সাফ ফুটবলকে ঘিরে নগরীতে চলছে কৌশলে চাঁদাবাজি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটে গতকাল রোববার পর্দা উঠছে সাফ অনুর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের। এই ফুটবল টুর্নামেন্টকে ঘিরে নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে পথচারীকে থামিয়ে টাকা আদায় করছেন কিছু তরুণ। সাফ ফুটবলকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে তরুণদের টাকা আদায়ের ঘটনায় নগরবাসী বিব্রত, বিরক্ত। নগরীর রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজারসহ বিভিন্ন শপিং মলের সামনে এ ঘটনা দেখা যায়। কিছু তরুণ হাতে রং-তুলি নিয়ে পথচারীকে থামিয়ে তাদের হাতে আলপনা এঁকে এ টাকা আদায় করছেন।
নগরীর আল-হামরা শপিং সিটির সামনে পথচারীর পথ আগলে দাঁড়ালেন এক যুবক বললেন, আজ আমাদের খুশির দিন, খেলা শুরু হচ্ছে আপনাদের শহরে। আমরা ঢাকা থেকে এসেছি, আপনাদের ছোট ভাই, আপনাদের এলাকার মেহমান। এই বলে ওই যুবক পথচারীর হাতের মধ্যে রং-দিয়ে ইংরেজী অক্ষরে ইঅঘএখঅউঊঝঐ “বাংলাদেশ” লিখে দিলেন এবং বললেন যে যা পারে খুশি হয়ে দিচ্ছে। ওই পথচারী পকেট থেকে ১শত টাকা বের করে দিলে যুবক বললেন ছি..ছি..ছি ভাইয়া, করছেন কি? আমরা ৫০০ টাকার নিচে নিচ্ছি না। ঠিক আছে.. আপনার যদি বেশি সমস্যা হয় তবে থ্রি হানড্রেড দিয়ে দিন এর নিচে তো হবেই না। পরে ওই পথচারী ১০০ টাকা দিয়েই কোন রকমে রেহাই পেলেন।
এ বিষয়ে অভিযোগ করে ওই পথচারী বলেন, আমাদের ছেলেরা শিক্ষিত হয়ে রাস্তায় এভাবে ভিক্ষা করছে ভাবতে অবাক লাগে। যখন আমাকে তারা ঘিরে ধরে তখন একই কায়দায় আরো কয়েকজন পথচারীকে এ সমস্যায় পড়তে দেখেছি। খেলা শুরু হচ্ছে এই খবর সিলেটবাসীর জন্য আনন্দের তার মানে কি এই ভাবে পথে আলপনার নামে রং-তুলি নিয়ে দাড়াতে হবে? কারো মতামতের অপেক্ষা না করে তার হাতে-গালে রং ঘষতে হবে? টাকা দিতে বাধ্য করতে হবে ! অবাক কান্ড!
তিনি আরো বলেন, আমার এতোটা কষ্ট লাগতো না যদি না তারা আমার হাতে ?”বাংলাদেশ” বানানটা পুরো লিখে দিতো। আমার কাছ থেকে টাকা নেয়াটাই ছিলো তাদের মূল উদ্দেশ্যে। তাই পুরো ?”বাংলাদেশ” লিখে সময় নষ্ট করতে চায়নি তারা।
সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে এক যুবকের সাথে আলাপ করে জানা যায়, তার বাড়ি রাজশাহীতে। তিনি সিলেটে আসছেন বন্ধুদের সাথে বেড়াতে এমন সময় খেলার এই আয়োজন তাদের ভ্রমণকে আরো আনন্দময় করে তুলেছে.. এই ফাঁকে একটু দুষ্টুমি.. এই আর কি। কিন্তু আপনারা তো নির্ধারিত অংক বলে পথচারীকে চাপ দিয়ে টাকা আদায় করছেন এটা কি চাঁদাবাজি নয় গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আপনি কি সাংবাদিক নাকি? সাংবাদিক জেনেই পরে তিনি এক দৌড়ে সরে পড়েন।
আমাদের ছেলেরা খেলা-ধুলার আনন্দে সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে হাতে রং-তুলি নিয়ে বেরিয়েছে এর- ওর শরীরে আলপনা আঁকছে দেশের পতাকা, দেশের নাম লিখে দেয়ার কারনে আবেগে আপ্লুত হয়ে অনেকেই তাদের হাতে রং-তুলির খরচা-পাতি হিসেবে মাঝে মধ্যে টাকা গোজে দিচ্ছেন এ পর্যন্ত সবই ঠিক আছে কিন্তু কাউকে বাধ্য করে নির্ধারিত অংকের টাকা চাওয়া অবশ্যই চাঁদাবাজি। আর এ চাঁদাবাজি সিলেটে সাফ অনূর্ধ্ব ১৬ ফুটবল টুর্নামেন্টকে ঘিরে হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়টি আমলে নিবেন এমনটাই আশা ভোক্তভূগীদের।