জমির মালিকানার বিরোধের জেরে কমলগঞ্জে ট্রাক চাপা দিয়ে বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: জমির মালিকানার বিরোধের জের ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নে এক বৃদ্ধকে চালক ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা করেছেন বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে। মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বিক্রমকলস গ্রামে রোববার (২২ নভেম্বর) বেলা দেড়টায় বৃদ্ধকে ট্রাক চাপা দেওয়ার ঘটনাটি ঘটলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিক্রমকলস গ্রামের ট্রাক চালক ইসমাইল মিয়ার (৪৮)-র সাথে একই গ্রামের বৃদ্ধ মঞ্জিল মিয়া (৫০)-র এক খন্ড জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলছে। ঘটনার জের ধরে গত রোববার দুপুরে ইসমাইল মিয়ার নির্দেশে ট্রাক চালক খালেদ বিরোধপূর্ণ জমিতে ট্রাক দিয়ে মাটি ফেলতে শুরু করেন। মঞ্জিল মিয়া মাটি ফেলতে আপত্তি জানালেও ট্রাক চালক খালেদ কোন আপত্তি শুনতে রাজি হয়নি। বৃদ্ধ মঞ্জিল মিয়া মৌলভীবাজার আদালতে যেতে ঘর থেকে বের হলে তাকে ট্রাক দিয়ে একটি দেয়ালের সাথে চাপা দিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে। গুরুতর আহতাবস্থায় মঞ্জিল মিয়াকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রোববার বিকাল সাড়ে তিনটায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মঞ্জিল মিয়ার মেয়ে হাফিজুন খাতুন (১৮) এ প্রতিনিধিকে অভিযোগ করে বলেন, জমি নিয়ে ইসমাইল মিয়ার সাথে মামলা থাকার পরও ট্রাক চালক খালেদ জোর পূর্বক এ জমিতে মাটি ফেললে তার বাবা আপত্তি জানান। আপত্তি না শুনায় বাবা (মঞ্জিল মিয়া) তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আদালতে যেতে চাইলে বাড়ির পাশেই একটি সীমানা প্রাচীরের সাথে ট্রাক চাপা দেয় চালক। ট্রাকটি আবার পিছনের দিক দিয়ে ফিরে আসলে বাবা মাটিতে পড়ে গেলে ট্রাকটি তার উপর দিয়ে চালিয়ে চালক খালেদ পালিয়ে যায়। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা মারা যান। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলার এজাহার দাখিল করা হয়েছে বলে হাফিজুন খাতুন (১৮) এ প্রতিনিধিকে জানান।
মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব তরফদার ঘটনাটি নিছক একটি দুর্ঘটনা বলে জানালেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একজন জনপ্রতিনিধি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কিছু জমি ও নগদ এক লাখ টাকা দিয়ে নিহতের পরিবারকে দান করে বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে নিহতের পরিবার সদস্যরা না মানায় আর সামাজিক সমাধানের পথ খোলা থাকলো না।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: এনামুল হক বলেন, এ ঘটনায় সোমাবার বিকালে এই ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি জোর তদন্তক্রমে আইনীগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।