নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘর্ষে গুরুতর আহত চয়ন দাশের মৃত্যু
আহত রতনের অবস্থাও আশংকাজনক
উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ: নবীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ও চৌকি দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে গুরুতর আহত চয়ন দাশ গতকাল শনিবার বেলা ১১টার সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুত্যু বরন করেছেন। নিহত চয়ন দাশের ভাই অবিনাশ মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন,গতকাল শনিবার রাত ৯ টায় ময়না তদন্ত শেষে মৃত দেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হলে তাকে শেষ বারে মত এক নজর দেখার জন্য শত শত লোক বাঢ়ীতে ভীড় জমায়। এ সময় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অপর আহত রতন দাশ ওরপে টিক্কার অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার পুত্র সম্ভল মিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার চৌকি গ্রামের পিলু দাশের ফিশারীতে জোরপূবর্ক মাছ ধরতে যায়। এতে পিলু দাশ বাধা দিলে সম্ভল মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তাকে প্রাণনাশসহ উচিত শিক্ষা দেয়ার হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দৌলতপুর গ্রামের মৃত চান মিযার পুত্র আবুল কালাম আজাদ ও মৃত সোলেমান মিযার পুত্র রব্বানী মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ২/৩ শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অরবিন্দু দাশের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়। খবর পেযে পিলু দাশ ও চয়ন দাশ ঘটনা স্থলে গিযে তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে উত্তেজিত লোকজন তাদের উপরও হামলা করে। এতে চয়ন দাশ গুরুতর আহত হন। তাদেরকে বাচাঁতে রতন দাশ এগিয়ে আসলে তার উপরও হামলা করা হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রামের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দৌলতপুর গ্রামের লোকজন চৌকি গ্রামের সমীরণ দাশের একটি মোটর সাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায় । খবর পেয়ে নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ ও বানিয়াচং-এর মার্কুলী ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ঘটনার পরপরই গুরুতর আহত চয়ন দাশ(৩০) ও রতন দাশ টিক্কা(৩৫)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চয়ন দাশের অবস্থার অবণতি ঘটলে গত শুক্রবার দুপুরে তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৩ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গতকাল শনিবার দুপুরে চয়ন দাশের মৃত্যু হয়। চয়ন দাশের মৃত্যুর খবরে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চৌকি গ্রামের লোকজন জানান,তারা সংখ্যালঘু হওয়ার কারনে দৌলতপুর গ্রামের লোকজন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা,ভাংচুর ও আহত করে। তাদের তান্ডবে রেহাই পায়নি শিব মন্দিরও। হামলাকারীরা উক্ত মন্দির ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তবে গতকাল শনিবার ছিনতাইকৃত মোটর সাইকেলটি পুলিশ উদ্ধার করছে বলে জানাগেছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বাতেন খাঁন আহত চয়নের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন,এখনো মামলা দেয়া হয়নি। নিহতের লোকজন মামলা দিলে সেটি গ্রহণ করাসহ আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।