জনতার ক্ষোভ দেখলো কামরুল : ফের সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন

Kamrul_razon killerসুরমা টাইমস ডেস্কঃ শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামী কামরুল ইসলাম আদালত প্রাঙ্গনে জনতার ক্ষোভ দেখলো। রবিবার বেলা পনে ১২ টার সময় সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করার সময় উপস্থিত শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা কামরুলকে জুতা প্রদর্শন করেন। কেউ কেউ আবার কামরুলকে লক্ষ্য করে জুতাও নিক্ষেপ করে। এসময় শত শত জনতা কামরুলের ফাঁসি দাবি করে স্লোগান দিতে থাকে।
এর আগে সকাল ৯টায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কামরুলসহ অন্য আসামিদের কড়া নিরাপত্তায় আদালতপাড়ায় নিয়ে আসা হয়। রবিবার দুপুর ১২টা থেকে কামরুলের উপস্থিতেই চলে সাক্ষ্য গ্রহণ। রাজন হত্যা মামলার শেষ কার্যদিবসে আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদারসহ ৩ জন। সাক্ষ্য গ্রহণের এক পর্যায়ে কামরুল আদালতে আবেদন করেন ৩৫জন সাক্ষীর ফের সাক্ষ্য প্রদানের জন্য।
বাদী পক্ষের আইনজীবী শওকত আলী জানান, বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রদানের সময় আসামী কামরুল দেশের বাহিরে ছিল। দেশের বাহিরে থাকায় অভিযুক্ত আসামী (কামরুল) আইনজীবী নিয়োগ করতে পারে নি। তাঁর পক্ষে নতুন আইনজীবী নিয়োগ করে পুনরায় সকল সাক্ষীদের সাক্ষ্য শুনার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছে।
রাজন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিদ আলম, আলী হায়দার, শামীম আহমদ (পলাতক), তাজ উদ্দিন আহমদ বাদল, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, দুলাল আহমদ, নগরীর জালালাবাদ থানার পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ভিডিওচিত্র ধারণকারী নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ, জাকির ওরফে পাভেল ওরফে রাজু (পলাতক) ও আয়াজ আলী।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল ২ টা ৫৭ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের ০৪০ উড়োজাহাজে করে পুলিশের তিন কর্মকর্তা কামরুলকে নিয়ে সৌদি আরব থেকে হজরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেরেন। কাস্টমস ও ইমেগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করে বিকাল চারটার দিকে কড়া পুলিশি পাহারায় তাকে নিয়ে সিলেট আনা হয়।
এর আগে গত বুধবার সিলেট মহানগর হাকিম মো.সাহেদুল করিম, আনোয়ারুল হক, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক তাহমিনা ইসলাম ও জালালাবাদ থানার পুলিশ সদস্য ফয়সল আহমদ আদালতে সাক্ষ্য দেন।
গত মঙ্গলবার জালালাবাদ থানার পুলিশ কনস্টেবল জাকির হোসেন, মনির আহমদ, মাইক্রোবাসচালক আবদুল মান্নান ও ওয়ার্কশপ মালিক সুদীপ কপালি আদালতে সাক্ষ্য দেন। গত সোমবার আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন জালালাবাদ থানার শেখপাড়ার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন মেম্বার, কুমারগাঁওয়ের বাসিন্দা কোরবান আলী, আবদুল করিম ও আফতাব মিয়া।
গত রোববার আদালতে সাক্ষ্য দেন পশ্চিম জাঙ্গাইলের বাসিন্দা মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে আনোয়ারুল হক, কুমারগাঁয়ের বাসিন্দা জাকিরের ছেলে বেলাল আহমদ ও দকির গ্রামের বাসিন্দা ইসকন্দর আলীর ছেলে আবদুল হান্নান।
গত ৮ অক্টোবর সিলেট নগরীর কুমারগাঁয়ের বাসিন্দা লুৎফুর রহমান, বাবুল মিয়া, কাচা মিয়া ও পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের বাসিন্দা কাঁচা মিয়া ওরফে কচি আদালতে সাক্ষ্য দেন। ৭ অক্টোবর রাজনের গ্রাম বাদেআলির ইশতিয়াক আহমদ রায়হান, নিজাম উদ্দিন, পার্শ্ববর্তী গ্রাম অনন্তপুরের আবদুজ জাহির মেম্বার, শেখপাড়ার পংকি মিয়া সাক্ষ্য প্রদান করেন।
গত ৪ অক্টোবর আলোচিত এই হত্যা মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করেন রাজনের মা লুবনা বেগম, জিয়াউল হক, আল আমিন ও মাসুক মিয়া। তবে মাসুক মিয়া আসামিপক্ষে কথা বলা শুরু করলে বাদিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে বৈরী ঘোষণা করতে আদালতে আবেদন জানান।
এর আগে গত ১ অক্টোবর রাজনের বাবা আজিজুর রহমান ও মামলার বাদি জালালাবাদ থানার এসআই (বরখাস্তকৃত) আমিনুল ইসলাম আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য,গত ৮ জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে শিশু সামিউল আলম রাজনকে কামরুলের নেতৃত্বে পিটিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়।