১০ অক্টোবর শ্রমিকনেতা মফিজ আলী-এর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী
আগামী ১০ অক্টোবর’১৫ জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি প্রখ্যাত চা শ্রমিকনেতা, জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের অগ্রসৈনিক জননেতা মফিজ আলী-এর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রতি বছরের মত এবারও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলবীবাজার জেলা কমিটির বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১০ অক্টোবর সকাল ১০ টায় প্রয়াত নেতার কমলগঞ্জ উপজেলার ধোপাটিলাস্থ সমাধিতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন, রিকশা শ্রমিক সংঘ, চা-শ্রমিক সংঘ, দর্জি শ্রমিক সংঘসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ ও শপথ গ্রহণ এবং সকাল ১০.৩০ টার সময় আলোচনা সভা। উক্ত কর্মসুচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন। উক্ত কর্মসূচিতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ এবং তার বেসিক ইউনিট হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন, প্রেস শ্রমিক ইউনিয়ন, দর্জি শ্রমিক সংঘ, চা শ্রমিক সংঘ, রিকশা শ্রমিক সংঘ ও স’মিল শ্রমিক সংঘের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের যথাসময়ে উপিস্থত হয়ে প্রয়াত নেতার অসমাপ্ত কাজ তথা জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার দৃপ্ত শপথ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন ও সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস।
উল্লেখ্য সংগ্রামী এই জননেতা ১৯২৭ সালের ১০ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা শ্রীসূর্য-ধূপাটিলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। দীর্ঘ ৬০ বছরের বেশি রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছাত্র আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ আন্দোলন, চা শ্রমিক আন্দোলন, বালিশিরা কৃষক আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেন। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করার কারণে তিনি বৃটিশ আমল, পাকিস্তান আমল ও বাংলাদেশ আমলে মোট ৭ বার কারাবরণ করেন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদে বিশ্বাসী মফিজ আলী জননেতা হিসেবে শোষিত নির্যাতিত শ্রমিক কৃষক মেহনতি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে যেমন নিরলস সংগ্রাম করে গেছেন তেমনি তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে সংশোধনবাদ, সুবিধাবাদীদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। তিনি ইংরেজি ডন, সংবাদ, ইত্তেফাক, সাপ্তাহিক জনতা, লালবার্তা প্রভৃতি পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। তিনি গণতন্ত্রের নির্ভীক মূখপত্র সাপ্তাহিক সেবা পত্রিকায় মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে লেখালেখি করে গেছেন। রাজনৈতিক কারণে কলেজ থেকে বহিস্কৃত হওয়ায় বিএ শেষ বছরের ছাত্র হিসেবে তাঁর শিক্ষা জীবন সমাপ্ত হয়।
২০০৮ সালে ১০ অক্টোবর সংগ্রামী এই জননেতা ৮১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।