অনন্ত বিজয় হত্যা : মামলা যেতে পারে ডিবি অথবা সিআইডি’তে

Ananta-Bijoy-Das3সুরমা টাইমস ডেস্কঃ পূবালী ব্যাংক’র জাউয়াবাজার শাখার কর্মকর্তা, মুক্তমনা ব্লগের অন্যতম ও বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাশের হত্যার চারদিনেও চিহ্নিত হয়নি ঘাতকরা। কেন-কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারেও পুরোপুরি নিশ্চিত নয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। হত্যার একঘন্টার মধ্যে টুইট ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা-৮ নামের একটি জঙ্গি সংগঠন এর দায় স্বীকার করলেও এসএমপি পুলিশ ওই একাউন্টগুলোর আইপি এখনো সনাক্ত করতে পারেনি।
এক কথায় বলা যায়, অনন্ত হত্যার তদন্তে গঠিত পুলিশের গঠিত তদন্ত দল অকুল সায়রে রয়েছে। তদন্ত’র কোনো কুল কিনারা করতে না পারায় পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে পুলিশ বলছে, এ হত্যাকান্ডে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। তাই পুলিশ বেশ সতর্কতার সাথে এর তদন্ত কাজ চালাচ্ছে। প্রয়োজনে যে কোনো তদন্ত সংস্থার সাহায্যও নেয়া হবে।
এদিকে অনন্ত খুনের চারদিনের দিন গতকাল শুক্রবার নিহতের বাসা সিলেট নগরের নুরানী দিঘীর পাড় এলাকার বাসায় শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। শ্রদ্ধানুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজন অনন্ত’র সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরের সুবিদবাজারস্থ নিজ বাসার সামনে মুখোশপড়া অজ্ঞাত ৪ ঘাতক কুপিয়ে খুন করে ব্লগার অনন্তকে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে তার বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদি হয়ে বিমাবন্দর থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু হত্যাকান্ডের চারদিনেও পুলিশ এখনো রয়ে গেছে অন্ধকারে। কারা, কেন এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, তার কিছুই উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি ঘাতকদের কাউকেই চিহ্নিতও করতে পারেনি তারা। শুধু হত্যার সময় সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা সেই যুবকের সন্ধানে কাজ করছে।
পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য থেকে ঘাতকদের মধ্যে অন্তত একজনকে সিলেটের বাসিন্দা বলে জানালেও তার পরিচয় বের করতে পারেনি তারা। এই হত্যাকান্ড অন্যান্য হত্যাকান্ড থেকে আলাদা হওয়ায় ‘সতর্কতার সাথে’ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের তদন্তে প্রয়োজনে সিআইডিসহ অন্যান্য তদন্ত সংস্থার সাহায্য নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, পুলিশ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে সিআইডিসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ তদন্ত সংস্থার সাহায্য নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় দিনদুপুরে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে অনন্ত বিজয় দাশকে। সকাল ৯টায় সুবিদবাজারস্থ দস্তীদারদিঘীর পাড় (নূরানী দিঘিরপাড়) এলাকায় তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাৎক্ষণিক অনন্তকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলেই অনন্তের মৃত্যু হয়েছে ধারণা করা হয়।
এঘটনায় নিহতের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদি হয়ে মুখোশপরা চার অজ্ঞাত ঘাতককে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মুক্তমনা ব্লগে লেখালেখি ও ‘যুক্তি’ নামের একটি বিজ্ঞানভিত্তিক ছোট কাগজের সম্পাদক ছিলেন অনন্ত। পাশাপাশি পূবালী ব্যাংক জাউয়া বাজার শাখার উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।