২০ বছর পর নগরীতে কোটি টাকা মূল্যের জমি উদ্ধার
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ প্রায় ২০ বছর পর অভিযান চালিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের কোটি টাকার জায়গা দখলমুক্ত করা হয়ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জল্লারখাল দখলমুক্ত করতে দিনব্যাপী অভিযান চালায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন। অভিযানকালে দেখা যায়, প্রায় ১০০ ফুট দৈর্ঘের এবং ১২ ফুট প্রস্থ জায়গা দখল করে নগরীর একটি স্বনামধন্য মিষ্টির দোকানের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে।
মিষ্টির কারখানাই শুধু নয়, একই লাইন ঘেষে কেউ জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন গরুর খামার, কেউ করেছেন টিনশেডের কলোনী, কেউবা ব্যাচেলর নিবাস, আধাপাকা ঘর, টয়লেটহস সীমানা দেয়াল।
সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, এই এলাকায় শেফালী বেগম ও ফারহানা ইয়াসমিন গং পূর্বে ৬৭ ফুট দৈর্ঘ্যে ও ৬ ফুট প্রস্থে এবং দক্ষিণে ১০৩ ফুট দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ৭ ফুট জায়গা জবর দখল করেছিলেন। আনোয়ার বকস ১০০ ফুট দৈর্ঘের এবং
১২ ফুট প্রস্থ জায়গা জবর দখল করে রেখেছিলেন। একইভাবে সাবের খান দৈর্ঘ্যে ৩০ ফুট ও প্রস্থে উত্তরে ৩ফুট-দক্ষিণে ৮ ফুট, ফয়জুল হোসেন মিনা মিয়া দৈর্ঘ্যে ৩৩ ফুট ও প্রস্থে উত্তরে ৮ ফুট-দক্ষিণে ১১ ফুট, তফজ্জুল হোসেন দৈর্ঘ্যে ৩১ ফুট ও প্রস্থে ১১ ফুট, শাফি মিয়া দৈর্ঘে ৭৬ ফুট ও প্রস্থে ১১ ফুট, মীর হোসেন দৈর্ঘ্যে ৫৭ ফুট ও প্রস্থে ১২ফুট, লাল মিয়া দৈর্ঘ্যে ৬২ ফুট ও প্রস্থে ১২ফুট জায়গা জবরদখল করে রেখেছিলেন।
এসব জায়গা দখলমুক্ত করতে দিনব্যাপী অভিযানকালে অবৈধভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে জায়গা দখলমুক্ত করতে সমর্থ হয় সিটি কর্পোরেশন। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব।
এসময় তিনি জানান, এসব জমি দখলমুক্ত করে চারিদিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এই জায়গায় যাতে একটি দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং লেক তৈরী করার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। অভিযানকালে স্থানীয় জনগন স্বতঃফূর্তভাবে সহযোগিতা করায় তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান এনামুল হাবীব। তিনি জানান, জল্লারখাল এর পর তালতলা অভিমুখে প্রবাহমান বলরামের খালটিও উদ্ধারে নামবে সিটি কর্পোরেশন।
প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নুর আজিজুর রহমান জানান, জল্লারখালের সাথে জিন্দাবাজার থেকে প্রবাহিত ছড়া এবং তালতলা দিয়ে প্রবাহমান বলরামের খালের সংযোগ স্থাপন করা হবে। এজন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন নতুন উদ্যোগ গ্রহন করবে। এই কাজটি সমাপ্ত হলে এই এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে।
অভিযানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মানিত কাউন্সিরর রেজওয়ান আহমদ, সহকারী প্রকৌশলী শামসুল হক, বিজিত দাশসহ আরও অনেকে।
অভিযান চলাকালে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত অভিযানকে সাধুবাদ জানান।এলাকার বাসিন্দা আলা বকস, রুশন খান, আব্দুল হান্নান খান, চাহন ক্লাবের সভাপতি সাবের খান, সহ সভাপতি আনোয়ার বখত বলেন, তারা সকলেই চান এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হোক।
এজন্য সিটি কর্পোরেশনকে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন জানিয়ে বলেন, এই এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করার স্বার্থে তালতলা পর্যন্ত ছড়া প্রশস্থ এবং দখলমুক্ত করতে হবে। নতুবা এই এলাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা কোনদিন দূর হবে না।