খালেদা জিয়ার যত উপদেষ্টা

42976সুরমা টাইমস ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ৩ বার বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলো দলটি। বর্তমানে ক্ষমতা এবং সংসদ দুটোরই বাইরে আছে তারা। দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকায় দলের মধ্যে দানা বেঁধেছে বিভিন্ন অসন্তোষ। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, দলের শীর্ষ পর্যায়ে যারা আছেন সাংগঠনিকভাবে তারা নিষ্ক্রিয় থাকেন। এমন অনেক শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আছেন যাদেরকে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েই দেখা যায়। বাকী সময় তারা দলটির থেকে যথাসম্ভব দূরুত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেন।আন্দোলনে ব্যার্থতা, দলের কার্যক্রমে নেতৃত্বহীনতা, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারা এবং দলের শীর্ষ পদে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের বহাল রাখাসহ নানা অভিযোগের ময়নাতদন্ত করার চেষ্টা করেছে ব্রেকিংনিউজ। এরই ধারাবাহিকতায় আজ প্রকাশ করা হলো বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৩৭ উপদেষ্টার সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম। তারা বর্তমানে কে কি করছেন তার খতিয়ান।অ্যাডঃ খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ : মারা গেছেন। তিনি ২০০১ সালে ঢাকা থেকে বেগম খালেদা জিয়ার ছেড়ে দেয়া আসন থেকে নির্বাচন করে এমপি হয়েছিলেন।হারুণার রশিদ খান মুন্নু : বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি এখন আর রাজনীতিতে সক্রিয় নেই।আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী : চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও চট্টগামে চোখে পড়ার মতো কোনো কর্মসূচিতে তিনি নেই। তবে মাঝে মধ্যেই মিডিয়াতে দেখা যায় তাকে।রিয়াজ রহমান : সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি রাজনীতিতে পুরোপুরি সক্রিয়। গত ৫ই জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি চলার সময় তিনি দুর্বৃত্তদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হন।ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর : তিনি বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার বাড়ি ঝালকাঠিতে। তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি আইনগত দিক দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো উপকারে আসেন না।মেজর জেঃ (অবঃ) মাহমুদুল হাসান : তিনি জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে যোগদান করেছেন। তিনিও বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। তবে টাঙ্গাইলের স্থানীয় রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় আছেন। সেখানে তাকে নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের অভিযোগ আছে। তাকে সর্বশেষ দলীয় মুখপাত্রের সাথে নয়াপল্টনে বেশ কয়েকটি প্রেস ব্রিফিংয়ে দেখা গেছে।মেজর (অবঃ) সাঈদ ইস্কান্দার : মারা গেছেন এবং তিনি বেগম খালেদা জিয়ার ভাই ছিলেন।ড. ওসমান ফারুক : সাবেক শিক্ষামন্ত্রী। তিনি রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় আছেন। বর্তমানে দেশে না থাকলেও কর্মীদের সাথে তার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া নিজ জেলা কিশোরগঞ্জের নেতৃবৃন্দের সাথেও তার বোঝাপড়া ভালো। বর্তমানে তিনি দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কাজ করছেন।উকিল আবদুস সাত্তার : ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সন্তান আবদুস সাত্তার বর্তমানে বার্ধক্যে ভুগছেন। তাই চাইলেই সক্রিয় থাকতে পারছেন না রাজনীতিতে। তিনিও সাবেক মন্ত্রী ছিলেন।অধ্যাপক এম.এ.মান্নান : তিনি গাজীপুরের মেয়র এবং দলীয় রাজনীতি বেশ সক্রিয় একজন মানুষ। চলতি বছর তিনি বেশ কয়েক মাস দলের জন্য কারাগারে ছিলেন। তবে এখন তিনি জামিনে মুক্ত।ফজলুর রহমান পটল : নাটোরের সন্তান পটলকে দীর্ঘদিন দলীয় রাজনীতিতে দেখা যাচ্ছে না। তিনি থাকেন রামপুরার বনশ্রীতে। তিনি এক সময় তারেক রহমানের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানা যায়। তবে এখন তিনি সুসময়ের অপেক্ষায় আছেন বলেই তার কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে।আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলী ফালু : রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। দলের জন্য অর্থ সংস্থানে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানা যায়। বিএনপির সর্বশেষ আন্দোলনের সময় তিনি বেশ কয়েক মাস জেলেও ছিলেন।মোশাররফ হোসেন : তিনি মারা গেছেন। তিনি ফেনী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতিও ছিলেন।মুশফিকুর রহমান : তিনি সাবেক সচিব। কেন্দ্রের রাজনীতিতে খুব সক্রিয় না থাকলেও তিনি নিজ এলাকা কসবা-আখাউড়ার রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। দলীয় প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহলে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা যায়।ইনাম আহমেদ চৌধুরী : তিনিও সাবেক আমলা। মিডিয়া বান্ধব, তাই নিয়মিত টক শো গুলোতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একমাত্র শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদ যে ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৪ তে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমে এসেছিলেন।আবদুল আউয়াল মিন্টু : ব্যবসায়ী এবং সাবেক আওয়ামী ঘরনার নেতা। বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন বলে জানা যায়। তিনিও দলের জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করেন বলে জানা যায়।অ্যাডঃ খোন্দকার মাহবুব হোসেন : তিনি রাজনীতিতে পুরোপুরি সক্রিয়। তিনি বর্তমানে হাইকোর্টের সভাপতি। এছাড়া নিয়মিত দলের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান, মানববন্ধন ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।অ্যাডঃ এ জে মোহাম্মদ আলী : তিনি আইন অঙ্গনে এবং নিজ পেশায় সক্রিয় থাকলেও দলীয় কর্মকাণ্ডে তেমন সক্রিয় নন বলে জানা গেছে।নুরুল ইসলাম : তিনি দাদু ভাই নামেও পরিচিত। তাকে খুলনার রাজনীতির একজন দিকপালও বলা হয়। বর্তমানে বার্ধ্যকে আছেন কিন্তু তারপরও স্থানীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেন। এছাড়া একজন ভাল মানুষ হিসেবে খুলনায় তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম : খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাবেক চ্যানেল ওয়ানের মালিক। তিনি দলীয় রাজনীতে তেমন সক্রিয় না থাকলেও বিএনপির গুলশান অফিস ভিত্তিক কার্যক্রমে সক্রিয় আছেন বলে জানা যায়।।অ্যাডঃ আহমদ আযম খান : খালেদা জিয়ার কর আইনজীবী এবং মিডিয়া বান্ধব একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় থাকলেও স্থানীয় রাজনীতিতে তিনি খুব একটা সক্রিয় নন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।শামসুজ্জামান দুদু : মিডিয়া বান্ধব এবং কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট সক্রিয় তিনি। তিনিও দলের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান, মানববন্ধন ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বিএনপির গত আন্দোলনের সময় বেশ কয়েক মাস জেল খেটেছেন। এছাড়া দলের দু:সময়ে তিনি দলের মুখপাত্রের দায়িত্বও পালন করেছেন কয়েকবার। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন।
এ এস এম আবদুল হালিম : সাবেক সচিব। রাজনীতিতেও তিনি সক্রিয়। দলের জন্য বিএনপিপন্থী আমলাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা তার অন্যমত কাজ বলে জানা গেছে।মেজর জেঃ (অবঃ) রুহুল আলম চৌধুরী : কক্সবাজারের সন্তান সাবেক সেনা সদস্য রুহুল আলম চৌধুরী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা। সামরিক বিষয় নিয়ে তিনি দলকে সাহায্য সহযোগীতা করে থাকেন।সাবিহ উদ্দিন আহমেদ : সাবেক এই আমলা দলের কর্মসূচিতে মাঠের রাজনীতিতে না থাকলেও দলের পররাষ্ট্র বিষয়টি দেখভাল করেন বলে জানা গেছে।শওকত মাহমুদ : পেশায় সাংবাদিক। তিনি বিএনপিপন্থী সাংবাদিক নেতা। দলের জন্য বরাবরই সক্রিয় অবস্থান তার। বর্তমানে জেলে আছেন।জহুরুল ইসলাম : তিনি সাবেক সচিব। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় না থাকলেও রাজশাহীর রাজনীতিতে তাকে কালেভদ্রে দেখা যায়। সাবেক আমলাদের কর্মকাণ্ডে ও তাকে মাঝে মধ্যে তাকে দেখা যায়।ব্যারিস্টার মুহম্মদ হায়দার আলী : সাবেক সচিব। মাঝে মধ্যে মিডিয়াতে এবং দলীয় অফিসে দেখা যায় তাকে।এম এ কাইয়ুম : পুলিশের সাবেক আইজি। তিনি গুলশান অফিসের বেতনভুক্ত প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।খন্দকার শহিদুল ইসলাম : সাবেক সচিব। ঝিনাইদহের শৈলকুপার রাজনীতিতে প্রচ্ছন্নভাবে সক্রিয় কিন্তু কেন্দ্রে নয়। মাঝে মাঝে তাকে সাবেক আমলাদের সাথে দেখা যায়।ক্যাপ্টেন (অবঃ) সুজাউদ্দিন : সাবেক সচিব। বহুদিন তাকে দলের কোনো কর্মকাণ্ডে দেখা যায় না।অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন : তিনি ড্যাব নেতা এবং পেশাজীবী হিসেবে বিএনপির রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। দলের নেতাকর্মীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন : সাবেক মন্ত্রী, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র। তিনি সরাসরি রাজপথে না থাকলেও মিডিয়ায় সরব থাকেন। চট্টগ্রামের স্থানীয় রাজনীতিতে পূর্বে আবদুল্লাহ আল নোমানের সাথে ঝামেলা থাকলেও এখন দু’জন একসাথে কাজ করছেন।আবদুল মান্নান : সাবেক মন্ত্রী এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়। এছাড়া তিনি সৎ ও নিষ্ঠাবান ও কর্মী বান্ধব বলে জানা গেছে।ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু : তিনি মিডিয়া বান্ধব ব্যক্তিত্ব। কেন্দ্রের রাজনীতিতে জোরালো ভাবে সক্রিয় না থাকলেও তার এলাকা সিরাজগঞ্জের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তবে স্থানীয় রাজনীতিতে তাকে নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে বলে জানা গেছে।আলহাজ্ব এম মঞ্জুর আলম : আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদানের মাধ্যমে তিনি চট্টগ্রামের মেয়র হয়েছিলেন। সর্বশেষ মেয়র নির্বাচনে পরাজয়ের পর তিনি রাজনীতি থেকেই অবসর নেয়ার ঘোষণা দেন।খন্দকার আ্যডভোকেট জয়নুল আবেদীন : নিরব ও নিভৃতচারী একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে দলের মধ্যে পরিচিত তিনি। সুপ্রীম কোর্টের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে গ্রেফতার ও জেলে যাওয়া নেতাকর্মীদের তিনি সাধ্যমত আইন সেবা দিয়ে থাকেন। এছাড়া দলটির শীর্ষ পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতার মামলা তিনি দেখাশোনা করেন।