয়র ও সরকারদলীয় প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলুর বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নিতীর অভিযোগে। এবার তারা পরিবর্তন চায়। আর তাই পুরো পৌর শহর জুড়ে একই সুর উঠেছে পরিবর্তন! পরিবর্তন! পরিবর্তন! ফলে অন্যবারের চেয়ে এবারের পৌরসভা নির্বাচনের দৃশ্যপটও ভিন্ন। আর তাই নির্বাচনী আমেজে মেতেছে গোলাপগঞ্জবাসী।
গোলাপগঞ্জ পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতিক থাকলে ও সতন্ত্র প্রার্থীদের চলছে নির্বাচনী লড়াই। ২০০৮ সালের ২৯ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনের পর ফের নৌকা আর ধানের শীষ প্রতীকের লড়াই প্রত্যক্ষ করবে দেশবাসী। সঙ্গত কারণেই পুরো দেশ এখন পৌরসভা নির্বাচনমুখা মুখী।এ নির্বাচনেই প্রমাণ মিলবে তৃণমূলে কোন দল কত জনপ্রিয়। এবার গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে আ-লীগ মনোনীত প্রার্থী জাকারিয়া আহমদ পাপলু, ধানের শীষ প্রতিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন এবং লাঙগল প্রতিকে জাতীয়পাটি মনোনীত সুহেদ আহমদ মেয়র পদে লড়াই করছেন।এবার শুধু অপেক্ষার পালা ৩০তারিখ ভোটের মাধ্যমে কে হবেন পৌরবাসীর মনোনীত মেয়র। এছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র ৪ জন প্রার্থী সহ মোট ৭ জন প্রার্থী মেয়র পদে নির্বাচন করছেন।
জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় ২১ বছর ধরে বিএনপি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসেনি। তখনকার ৪ দলীয় জোট থেকে জামায়াত নির্বাচন করে আসছিল এ এলাকায়। সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা-দাড়ি পাল্লা প্রতীকের ভোটযুদ্ধ হয়েছিল। তবে । এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলেও গোলাপগঞ্জের মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পায় নি। দীর্ঘদিন থেকে এ এলাকায় বিএনপি দলীয় প্রতীকে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহন না করায় এ অঞ্চলের মানুষজন ধানের শীষ প্রতীকের দেখা পায়নি। এবং কোন প্রতিধন্ধি না তাকায় বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ বিনা ভোটে সিলেট ৬ আসনে নির্বাচিত হন। ফলে ধানের শীষ নিয়ে বিএনপি নেতাদের এ লড়াই রাজনৈতিক মাঠে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার সুযোগ করে দিচ্ছে দলটিকে।
গত ১৯ নভেম্বর মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের বিধান রেখে পৌরসভা (সংশোধন) আইন-২০১৫ বিল সংসদে পাস হয়। পরে রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। সরকারের এ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর পাল্টে যায় পৌরসভা নির্বাচনের দৃশ্যপট। ইসিতে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও সকলের ধারনা মূলত লড়াই হবে চিরচেনা নৌকা-ধানের শীষ প্রতীকে।