প্রকাশনা ? আশার আলো না মরীচিকা ?
সাহিত্য চর্চার আড়ালে সম্পাদক হওয়ার চর্চা
নোমান মাহফুজ: লেখালেখি করছি দীর্ঘদিন ধরে,কতটুকু সফল হচ্ছি তা অগ্রজদের কাঠগড়ায় বিবেচনাধীন। কারণ, তারা বিচারক,নবীন লেখক-কবিদের পথ চলার গুরু। যাই হোক, এ নিয়ে কথা দীর্ঘ করার প্রয়োজন নেই।
আজ ভাবতে অবাক লাগে,আমাদের সিলেটে পত্র পত্রিকা নিয়ে যে ব্যবসা শুরু হয়েছে, তা ভবিষ্যতের জন্য সুফল না কুফল বয়ে আনবে, সংশয় হচ্ছে। সিলেটের অগ্রজ এবং কিছু সংখ্যক নবীন কি সাহিত্য চর্চায় লিপ্ত, না প্রকাশনা চর্চায়? তবে সিলেটের বর্তমান পত্র-পত্রিকার মিটিং সমাবেশ,লিফলেট-পোষ্টারের হাহাকার দেখে মনে হচ্ছে, সিলেটে শুধু সম্পাদক হওয়ার চর্চা চলছে, সাহিত্য নয়। সাহিত্য চর্চার আড়ালে সম্পাদক হওয়ার চর্চা কতটুকু সুফল বয়ে আনবে, গবেষক সম্প্রদায় কি ভাবছেন ?
সিলেটে পত্র-পত্রিকার প্রকাশের হিড়িকে একটি কথা সু-ষ্পষ্ট বুঝা যায়, সিলেটের সবাই সম্পাদক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর, প্রতিষ্টিত লেখক-কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-কলামিষ্ট হওয়াতে তাদের বিবেক অসন্তুষ্ট, নতুবা নিজেরা বিবেকের কাছে হার মানছেন। সিলেটের এহেন পরিস্থিতিতে বুঝা যায়, ডানপন্থীদের আশা-স্বপ্ন-ইচ্ছা ‘সম্পাদক’ আর বামপন্থীদের লেখক-কবি-কলামিষ্ট-সাংবাদিক।
সিলেটের ডানপন্থী নবীনরা অসহায়ের মতো বোবা হয়ে দাড়িয়ে আছে সাহিত্যের দ্বারে, দ্বার দিয়ে যেন প্রবেশের সুযোগ নেই। আর প্রবীনরা মিটিং-সমাবেশ করে সম্পাদনা পরিষদে গড়াগড়ি করছেন প্রকাশনা চর্চায়। নবীন আর অসংখ্য পাঠকের কথা যেন ভাবার সময় নেই। অবশ্যই সময় আসবে সেদিন, যেদিন বামপন্থীরা ডানপন্থীদের স্থান দখল করে নিবে। নবীনদের কথা চিন্তা করে যদি সাহিত্য-সাংবাদিকতা কোর্স চালু করে সাহিত্যের পাঠশালা গড়ে তুলে পত্রিকা ব্যবসাকে পেছনে ফেলে তাদের প্রতিভা বিকাশে কাজ করা যেত, তাহলে নবীনরা আশার আলোর মুখ দেখতো।
আসলে নবীন বিকাশে নয়, পত্রিকা বিকাশে প্রবীণরা।
অনেকের মখের বুলি ‘প্রকাশনার মাধ্যমে নবীন বিকাশ সম্ভব’। তাদেরকে বলি, সিলেটে এতো পত্র-পত্রিকা থাকতে নবীনদের এমন অবস্থা কেন ? এর জন্যই দায়ী শ্লোগানধারীরা।
২০১১ সালের প্রথম ও ২০১০ সালের শেষের দিকের কথা, সিলেট তেকে পত্র-পত্রিকা প্রকাশের যে হিড়িক দেখা গিয়েছিল, তা দেখে নবীনরা আশায় বুক বেঁধে সাহিত্যের নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করছিল, কিন্তু এ আশার আলো মাসিকগুলোর ক’টি অবশেষে মাটে-ময়দানে টিকে থাকতে পেরেছিল। দু‘একটি ঠিকে থাকতে পারলেও বাকিগুলো ঠিকে থাকতে পারেনি।এটা সিলেটের সাহিত্যগুরুদের ব্যর্থতা।
অনেকের মতে সাধ আছে, সাধ্য নেই ,যদি সাধ্য না থাকে তাহলে এত পত্রিকা ম্যাগাজিন প্রকাশ করে কেন সাহিত্যাঙ্গনকে ভুলন্ঠিত-নোংরা করছেন। সিলেট থেকে প্রকাশিত কয়েকটি ম্যাগাজিনের মাঠে-ময়দানে টিকে থাকতে না পারা ও সম্পাদক মহোদয়ের ব্যর্থতা নবীন সাহিত্যকে কি পূরস্কার দিল আসুন! একটু জেনে নেই। “বাজার আছে পাঠক নেই” ”ব্যালেন্স জটিলতা” “প্রশাসনিক জটিলতা” “সম্পাদনা পরিষদে গরমিল” পদের তল্লাশী” এছাড়াও প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য অনেক জটিলতায় ঠিকে থাকতে থাকতে পারেনি পত্রিকা ম্যাগাজিন বুলেটিন।
(ক) অনেক নবীন আছেন, যারা প্রবীনদের সাথে তাল মিলাতে প্রকাশ করে ম্যাগাজিন। সম্পাদনা, পাঠক,লেখক, ব্যালেন্স, বানান, ইত্যাদি জটিলতায় অবশেষে এই নবীন কতৃক প্রকাশিত ম্যাগাজিন পত্রিকাও হারিয়ে যায়। ব্যর্থতার দায়ভার কাধে নিয়ে বসে বসে আঙ্গুল চুষতে হয়।
(খ) মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে প্রকাশিত ম্যাগাজিন পত্রিকা পাটক তৈরী ও বিজ্ঞাপন যোগাতে ব্যর্থতার কবলে পড়ে বিলীন হয় (গ) হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করে স্বজন প্রীতি, স্বার্থপ্রীতির অভিযোগে বিলীন হয় পত্রিকা ম্যাগাজিন। এইতো দেখুন গত বছরের গাল হকিক্বত, ২০০৯ সনের আগষ্টে প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক মাও. বিলাল আহমদ সম্পাদিত মাসিক মুকুল নামক ম্যাগাজিন প্রকাশ হয়। স্বজন প্রীতি, মাতৃপ্রীতি মুখ পরিচিতি আর প্রশাসনিক জটিলতায় মাঠে ময়দানে টিকে থাকতে পারেনি। পরবর্তীতে নবকলি নাম ধারণ করে পাটক সম্মুখে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ২/৩ বছর পার হয়ে গেল, সন্ধান নেই। ২০০৯ সনে প্রকাশ হওয়ার পর থেকে উপস্থিতি আর অনুপস্থিতির মধ্য দিয়ে কাটল প্রায় দেড় বছর, ২০১১ সালের প্রথম দিকে কিছুটা ধারাবাহিকের রুপ দেখা গেলেও প্রশাসনিক জটিলতায় থমকে দাড়ায় প্রকাশনা। তবে নতুন নাম ধারণ করে প্রকাশের কথা থাকলেও আর কি পাওয়া যাবে, তা সন্দেহ জনক। মিসবাহ মনজুর সম্পাদিত মাসিক আদর্শ পুরুষ ২০১১ সালের জানুয়ারীতে প্রকাশ হলে জঙ্গী, মৌলবাদীর অপবাদে রেজিষ্ট্রেশন করতে ব্যর্থ হন সম্পাদক সাহেব, যার ফলে সম্ভব হয়নি ২য় সংখ্যা বা নিয়মিত প্রাকাশের তবে আশা রাখি, এই সমস্ত ষড়যন্ত্রকে পিছনে ফেলে সুস্থ সাহিত্য নিয়ে আদর্শ পুরুষ একদিন পাটক সম্মুখে নিয়মিত হাজির হবে। মাও. আশরাফে আলী সম্পাদিত মাসিক মুহাম্মদী ২০১১ সালের জানুয়ারীতে আত্মপ্রকাশ হলে যেমন মাসিক মুহাম্মীর দেখা মিলছেনা, টিক তেমনি সম্পাদক মশাইরও দেখা মিলছেনা, প্রকাশের ব্যর্থতায় নাকি লজ্জা পেয়ে কোথাও আত্মগোপন করে আছেন, আল্লাহ মা’লুম সাংবাদিক ও সমালোচক নোমান বিন আরমান সম্পাদিত মাসিক কালকন্ট ২০০৭ সালের এপ্রিলে আত্মপ্রকাশ হলে কেন যেন তার ধারাবাহিকতা নেই, তা আজও জানতে পারিনি সম্পাদক দাদার নিকট থেকে। হঠাৎ দেখা মিলে। যা সম্ভব, সম্পাদক দাদার আর্থিক জটিলতা থাকতে পারে, তাই মনে হয় প্রকাশ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রার্থনা! এ জটিলতা থেকে যেন আল্লাহ থাকে মুক্তি দেন। অন্য কোন জটিলতা থাকলে কি আর করার আছে ‘চাচা নিজের জান বাঁচা’। ইহাতে শামুল হক ক্বাসেমী সম্পাদিত মুক্ত কলম নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ হয় ২০১১ সনের ডিসেম্বরে। প্রকাশের প্রথম দিকে কিছুটা পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে থাকলেও ৪/৫ টি সংখ্যা প্রকাশ হলে প্রশাসনিক ও ভিন্ন ব্যস্থতার দরুণ পত্রিকাটির নতুন কোন সংখ্যা পাটকের চোখে পড়ছেনা। তবে পুরাতন সংখ্যাগুলোর দেখা মিলে চলতি পথে কোন লাইব্রেরীর বারান্দায়। সন্দেহ হচ্ছে, না জানি আর কখনও কি দেখা হবে আমার আমাদের। ভদ্রলোক জে এ কাজল খান ও শাহিদ হাতিমী দ্বয়ের যৌথ সম্পাদনা সংকলনে ২০১১ সনের মার্চে সময়ের আহ্বান নামে মাসিক অনিয়মিত পাঠক ভূগান্তির পত্রিকার প্রকাশ ঘটে। কিন্তু আর্থিক ব্যক্তিগত প্রশাসনিক ও ভিন্ন জটিলতায় তা টিকে থাকতে পারেনি এবং পারবেও না কারণ, ভদ্রলোক কাজল খান উনার গোলাপ নামে একটি সাপ্তাহিকের রেজিঃ নং সীল সময়ের আহ্বানে কম্পিউটার মারফতে বসিয়ে জালিয়াতি করে ধরাও পড়ে গেলেন। হায় হায়, এ লজ্জা রাখি কোথায়? তরুণ কিছু আলেম পরিবার কর্তৃক একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার তোড়জোর শুনা গেলেও মানা জটিলতায় ওদের আশাগুলো আর পাপড়ি মেলতে পারেনি। বুলেটিন বিশেষ প্রকাশনা উল্লেখ করে ৩/৪টি সংখ্যা প্রকাশ হলেও এখন আর এই সাপ্তাহিকের দেখা মিলছেনা। হবু সাপ্তাহিকটি সিলেটের আলো নাম ধারণ করে তরুণ মহাদ্দীসও কলামিষ্ট মাও. রেজাউল করীম রেজার সম্পাদনায় প্রকাশের কথা ছিল। যতদুর জানি, সম্পাদক সাহেবের আর্থিক জটিলতায় ও সময়ের ব্যবস্থতার দরুণ সম্ভব হয়ে উঠছেনা।
তৌহিদী পরিক্রমার চোখে তরুণ কলামিষ্ট ও সম্পাদক আর কিংবদন্তীদের চোখে যিনি কচি শিশু সেই কথিত সম্পাদক শাহিদ হাতিমী কর্তৃক ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে পুষ্পকলি নামে একটি ছোট ম্যাগাজিন প্রকাশ হয়। উনার সাথে সহযোগী হিসেবে ছিল, উনার চেয়েও কচি-কাচা নবীন যাদের সম্পাদনায় ফুলগুলো ঝরে পড়ার সম্ভবনা ছিল বেশী, তবে তাদের প্রয়াসকে অভিনন্দন। নিজের চোখে নিজেই নবীনদের প্রবক্তা, কবি, কলামিষ্ট (শামসুল আদনান) উনার সম্পাদনায় ঝাকঝমক আয়োজনে সাময়িকী রুপে নব আলো নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ হয়, ৪/৫ সংখ্যা প্রকাশ হয়েছে, এর মধ্যে ইমার্জেন্সী আলো নামে একটি সংখ্যাও প্রকাশ হয়েছিল, হঠাৎ সম্পাদনা পরিষদে শুরু হলো পদবী আর স্বজন প্রীতির তামাশা, সম্পাদনা পরিষদ ভেঙ্গে দ’ুপক্ষ। দ্বিতীয় পক্ষ হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে প্রকাশ করলো একটি সংখ্যা , সংখ্যাটির সাথে দেখা হলো আমার, ভুলে ভরা-ঝরে পড়া লেখা, প্রচ্ছদটা ছিল মাসিক আল ফারুকের হুবহু প্রচ্ছদ, কিছুটা ব্যবধান, হিংসা নামক ভয়াল ব্যাধিটি ধ্বংস করে ফেলল শামসুল আদনানের ম্যাগাজিনটি। পাঠক শুভানুধ্যায়ীরা ঘৃণার ফুলঝুরি ছুড়ছে।
সিলেট তথা বাংলার আলেম সমাজ সাহিত্যাঙ্গনে যাদের নিয়ে গর্ব করেন, তাদেরই অন্যতম একজন আমাদের সিলেটের কৃতিসন্তান কথা সাহিত্যিক রশীদ জামিল সম্পাদিত কালান্তর নামীয় একটি ম্যাগাজিন ২০১২ সালের প্রথম দিকে প্রকাশ হয়। লাইব্রেরীর বারান্দায় ৩/৪টি সংখ্যার হৈ-চৈ দেখলেও হঠাৎ শুনি উদাও! কারণটা কি আজো জানিনি।
বিশেষ সংখ্যা হিসেবে অনাড়ম্বণ সৃজনশীল লেখায় ভরপুর ছিল প্রতিটি সংখ্যা। রশিদ জামিল ভাই, যার মান মর্যাদা অনেক উচ্চ, হঠাৎ করে প্রকাশনার ভুবনে পা বাড়ালেন কারণটা কি? মনে হয় কথা সাহিত্যিক হিসেবে যে মান মর্যাদা আছে তাতে তিনি অসন্তুষ্ট তাই বুঝি সম্পাদক হওয়ার স্বপ্নে প্রকাশনার দায়ভার কাধে নিয়েছিলেন, না হয় তিনি হঠাৎ করে ম্যাগাজিন প্রকাশ করলেন কেন?
এছাড়া ও আরো কয়েকটি সাপ্তাহিক ত্রৈমাসিক, মাসিক যেমনঃ- সোনালী সকাল, বাংলার নিউজ,সুলতানী পয়গাম,কালক্রম, কালচার, বাংলা কলম, আল ক্বাসিম, নব আলো, পুষ্পকলি প্রভূতি, এদের মধ্যে কোনটা মাঝে উকি দেয়, কোনটা একেবারেই বন্ধ, কোনটির ব্যক্তিগত সমস্যা, এভাবেই কাটছে আশার আলো পত্রিকাগুলির দিন। এই মুহুর্তে অনেক পত্রিকার নাম স্মরণে আসছেনা এবং অনেকটার হাদীস এখনও পাইনি, অনেকটার নাম আবার শুনেছি। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে “আশার আলো” হিসেবে একটিও নিজ গুনে মানে মাথা উঁচু করে দাড়াতে শক্তি পাচ্ছেনা। এরমধ্যে অনেকটা কারণ আছে, তন্মধ্যে কেউ কেউ হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করে, কেউ আবার ব্যবসার জন্য, কেউ পদের জন্য, কেউ সম্মান যোগাতে।
একথা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলতে পারি, মাসিক পত্রিকার অভাব দুর করতে সিলেট থেকে প্রকাশিত ৩টি পত্রিকাই পেরেছে, তন্মধ্যে এ্যাড. মাও. শাহিনুর পাশা চৌধুরী সম্পাদিত মাসিক তৌহিদী পরিক্রমা, মাও. শিব্বীর আহমদ সম্পাদিত জামিয়া মাদানীয়া বিশ্বনাথ সিলেট থেকে প্রকাশিত মাসিক আল ফারুক এবং মাও. আবদাল হুসাইন খান সম্পাদিত মাসিক হেফাযতে ইসলাম। মাসিক পত্রিকার বেলায় এগুলিই যথেষ্ট বলে মনে করি। তবে পরিক্রমার মাঝে স্বজনপ্রীতির কিছু ভাবসাব আছে, যেগুলোর বর্জন করা সময়ের দাবী, নয়তো স্বজন প্রীতির মামলা নিয়ে স্বজনমুখী পাটকের ধারে ঘুরবে। আর বাহবাহ দিবে বামপন্থীরা। সিলেটের লাইব্রেরী গুলোর সামনে দাড়ালেই সবার আগে চোখে পড়ে সিলেট সাহিত্যের সাহিত্যগুরুদের সম্পাদনায় প্রকাশিত পত্রিকাগুলোর লাল-নীল, হলুদ, বেনারশী প্রচ্ছদের আলখেল্লা। কে , কার থেকে কত উন্নতমানের প্রচ্ছদ পেপারে প্রকাশ করতে পারেন, পত্রিকাগুলোর দিকে তাকালেই বুঝা যায়। এ কথা তো জানা দরকার ছিল যে, কোন ভাল জিনিস কিছু দিন পর পুরাতন হয়ে গেলে তা আবর্জনার সাথে ফেলে দেয়া হয়। টিক তেমনি ঐ পত্রিকা গুলোর অবস্থা। ডজন ডজন পত্রিকাগুলো দেখলে মনে হয়, যেন সাহিত্যাঙ্গনে বাংলা চর্চা ও লেখক সংকট দূর হয়ে গেছে। । পত্র পত্রিকা নিয়ে পাটকের সাথে যেমন প্রতারণা হচ্ছে, টিক তেমনি লেখক তৈরীর শ্লোগান নিয়ে প্রকাশিত হয়ে ব্যর্থতার দায়ভার কাধে নিয়ে নবীনদেরকে প্রতারিত করা হচ্ছে। অনেকে আমার লেখাটি দেখে বাধ সাধবেন, যুক্তি দেখাতে চাইবেন, মন্তব্য করবেন, গা জ্বলে উটবে। তো আমি কি করবো। পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করছে, তাই লিখলাম।
এত পত্র পত্রিকা কেন? কোন কারণে? উত্তর অবশ্যই একটা আসবে, বাংলা চর্চার জন্য, বাংলা চর্চার নামে ব্যবসা চর্চা চলছে যে, খবর আছে তো? পত্র পত্রিকাদের প্রকাশনা কি বাংলা চর্চার মূল হাতিয়ার। যদি না হয়, তাহলে সবাই মিলে মান সম্পন্ন একটি পত্রিকা প্রকাশ করলে তো ভাল হত, চাই সাপ্তাহিক-দৈনিক, যে কোনটিই হোক।
সিলেটে পত্রিকা প্রেমীদের বিরোধীতার ফলে পত্র পত্রিকার এমন বাজার বসছে। সিলেটের আলেম প্রজন্মরা সাপ্তাহিক দৈনিকে পিছিয়ে, সবাই ছুটছেন মাসিকে। কালের চাহিদায় মাসিক পত্রিকা গুলোকে মেনে নিতে পারছেনা পাঠক সমাজ। প্রত্যেক পাঠকের এখন শুধু চাই সাপ্তাহিক-দৈনিক। আমাদের মধ্যে যারা সাপ্তাহিক-দৈনিক করার স্বামর্থ রাখেন তারা কেন মাসিক পত্রিকা বের করে অন্যের মাঠ আতœসাতের চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। সবাই মিলে পাঠকের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে এখনই একটি সাপ্তাহিক বা দৈনিকের প্রস্তুতি নেয়া এবং ধারাবাহিক প্রকাশের হাল ধরা উচিত। এখনও সুযোগ আছে। নইলে বামপন্থীরা মাঠ দখল করে নিবে।” সব ভুলে রোজ হও সাপ্তাহিক বা দৈনিকের ছায়াতলে”।“আশার আলো” পত্রিকাগুলোকে আর মরিচিকায় পরিনত না করে সংঘবদ্ধ হয়ে শিল্পে রুপান্তরিত করাই সময়ের দাবী। সময় কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। উপদেশ নয়, সংশোধন ও সজাগ হওয়ার জন্য বলছি। কারণ, সে দিন বেশী নয়, যে দিন বামপন্থীরা ডানপন্থীদের মাঠ দখল করবে। সময় নিকটে, সজাগ-সাবধান বন্ধু। লেখক: সাংবাদিক ও তরুণ লেখক