দুর্গার বিসর্জনে দুই সিলেটের মিলনমেলা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ এপারে বাংলাদশের সিলেট, ওপারে ভারতের আসাম রাজ্য। মাঝখানে বয়ে গেছে কুশিয়ারা নদী। এই দুইপারের সিলেটি বাঙালির মিলন ঘটেছিলো বৃহস্পতিবার। দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনে মিলনমেলা ঘটেছিলো বাংলা ও আসামের বাঙালিদের মিলনমেলা।
বিজয়া দশমীতে সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর বিসর্জন করা হয় দুর্গা প্রতিমা। এসময় জকিগঞ্জের ওপারে কুশিয়ারানা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করেন আসামের পূজারীরা।
প্রতিমা বিসর্জনকালে কুশিয়ারার দুই তীরে জড়ো হন হাজারো পূণ্যার্থী। এ উপলক্ষে হিন্দু, মুসলিম পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে জকিগঞ্জ পৌর শহরের কাস্টমঘাট ও ভারতের কাস্টমঘাটস্থ অখন্ড মন্ডলী মন্দিরের প্রাঙ্গন।
একসময় আসামের অন্তর্গত ছিলো সিলেট অঞ্চল। দেশভাগে ভাগ হয় আসাম। সিলেট হয় বাংলাদেশের অংশ। আসাম চলে যায় ভারতে। ফলে সিলেটের হিন্দু সম্প্রদায়ের আত্মীয়-স্বজনেরই বাস আসামে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিমা বিসর্জনে মিলন ঘটেছিলো এক সময় বিচ্ছেদ হওয়া স্বজনদের সাথে। এসময় এক আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ঢাক এবং শঙ্খ ধ্বনির আওয়াজে মূখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
হিন্দুদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজার সমাপনীর মিলন মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ জকিগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। পুলিশ, বিজিবি, ডুবুরি, আনসার সদস্যরা ছিলেন সর্তক অবস্থায়। মর্তলোক থেকে কৈলাশে দেবীকে বিদায় জানাতে নেচে গেয়ে মাতোয়ারা হন ভক্তরা।
ভক্তরা সেজেছিলেন উৎসবের বর্ণিল রঙে। বিজিবি এবং বিএসএফের সদস্যরাও মেতে উঠেছিলেন উৎসবে। কুশিয়ারা নদীতে উভয় পাড়ের প্রতিমা বিসর্জনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। জকিগঞ্জের ৯৫ টি পূজামন্ডপ থেকে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিয়ে আসেন ভক্তরা। বিসর্জনের দিন উৎসবে মেতে ওঠে সীমান্ত ঘেঁষা এ নদীপাড়ের নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরেই এ উৎসব চলে আসছে কুশিয়ারা নদীতে।
জকিগঞ্জ পূর্জা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নীল মনি রায় ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র নাথ জানান, জকিগঞ্জে ৯৫ টি পুজামন্ডপেই শান্তিপূর্ণভাবে পূজা শেষে কুশিয়ারার কাস্টমঘাটে প্রতিমা বিসর্জনে সকল ধর্মবর্ণের মানুষের মিলনমেলা যেন সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সেতুবন্ধন।