বিয়ের তিনদিন পর স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ
ডেস্ক রিপোর্টঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় বিয়ের তিনদিন পর স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের উলুসাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসা থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত বিল্লাল হোসেন (২২) রংপুর সদরের পালিছাড়া সর্দারপাড়া এলাকার নজির বাউরার ছেলে। বিল্লালের স্ত্রী মর্জিনা বেগমের (২০) বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায়। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে তাঁদের বিয়ে হয়। এটি ছিল বিল্লালের দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর বিল্লাল ও মর্জিনা কালিয়াকৈরের উলুসাড়া এলাকায় বাদশা মিয়ার বাড়িতে ঘর ভাড়া করে থাকতেন। বিল্লাল নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতেন, কাজ না থাকলে রিকশাও চালাতেন। আর মর্জিনা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাঁদের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন বাড়ির মালিকের শ্যালক মজনু মিয়া, নিহত বিল্লালের প্রথম স্ত্রী আছমা বেগম ও তাঁর বড় ভাই আবদুল হাইয়ের স্ত্রী আনিছা বেগম।
বিল্লালের প্রথম স্ত্রী ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লোকমান জানান, বিয়ের তিনদিন পর আজ দুপুর ১টার দিকে প্রথম স্ত্রী আছমা ওই বাড়িতে এসে বিল্লালের ঘরের বাইরে তালা ঝোলানো দেখতে পান। এ সময় বিল্লাল তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মর্জিনাকে নিয়ে ঘরেই ছিলেন। তখন বিল্লাল তাঁর প্রথম স্ত্রীকে জানালা দিয়ে জানান, বাড়িওয়ালার শ্যালক মজনু তাঁর কাছে ১৭ হাজার টাকা পান। এই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় শনিবার রাতে মজনু তাঁদের ঘরের মধ্যে আটকে রেখে নির্যাতন চালান। পরে ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এরপর আছমা চলে যান। ৩টার দিকে তিনি আবার এসে দেখেন, ঘরের বাইরে তালা। জানালাও বন্ধ। বিল্লালের নাম ধরে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পাননি। পরে আশপাশের লোকজন এনে দরজা ভেঙে দেখেন, বিল্লাল ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছেন। লোকজনের সহায়তায় দুজনকে উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় বিল্লালের প্রথম স্ত্রীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।