সিলেটে পশুবাহী ট্রাক প্রবেশে কড়াকড়ি, ক্ষতিগ্রস্থ বৈধ হাটের ইজারাদাররা

animal marketসুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট নগরীতে দিনের বেলা কোরবানীর পশুবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দিচ্ছে না মহানগর পুলিশ। ফলে বিপাকে পড়েছেন সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী কাজিরবাজার পশুর হাটসহ সদর উপজেলার থেকে ইজারা নেওয়া লাক্কাতুরা, শাহপরান গেইট, এভারগ্রীন মাঠ ও মিরাপাড়া পশুর হাটের বৈধ ইজারাদাররা।
পুলিশ বলছে পশুর হাটের ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নগরীতে পশুবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ সদর উপজেলা থেকে ইজারা নেওয়া কোনো ব্যবসায়ী এ ধরণের বৈঠকের খবর জানে না বলে জানান।
ইজারাদারদের দাবি, পশুর হাটের ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক হলে বৈধ ইজারাদার হিসেবে তাদের জানার কথা। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তাদের না জানিয়ে যারা নগরীতে অবৈধ পশুর হাট বসিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তাদের সাথে বৈঠক করে নগরীতে কোরবানীর পশুবাহী ট্রাক দিনের বেলা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে অনেক হাটেই সোমবার গরু উঠার কথা থাকলেও নগরীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে গাড়িগুলো আটকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাতের বেলা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পশুবাহী ট্রাকগুলো অবৈধ হাটের ব্যবসায়ীরা জোর করে আটকে পাইকারদের মারধর করে রেখে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রাতে লোক চলাচল কম থাকায় টহল পুলিশকে উৎকোচ দিয়ে বৈধ হাটের ব্যানার টানানো বেশ কটি ট্রাক নগরীর প্রবেশমুখ উপশহরে আটকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সের প্রবেশ পথের অবৈধ হাটে আটকে রাখা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারো সিলেট নগরীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতারা জোট বেধে বেশ কয়েকটি পশুর হাট বসিয়েছেন।
এগুলোর মধ্যে সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ সদর উপজেলা খেলার মাঠে ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান পাপ্পু, আওয়ামী লীগ নেতা মোশাহিদ আলীর ভাই শামীম আহমদ, ছাত্রদল নেতা শাহ সাইদুর রহমান হিরু ও চেম্বার অব কমার্সের অর্থ আত্মসাতের মামলার আসামি এমএ মঈন খান বাবলুসহ আ.লীগ, বিএনপি ও জামাতের লোকজন অবৈধ হাট বসিয়েছেন।
নগরীর উপশহরে আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সের প্রবেশপথে শ্রমিকলীগ নেতা আবুল কাহের ইজু, শামীম ইকবাল, ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ সিরাজ, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীরদার অবৈধ হাট বসিয়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এছাড়া কয়েদীর মাঠে আনোয়ারুজ্জামান ও তার লোকজন পশুর হাট বসিয়ে ব্যবসা করছেন। নগরীর এমসি কলেজ রোডে আনন্দ সংসদ মাঠে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুল গফফারের নেতৃত্বে চলছে অবৈধ পশুর হাট।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, এবছর নগরীতে কোনো পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউ কোনো হাট পরিচালনা করলে তার অবৈধ বলে বিবেচিত হয়। সিসিক সূত্র জানায়, নগরীতে কোনো অবৈধ হাট বসলে তা উচ্ছেদের দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের।
লাক্কাতুরা পশুর হাটের ইজারাদার মো. রিমাদ আহমদ রুবেল জানান, পুলিশ কাদের সাথে বৈঠক করেছে তা আমি জানি না। সদর উপজেলার বৈধ ইজারাদার হিসেবে বৈঠকের দাওয়াত পাওয়ার অধিকার আমার রয়েছে। কিন্তু আমরা যারা সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ইজারা নিয়ে হাট পরিচালনা করছি তারা দাওয়াত পাইনি। অবৈধ হাট যারা পরিচালনা করেছে তাদের সুবিধার্থে দিনের বেলা পশুবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাতের বেলা অবৈধ হাটের মালিকরা পশুর ট্রাক জোর করে আটকে রাখে। ফলে আমরা ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।