প্রেমের কারণেই খুন সিলেটের অরুণ দত্ত
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ এই মাসের শুরুতে নগরীর শাহজালাল ব্রিজের নিচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে অরুন চন্দ্র দত্ত (২৬) নামে যে যুবকের লাশ উদ্ধার হয়েছিল, তাকে খুন করা হয়েছে। ৩ অক্টোবর অরুণের লাশ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার হলেও পরে তার পরিচয় শনাক্ত হয়। এই ঘটনায় আটক দু’জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেছে। এর ভিত্তিতে আলী আহমদ লিমন ও সাদ্দাম হোসেন নামের দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার তাদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ও সোবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শ্রীকান্ত চন্দ্র দাস জানান, অরুন হত্যায় পূর্বে গ্রেফতার অশোকচন্দ্র কর ও মনু আহমেদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। তারা বলেছে, প্রেমঘটিত বিরোধের কারণেই অরুনকে খুন করা হয়। এরপর গোপনে শাহজালাল ব্রিজের নিচে তার লাশ ফেলে রাখা হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী-১) মোঃ সাহেদুল করিমের আদালতে অশোক চন্দ্র কর (২২) ও তার বন্ধু মনু আহমেদ (২৭) শনিবার এই স্বীকারোক্তি দেয়। অশোক চন্দ্র বালাগঞ্জ থানার ইলাশপুর গ্রামের অনিল চন্দ্র করের ছেলে। বর্তমানে সে মেন্দিবাগ এলাকার বাসিন্দা এবং মনু আহমেদ নগরীর মাছিমপুর দোয়েল ১৬ নং বাসার মৃত ফুল মিয়ার ছেলে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোববার নগরীর ছড়ারপাড় সুগন্ধা ১৩ (তেলবাড়ী) নং বাসার জমির আলীর ছেলে আলী আহমদ লিমন (২২) ও মেন্দিবাগ ফেরীঘাটের মোঃ মানিক মিয়া বাবুর্চির ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন (২৭)কে গ্রেফতার করা হয়। রোববার লিমন ও সাদ্দামকে ওই আদালতে হাজির করে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান তিনি। এই বিষয়ে শুনানির জন্যে সোমবার তারিখ নির্ধারণ করে তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক। আজ সোমবার ওই আদালতে তাদের রিমান্ড শুনানী কথা রয়েছে।
এসআই শ্রীকান্ত চন্দ্র দাস জানান, ২ বছর ধরে নগরীর পুরানলেনে শিবব্রত ভৌমিক ওরফে চন্দনের বাসায় বসবাস করে তার প্রতিষ্ঠানের কনস্ট্রাকশন ফার্মে ম্যানেজার হিসেবে চাকুরী করে আসছিলেন অরুন দত্ত। ৩ অক্টোবর বিকেল ৫ টার দিকে প্রতিষ্ঠানের কাজে কদমতলীর একটি ওয়ার্কশপে যান অরুন। ওইদিন রাত ১১ টার দিকে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী দুলাল তার মুঠোফোনে ফোন দেন। কিন্তু, ফোন রিসিভ করেন কোতোয়ালী থানার এক পুলিশ সদস্য। পরে কোতয়ালী থানায় গিয়ে তারা তার লাশ সনাক্ত করেন দুলাল। আসামীর বরাত দিয়ে এসআই শ্রীকান্ত আরো বলেন, আসামীরা পরস্পর বন্ধু। প্রেম-সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যা সোয়া ৭ টার দিকে আসামীরা তাকে মেন্দিবাগ শাহজালাল ব্রীজের মোড়ে ডেকে এনে ধারালো চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর গোপনে তাকে ব্রীজের নিচে ফেলে যায়। খবর পেয়ে ওই দিন রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সোবহানীঘাট ফাঁড়ির পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে অরুনের লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ সময় পুলিশ তার পরণের প্যান্ট থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ও ঘটনাস্থল থেকে একটি চাকু উদ্ধার করে। খবর পেয়ে এসএমপি কমিশনার কামরুল আহসানও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তার পরিচয় শনাক্ত হয়। জানা যায়, নিহত অরুন চন্দ্র দত্ত কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার রসুলপুর গ্রামের খোকন দত্তের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই শান্তি দত্ত বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নং- ৬ (০৪-১০-১৫)।