ব্রিটিশ বাংলাদেশি একই পরিবারের ১২ সদস্যকে ফুসলিয়ে আইএসে যোগদান
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ব্রিটেনের লুটন শহরে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক পরিবারের ১২ জন সদস্যকে প্রতারনার মাধ্যমে সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগদান করানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করছে ব্রিটিশ পুলিশ। তবে ব্রিটেনে বসবাসরত এ পরিবারের কোনো সদস্যের জঙ্গিদের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো তথ্য এর আগে পুলিশের জানা ছিল না। গত এপ্রিলে পরিবারটি বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন । এরপর ব্রিটেনে রওনা দেয়ার পর তুরস্কে তারা যাত্রাবিরতি করার পর সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয় বলে ধারণা ব্রিটিশ পুলিশের।
গত ১৭ মে তাদের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল। এর পর থেকে তাদের কোন সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিবারের সাথে তিনটি শিশুও রয়েছে। তাদের বয়স এক থেকে ১১ বছর। তাদের স্বজনরা বলছেন, পরিবারটির নারী, শিশু ও বৃদ্ধ সহ সবাই আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেছে যা তাদের মোটেও বিশ্বাস হচ্ছেনা । তাদের আচরণে কখনো এধরনের জিহাদি মনোভাব ছিল না তাই এ পরিবারের খোঁজ পেতে স্বজনরা পুলিশের কাছে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন।
কিন্তু বেডফোর্ডশায়ারের পুলিশ বলছে তাদের ধারণা বাংলাদেশি এ পরিবারটি ছুটি কাটানোর পর বাংলাদেশ থেকে তুরস্কে যাত্রা বিরতির পর সেখান থেকে সিরিয়ায় ঢুকে পড়ে। এরপর আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয়।
পরিবারটির সদস্যরা হচ্ছেন, মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান (৭৫), তার স্ত্রী মিনারা খাতুন (৫৩), তাদের মেয়ে রাজিয়া খানম (২১), পুত্র মোহাম্মদ জায়েদ হুসেইন (২৫), মোহাম্মদ তৌফিক হুসেইন (১৯), মোহাম্মদ আবিল কাশেম সাকার (৩১), তার স্ত্রী সাইদা খানম (২৭), মোহাম্মদ সালেহ হুসেইন (২৬), তার স্ত্রী রোশনারা বেগম (২৪) এবং এ দম্পতির তিন সন্তান যাদের বয়স ১ থেকে ১১ বছর।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মুহাম্মদ মান্নান ডায়াবেটিসে এবং তার স্ত্রী মিনারা খাতুন ক্যান্সার আক্রান্ত । তাদের স্বজনরা এক বিবৃতিতে বলেছেন পরিবারটির সবাইকে হারিয়ে তারা প্রচন্ড উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। বেডফোর্ডশায়ার পুলিশ এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় যে পরিবারটি সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম করেছে কি না।
বিবিসি বলছে পুলিশের কাছে মুহাম্মদ মান্নানের আগের পক্ষের এক সন্তান যিনি ব্রিটেনের লুটনে থাকেন তিনি এ পরিবারটির লাপাত্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন। পুলিশ বলছে গত ১০ এপ্রিল লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে পরিবারটি বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে আসে। পরিবারটি সিরিয়ায় যেয়ে থাকতে পারে এধরনের সন্দেহ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ব্রিটেনে বসবাসরত পরিবারটির স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এছাড়া স্বজনদের এক বিবৃতিতে যদি কেউ পরিবারটির কোনো হদিস পায় তা পুলিশকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১২ সদস্যের জিহাদে যোগদান নিয়ে বিশ্বস্ত এক সূত্র নিশ্চিত করেছে ইস্তাম্বুল থেকে সিরিয়া যাওয়ার পরই পরিবারের এক নারী সদস্য ব্রিটেনে তার এক বোনের সাথে যোগাযোগ করে।পরিবারের বড় ছেলে সাকা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো পরিবারকে প্রায় জিম্মি করে সিরিয়া নিয়ে গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে অনেকেই মনে করছেন এই পরিবারকে প্রতারনার মাধ্যমে সিরিয়ায় নেয়ে যাওয়া হতে পারে। কারন আই এস কোন বৃদ্ধ লোকের কিংবা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েদের জন্য মানানসই নয়।