শিশু সাঈদ হত্যা : সাক্ষ্য দিলেন আরো ৬ জন, আদালতে যা বললেন মা সালেহা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটে ৯ বছরের শিশু আবু সাঈদকে অপহরণ ও হত্যা মামলায় মাসহ আরো ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশিদ আজ রবিবার তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এ নিয়ে সাঈদ হত্যা মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো। এ মামলায় ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে।আদালতে সাঈদের মা সালেহা বেগম, মামা জয়নাল আবেদীন, হিলাল আহমদ, বিমানবন্দর থানার ওসি গৌছুল হোসেন, থানার এসআই সাফরাজ মিয়া, ব্যবসায়ী দিলওয়ার হোসেন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ মুক্তাদির আহমদ জুয়েল, আবদুল কুদ্দুস, সেলিম আহমদ, আবদুল আহাদ তারেকের সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল। তবে তারা আগামীকাল সাক্ষ্য দেবেন।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর সাঈদের বাবা ও মামলার বাদী মতিন মিয়া, আশরাফুজ্জামান আজম, ফিরোজ আহমদ, ওলিউর রহমান ও শফিকুল ইসলাম আলকাছ আদালতে সাক্ষ্য দেন। রবিবার (২২ নভেম্বর) সাঈদের মা সালেহা বেগমসহ আরো ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষ্য প্রদানকালে সাঈদের মা সালেহা বেগম আবেগাপ্লুত হয়ে বক্তব্য রেখেছেন। আদালতে তিনি বলেছেন, ‘আবু সাঈদ আমার মেঝো ছেলে। ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ গত ১০ মার্চ স্বামীসহ আমি, আমার বড় মেয়ে সাউদা মতিন (১২), ভিকটিম আবু সাঈদ (৯) ও ছোট ছেলে আবু সাফী (৫) আমার মায়ের বাসা ৭৩ এভারগ্রীন, ঝেরঝেরি পাড়ায় যাই। আমার ভাড়া করা বাসা বসুন্ধরা ৭৪/বি দর্জিবন্দ, রায়নগর থেকে আমার মায়ের ভাড়া করা বাসা ৭৩ এভারগ্রীন, ঝেরঝেরি পাড়ার দুরত্ব এক কিলোমিটারের কাছাকাছি। মূলত আমার প্রবাসী ভাই কবির দেশে আসার সুবাদে আমরা সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলাম। রাতের খাবার শেষে আমার স্বামী মতিন মিয়া ছেলে আবু সাঈদকে নিয়ে নিজেদের বাসায় চলে যায়।’
‘পরদিন যোহরের পর সাঈদের বাবা আমার মায়ের বাসায় এসে তাকে (সাঈদ) না দেখে সে কোথায় তা জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, সাঈদ ওইদিন (১১ মার্চ) সকাল ১১টায় দর্জিবন্দস্থ নিজ বাসা থেকে আমার মায়ের বাসা ঝেরঝেরি পাড়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছে। এসময় আমি তাকে (মতিন মিয়া) জানাই, সাঈদ এখানে আসেনি।’
আদালতে সাঈদের মা আরো বলেন, ‘এরপর আমরা সবাই সাঈদের খোঁজে বের হই। একপর্যায়ে জানতে পারি, সাঈদ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাসার পাশ্ববর্তী রাজিয়া ভেরাইটিজ স্টোর থেকে ১৮ টাকায় একটি আইসক্রিম ক্রয় করে। সন্ধ্যার পরও সাঈদের খোঁজ না পাওয়ায় আমরা মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করি এবং থানায় জিডি দায়ের করি। পরে মামলার আসামিরা ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাইলে মামলা রুজু হয়। ১৪ মার্চ পুলিশ এবাদুর নামক এক কনস্টেবলকে গ্রেফতার করে। ওই কন্সটেবলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার ভাড়া করা বাসা ঝেরঝেরি পাড়া সবুজ ৩৭ এর তৃতীয় তলার সিঁড়ির কাছের কক্ষ থেকে আমার ছেলে সাঈদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।’
‘কনস্টেবল এবাদুর একসময় আমাদের সাথে রায়নগরে সাবলেট হিসাবে পরিবারসহ বাস করতো। আমার ছেলে-মেয়েরা তাকে মামা বলে ডাকতো।’
আদালত সূত্র জানায়, সাঈদের মা কান্নাজড়িত কন্ঠে তার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।