বিএনপি কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

BNP Office Paltanসুরমা টাইমস ডেস্কঃ পাঁচ মাস আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় আনার কথা বলেছিল বিএনপি।কিন্তু আজও তা করা হয়নি। এ কারণে কার্যালয়ের ভেতরে দুই দফা হামলা হলেও কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অর্থ সংকটসহ নানা অজুহাত দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, সদিচ্ছা অভাবেই সিসিটিভি লাগানো হচ্ছে না। আর অপরাধীরা এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের অবরোধের শুরু থেকেই কার্যত বন্ধ ছিল দলটির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। পরবর্তীতে ৪ এপ্রিল দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে কার্যালয়ে যান। ওইসময়ই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি স্থাপন, নীচ তলায় আগতদের তথ্য সংগ্রহের জন্য নিবন্ধন খাতা রাখার কথা বলা হয়।
এর কিছুদিন পর ১৪ মে থেকে মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা ড.আসাদুজ্জামান রিপনও সিসিটিভি,ওয়াইফাই চালু করার কথা বলেছিলেন।তবে তার বক্তব্য অনুযায়ী সাংবাদিকদের দ্রুত সংবাদ পাঠানোর সুবিধার্থে ওয়াইফাই চালু হলেও সিসিটিভি স্থাপনের কোনো খবর নেই।
এদিকে দলের পক্ষ থেকে এতোসব বলার পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটলো। গত ১৪ জুন কার্যালয়ের ভেতরে প্রথম হামলা হয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম আজাদের ওপর। তাকে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনিত করার কিছুদিন পরই এ হামলা হয়।
ওই হামলার পর দলের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।কিন্তু কমিটি গঠন পর্যন্তই শেষ। এরপর এর কোনো অগ্রগতি আছে কিনা তা জানা যায়নি। তবে যুবদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ওই হামলা হয়েছিল বলে শোনা যায়।
এদিকে সালামের ওপর হামলার রেশ কাটতে না কাটতে গত মঙ্গলবার কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় হামলা হয় বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুর ইসলাম টিপুর ওপর।
দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে এমনটা বলা হলেও ছাত্রদলের একটি অংশ এ হামলা করতে পারে বলে জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে।
তবে ঘটনার কোনো ছবি না থাকায় প্রকৃতভাবে ঘটনায় কারা জড়িত তা বলতে পারছেন না দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
এদিকে এবারও টিপুর ওপর হামলার ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত কমিটি করার কথা বলা হয়েছে।
দপ্তরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে দলের কেন্দ্রীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে সিসিটিভি লাগানো হচ্ছে না।” বিএনপিতে কি টাকার সমস্যা চলছে এমন পাল্টা প্রশ্নে ওই নেতা বলেন,“বিষয়টি তেমন না। তবে এখানেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে।”
প্রশ্ন উঠেছে-বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় দিনদিন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে? কারণ এই হামলা ছাড়াও ২০১৩ সালের ১২মার্চ পুলিশ কার্যালয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে দু’টি বোমা ও ১০টি ককটেল উদ্ধার করেছিল। যদিও বিএনপির দাবি,নেতাদের ফাঁসাতে পুলিশই এগুলো নিয়ে ভেতরে ঢুকেছে।
তবে বিষয়টি মানতে নারাজ বিএনপির মুখপাত্র ড.আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারা হামলায় জড়িত তা চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্ত কমিটি সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে কাজ করে হামলার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করবে।এছাড়াও বিষয়টি শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হয়েছে।”
এদিকে টিপুর ওপর হামলার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও আতঙ্কে আছেন বলে জানা যায়। কারণ কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে হামলার চিন্তা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। তবে এই হামলায় শীর্ষ মহলকে চিন্তায় ফেলেছে।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সমস্যা হবে না জানি তারপরও আতঙ্কের মধ্যে আছি।কারণ কখন কি ঘটে যায় বলা মুশকিল।”
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান,“শিগগিরিই তদন্ত কমিটি করা হবে। বিষয়টিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।আশা করি দ্রুত অপরাধীরা চিহ্নিত হবে।” তিথ্যসূত্রঃ ঢাকাটাইমস/১৫ অক্টোবর/বিইউ/এআর /ঘ.