“সমাজের অপ্রত্যাশিত রুপ পরকীয়া”

IMG-20151020-WA0009আবুবকর সিদ্দীক:স্বামীরা প্রেমিক হতে অবশ্যই রাজি, তবে সেটা নিজের স্ত্রীর সাথে নয়। স্ত্রীরা প্রেমিকা হতে রাজি, তবে সেটা নিজের স্বামীর সাথে নয়। নিজের ঘরের ভিতরে প্রেম করতে কেউই চায় না। কেউ কেউ আবার বলে নিজের স্ত্রী সে তো ঘরেই থাকবে, তার সাথে আবার এত পিরীত পিরীত ভাব করা কি এমন দরকার। যদি বাহিরের কারো সাথে একটু প্রেম করা যায় তাহলে ঘরে বাহিরে সময়টা বেশ ভালো কাটবে, হোক সে বিবাহিত বা অবিবাহিত। বন্ধুর বউ হলে ও সমস্যা কিসে।
কিছু কিছু মেয়েদের ক্ষেত্রে এমন হয়-
স্বামী তো আমার আছে, যদি বাড়তি একটু ভালবাসা পাওয়া যায় তাহলে কি এমন ক্ষতি? মাঝে মাঝে মোবাইলে অতিরিক্ত ব্যালেন্স পাওয়া যাবে, চ্যাটে রোমান্টিক গল্প গুজব করা যাবে।
আমার ভাষায় এটাকে আমি বলি পরকীয়া। পরকীয়া বর্তমানে আমাদের সমাজে মহামারি আকার ধারন করেছে। কিন্তু কেন হচ্ছে পরকীয়া? উত্তর খুজঁতে গেলে অনেক নাটকীয় এবং হাস্যকর উত্তর মিলবে।
কিন্তু বাস্তবে আমাদের চোখে যা পড়ে-
* ঘরে সুন্দরী স্ত্রী থাকতে কেন স্বামী অন্য মেয়ের প্রতি আসক্ত হবে?
– হয়তো ছেলেটির চরিত্র বিয়ের আগে থেকেই খারাপ।
– ছেলের অমতে হয়তো অভিভাবকরা বিয়ে করিয়েছে।
– মেয়েটি হয়তো ছেলের পছন্দনীয় নয়।
– স্বামী রোমান্স করতে পছন্দ করে কিন্তু মেয়েটা রোমান্স কি বুঝেই না।
– ছেলে উচ্চ শিক্ষীত কিন্তু মেয়ে প্রাইমারী পাশ, তাই মিচুয়েড হতে পারছে না।
– পুর্বের প্রমিকাকে ভুলতে পারছেনা তাই ঘরে থাকা স্ত্রীকে ভালবাসার অধিকার দিতে পারছেনা।

* ঘরে এত সুন্দর সুঠাম স্বামী থাকতে স্ত্রী কেন পরপুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হয়??
– নিশ্চয় মেয়ের চরিত্র খারাপ তাই এক স্বামী দ্বারা সন্তুষ্ট নয়।
– হতে পারে মেয়ের অজান্তে জোর পুর্বক অভিভাবকরা বিয়েতে বাধ্য করিয়েছে।
– হতে পারে স্বামীর অবহেলা স্ত্রী রোমান্স করার জন্য অন্য কাউকে খুজে নিয়েছে।
– হতে পারে কলেজের প্রেমিককে ভুলতে পারছেনা তাই ঘরের স্বামীকে আপন করে নিতে পারছেনা।

বর্তমানে পরকীয়ার জন্য যেটা সবচেয়ে বেশী দায়ি তা হচ্ছে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট। যেটা আমাদের জন্য বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয়ের মাঝে একটি সেটিই আমাদের জন্য মরনফাঁদ।
বিশ্ববাসী যেটাকে উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, আমরা সেটাকে দেশ জাতি এবং নিজেকে ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার করি। তাই বলে মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট এর জন্য দায়ী নয়। দায়ী আমাদের চরিত্র এবং হীনমন্য মানসিকতা। প্রায়ই পত্রিকা টিভি চ্যানেলে খবর দেখা যায় পরকীয়ার কারনে স্বামী খুন, পরকীয়ার কারনে স্ত্রী খুন। পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে তিন সন্তানের জননী নতুন প্রেমিকের হাত ধরে উধাও। উদ্ভুত আমাদের চরিত্র! উদ্ভুত আমাদের মানসিকতা! এমন হীনমন্য মানুষগুলো বিবাহিত মানুষকে কলংকিত করছে। এই অদ্ভুত কাহিনী দেখে ভালো সংসারগুলোতে সন্দেহের তীর ছুড়ছে। না সবার ক্ষেত্রে এমন হয় না। কিছু কুরুচিপুর্ণ অসচেতন মানুষগুলো এহেন কাজ করে থাকে। সচেতন মানুষের সংসারে থাকে স্বর্গীয় সুখ।
স্বর্গীয় সুখের সংসার গড়তে হলে যে বিষয়গুলা আমাদের নজরে রাখতে হবে-
* কোরআন এবং হাদিসের আলোকে জীবন গড়া।
* বিবাহ পুর্বে পাত্র/পাত্রীর মতামত যাচাই করা।
* দাম্পত্য জীবনে অতীতকে সামনে না টেনে বর্তমানকে মেনে নিয়ে ভবিষ্যত গড়ার লক্ষ্যে অটুট থাকতে হবে।
* স্বামী স্ত্রী একে অন্যের খুনসুটি না খোজে ভালবাসা খোজা শ্রেয়।
* একে অন্যের প্রতি সহনশীল মনোভাবে চলাফেরা করা উচিত।
* সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে,তাই স্বর্গীয় সুখের সংসার গড়তে হলে স্ত্রীকে বিশেষ ভুমিকা পালন করতে হয়। স্বামী যদি সোহার্দপুর্ন ভালবাসা পায় অবশ্যই অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হবেনা, ঠিক তেমনি স্ত্রী যদি সোহার্দপুর্ন ভালবাসা পায় অবশ্যই অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হবেনা।
* বিশেষ করে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলা দেখা থেকে বিরত থাকা উচিত, কারন এই চ্যানেলগুলোতে পরকীয়া ও নগ্নতা ছাড়া কিছুই শিক্ষা নেয়া যায় না।