৬৮ বছর পর অবসান হলো বঞ্চনার
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ দীর্ঘ ৬৮ বছরের অবরুদ্ধ আর নাগরিকত্বহীন জীবনের শেষ হলো ছিটমহলবাসীর। সেই সঙ্গে অবসান হলো শত বঞ্চনার।
১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আলোকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহলের বিনিময় হলো শক্রবার দিনগত রাতে। ছিটমহলবাসী পেল তাদের পরিচয়, নির্দিষ্ট ভূখন্ড, মাতৃভূমির জাতীয় পতাকা আর মানচিত্র।
৩১ জুলাই রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চগড়ের গাড়াতি ছিটমহলে মুসলিম ধর্মালম্বীরা তাদের বাড়িতে বাড়িতে ৬৮টি করে মোমবাতি ও সনাতন ধর্মালম্বীরা ৬৮টি করে প্রদীপ জ্বালিয়ে উদযাপন করল তাদের বিজয় উল্লাস।
মশাল মিছিল, নাচ-গান আর নানা আয়োজনে তারা উপভোগ করছেন বিজয়ের আনন্দ। রাতভর চলবে পালাগান।
গাড়াতি ছিটমহলের ফোরকানিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত সাংস্কৃতিক আয়োজন ছিটমহলবাসীরা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সর্বস্তরের মানুষ উপভোগ করছেন।
ছিটমহলবাসীর আনন্দে অংশ নিতে ছুটে এসেছেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রসানের কর্মকর্তাগণ।
গাড়াতি ছিটমহলের ৭০ বছর বয়সী জীতেন চন্দ্র রায় বলেন, অনেক খুশি হয়েছি, এই আনন্দের কথা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা। এখন মরার আগে অন্তত বলতে পারব যে আমি বাংলাদেশের নাগরিক, আমি বাংলাদেশি। কথাগুলো বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পঞ্চগড়ের গাড়াতি ছিটমহলের চেয়ারম্যান মো. মফিজার রহমান জানান, বিজয়ের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। ১৯৭৪ সালে তিনি যে চুক্তি করে গেছেন সেই চুক্তি আজ তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলো। আজ আমরা স্বাধীন। আমরা ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সরকারের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
গাড়াতি ছিটমহলে ছিটমহলবাসীর আনন্দে অংশ নিতে আসা পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মো. গিয়াস উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা ছিটমহলবাসীর এই বিজয়ের আনন্দে অংশ নিতে ও তাদের অভিনন্দন জানাতে এসেছি এবং তাদের এই উল্লাস আয়োজনে পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি।