“আন্টির লাথিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ি, আঙ্কেলও মারতেন”
চাঁদপুর: কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা (এসপিও) এম এ হান্নানের চাঁদপুরের বাসায় এক শিশু গৃহকর্মীকে অমানষিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দম্পতিকে আটক করছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ১০টায় চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া থেকে মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশিদের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়।
নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী নিপা আক্তার (৯) গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই বাসা থেকে পালিয়ে যায়। চাঁদপুর সরকারি সংলগ্ন হোটেল আকবরির সামনে থেকে কান্নারত অবস্থায় গাজী ফার্নিসারের মালিক তাকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেন। শিশুটির গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী বলে জানা গেছে।
এদিকে শিশু নিখোঁজ হয়েছে মর্মে গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী মুক্তা বেগম থানায় এসে পরদিন বুধবার একটি সাধারণ ডায়রি করেন। পুলিশ পুরো ঘটনা জানতে পেরে শুক্রবার দম্পতিকে থানায় আসতে বলেন। এসময় উদ্ধারকারী গাজী ফার্নিসারের মালিক হানিফ গাজী শিশু নিপাকে থানায় নিয়ে আসেন।
শিশু নিপা কান্নাজড়িত কণ্ঠে পুলিশকে জানায়, আমি এ বাসায় রোজার সময় কাজ করতে আসি। আসার পর থেকে রুটি না বানাতে পারায় ও থালা বাসন ঠিকভাবে না ধুতে পারায় আঙ্কেলসহ ঘরের সবাই পর্যায়ক্রমে বেদম মারধর করতো। মঙ্গলবার বিকালে আলমারী মুছতে দিলে তা না পারায় আন্টি পেটে লাথি দিলে অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে আমি রান্না ঘর দিয়ে জান বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে আসি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত দম্পতি জানান, তার বড় বোন সুরমা বিগত কয়েক বছর আমার বাসায় কাজ করেছে। সুরমা চলে যাওয়ার পর নিপার বাবা রাজীব তাকে গত রমজান মাসে কাজ করতে বাসায় দিয়ে যায়। তাকে মারধর করা হয়নি তবে কাজ না করার কারণে বকাঝকা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশিদ বলেন, শিশুটিকে উদ্ধার করার পর সে তার নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলেছে। তবে শিশুটিকে মারধর করা ঠিক হয়নি। আমার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।
পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার ঢাকাটাইমসকে বলেন, শিশু নির্যাতনের বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে প্রচার না করার জন্য একটি মহল চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়।