বলাৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই চুরির অভিযোগ (ভিডিও)

Samiul_Killersসুরমা টাইমস ডেস্কঃ শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন করে, আর নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চুরির ঘটনা সাজিয়ে হত্যা করা হয়!!! অভিযোগ নিহত শিশু রাজনের পরিবারের সদস্যদের। সময় টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে ঘটনার বিস্তারিত।
গত বুধবার সিলেট নগরীর কুমারগাও বাস স্ট্যান্ডের একটি দোকানের সামনে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয় শিশু রাজনকে। জানা যায় গত বধবার কুমারগাও বাজারে রাজনের সাথে যৌন নির্যাতন করার চেষ্টা চালয় ঘাতকরা। ব্যার্থ হয়ে মিথ্যা চুরির অভিযোগ এনে শিশুটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।মৃত্যুর আগে একটু পানি চেয়েও পায়নি শিশু রাজন। পানির বদলে প্রশ্রাব খেতে বলা হয়। কেউ আবার বলে পানি নাই, ঘাম খা। পেছন থেকে একজন ব্যাংগ করে বলে বিয়ার আছে, খাবে নাকি?
আমাকে আর মারবেন না, মরে যাবো। হাড়-গুড় ভেঙে গেছে। পুলিশের দিয়ে দেন। একটু পানি খাওয়ান। আর পারছি না।’ মাকে বিয়ে দেবো বলেও শেষ রক্ষা হয়নি শিশুটির। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার আগ পর্যন্ত তাঁকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হয়েছে।‘ আর প্রচণ্ড উল্লাসে সেই মধ্যযুগীয় বর্বর ঘটনার ভিডিও করেছে তারা। বুধবার এ ঘটনার পর দুষ্কৃতকারীরা রাজনের লাশ গুম করার চেষ্টা করে। রাজন মারা গেছে বুঝতে পেরে তার লাশ গুমের চেষ্টা চালায় তারা। লাশ গুমের চেষ্টাকালে মুহিত আলম নামে একজনকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে দেয়। পুলিশ ওই দিন দুপরের দিকে রাজনের লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু তখনও রাজানের বাব-মা জানতেন না যে তার ছেলেকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। রাতে ছেলে বাড়ি না ফেরায় রাজনের বাবা-মা জালালাবাদ থানায় জিডি করতে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন একটি কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একপর্যায়ে তারা তাদের সন্তানকে শনাক্ত করেন। আজিজুর যেদিন ভাড়ায় মাইক্রোবাস চালাতে পারেন না, সেদিন সংসার খরচ চালাতে সবজি বিক্রি করতে বের হয় রাজন। মা লুবনা আক্তার জানান, বুধবার রাজনের বাবা গাড়িতে (ভাড়ার ট্রিপে) ছিলেন বলে বাড়ি ফেরেননি। ভোরে টুকেরবাজার থেকে সবজি নিয়ে বিক্রির জন্য রাজন বের হয়েছিল। সারা দিন ছেলের খোঁজ পাননি তারা। রাতে থানায় গিয়ে জিডি করার সময় এক কিশোরের লাশ পাওয়া গেছে জানতে পেরে তারা রাজনকে শনাক্ত করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার পুয়া (ছেলে) চোর না। ই কথা সারা এলাকার মানুষ জানে। প্রবাসী অখলতের চোর ধরার সখ পূরণ করতে গিয়া জীবন দিছে আমার পুয়া! আমি এর উচিত বিচার চাই।’
শিশুটিকে নির্যাতনের সময় মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয় খুনিরা। এই পৈচাশিক ভিডিও মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর সারা দেশজুড়ে এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠে।
শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ আটক করে মুহিতকে (২৫)। পরবর্তীতে ভিডিওচিত্র দেখে এই ঘটনার সাথে অপরাপর জড়িতদের সনাক্ত করে পুলিশ। মুহিত ছাড়াও রাজনকে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত ছিলো তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার (৩৪) ও নৈশপ্রহরী ময়না মিয়া (৪৫)।

https://www.youtube.com/watch?v=c3hwlNorrjc