শিশু আকমল হত্যা : মামলার দায়েরের ৩ দিনেও গ্রেফতার নেই
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট শহরতলীর ঘোপালে শিশু শ্রমিক মো. আকমল হোসেন (১১) হত্যা মামলার নথি আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর মহানগর হাকিম আদালতে ২ এ উঠবে। এর মধ্যে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ ধার্য্য রয়েছে বলে জালালাবাদ থানার জিআরও ফরিদ আহমদ জানিয়েছেন।
এদিকে, হত্যাকান্ডের ঘটনার ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশ নিহত শিশু শ্রমিক আকমলের দরিদ্র পরিবার। তবে পুলিশ বলছে, স্পর্শকাতর হওয়ায় তদন্ত ও তথ্য-প্রমান না পেয়ে কাউকে গ্রেফতার করতে চাচ্ছেনা পুলিশ। তথ্য-প্রমান, তদন্তসহ পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে, নিহত আকলমের বাবা এখলাছ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমি দিনমজুর সারাদিন কাজে থাকি, গরিবের মামলার খবর হয় না।
ছেলে হত্যা ও মামলা দায়েরের ৩দিন পেরিয়ে গেছে, এখনো পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করায় তিনি হতাশ। তিনি বলেন, আকমলের ব্যবহৃত মোবাইলের সিম, মেমোরিকার্ডও রেখে দিয়েছে মালিক পক্ষ, মেমোরিকার্ডে অনেক ছবি ছিল এখন দেখার জন্য একটা ছবিও নেই আমার পরিবারের কাছে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, মামলাটি স্পর্শকাতর তাই গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। পুলিশ তথ্য-প্রমান ছাড়া কাউকে হয়রানি করতে চাচ্ছেনা। গ্রেফতারের জন্য সবস্থানে অভিযান করে জানা গেছে, আসামীরাও বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তবে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০ আগষ্ট বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে সিলেট শহরতলীর ঘোপালস্থ ফুড মার্ক ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর মালিক হাজী মোঃ ওহাব আলী ও ফ্যাক্টরীর কারিগর আব্দুর রহমানসহ ৫/৬ জন মিলে ফ্যাক্টরীর শিশু শ্রমিক মোঃ আকমল হোসেনকে শৌচাগারে নিয়ে ওয়ালের সাথে সেট করে ব্যাপক মারধর করে ইটের আদলা দিয়ে মাথা তেঁতলে দিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।
এরপর আকমলের প্রচুর রক্তপাত হলে দ্রুত তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত আকমলের বাবা এখলাছ মিয়া বাদী হয়ে ফ্যাক্টরীর মালিক হাজী মোঃ ওহাব আলী ও ফ্যাক্টরীর কারিগর আব্দুর রহমানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনকে আসামী করে এসএমপির জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত শিশু শ্রমিক আকলম হোসেন সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার পাহাড়পুর (পূর্ব রাজনপুর) গ্রামের দিনমজুর এখলাছ মিয়ার ছেলে। সে ঘোপালস্থ ফুড মার্ক ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে দু‘বছর ধরে ১৩শ’ টাকা বেতনে চাকুরী করতো। তার ৪ ভাই ও ২ বোন। ভাইদের মধ্যে আকমল তৃতীয়।