বিশ্বনাথে অগ্নিদগ্ধ হয়ে যুবকের মৃত্যু : এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: বিশ্বনাথে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সুজন মিয়া (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে কবর পাওয়া গছে। সে উপজেলার নতুনবাজারের রাজনগর সড়কের জালাল উদ্দিন ও শিরিনা আক্তার দম্পতির পালক পুত্র। গত রোববার রাতে জালাল উদ্দিনের এঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় তার লাশ বিশ্বনাথে আসে। নিহতের সুজনের স্ত্রী ও শশুর তাকে কেরোসিন ঢেলে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে নিহতের পালক পিতা জালাল উদ্দিন দাবি করেন সুজন মানুসিক রোগী, সে নিজ কোরোসিন ঢেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। তবে যুবকের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্ঠি হয়েছে। তবে এঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
জানাগেছে, সিলেটের জকিগঞ্জের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন প্রায় ৪৫ বছর পূর্বে বিশ্বনাথে আসেন। এখানে এসে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি উপজেলা সদরের পুরানবাজারে ব্যবসা করে আসছেন। এক পর্যায়ে জালাল উদ্দিন বিশ্বনাথ নতুনবাজারের রাজনগর সড়কের পাশে জমি ক্রয় করে দু’তলা বাসা নির্মাণ করেন। স্ত্রী নিয়ে চলে তাঁর সংসার। নি:সন্তান জালাল উদ্দিনের বাসায় একজন কাজের ‘ঝি’ ছিল। তার নয় মাসের এক ছেলে সন্তান নিয়ে জালালের বাসায় ঝি কাজ করে আসছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২৫ বছর পূর্বে হঠাৎ সে নয় মাসের শিশু সন্তান রেখে মারা যায়। জালাল উদ্দিনের বাসার কাজের বুয়ার রেখে যাওয়া ছেলে সুজন মিয়া কে এলাকাবাসির অনুরোধে জালাল উদ্দিন লালন-পালন করে আসছেন। ধীরে ধীরে সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। দীর্ঘ ১৫ বছর পূর্বে জালাল উদ্দিনের স্ত্রী শিরিনা বেগমের গর্ভে এক ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। বর্তমানে ওই ছেলের বয়স ১৫ বছর।
গত বছর উপজেলার মিরেরচর গ্রামের চান মিয়ার মেয়েকে পরিবারের সম্মতিতে জালাল উদ্দিন তার পালক পুত্র সুজনকে বিয়ে করিয়ে পুত্র বধু হিসেবে ঘরে তুলেন। বর্তমানে সুজনের স্ত্রী চার মাসের অন্ত:সত্তা বলে জানাযায়। ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্বে সুজনের স্ত্রী তার পিত্রালয়ে চলে যান। ঘটনার খবর পেয়ে সুজনের স্ত্রী সোমবার ভোরে এসে আহত স্বামীকে দেখতে হাসপাতালে যান। অবশেষে মঙ্গলবার ভোর বেলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুজন মারা যায়।
নিহত সুজনের শশুড় চান মিয়া বলেন, খবর পেয়ে সোমবার সকালে আমার মেয়েসহ সুজনকে দেখতে সিলেট হাসপাতালে ছুটে যাই। সুজন আমাদের বলে, সে ওই রাতে ঘুমিয়ে ছিল। কিভাবে তার শরীরে আগুণ লেগেছে বলতে পারিনি। তার পালক পিতা-মাতা কোরোসিন দিয়ে তার শরীরে আগুণ দিয়েছে বলে সে জানায়।
সুজনের বাবা জালাল উদ্দিন জানান, ছোট বেলা থেকে মানসিকভাবে সমস্যাঢ ভূগছিল। তাকে অনেক চিকিৎসা করানো হয়। তারপর সে ভাল হয়নি।
তিনি বলেন, সুজন বিষ পাণ করে ও গলায় ফাঁস দিয়ে কয়েক বার আতœহত্যার চেষ্ঠা করে। এবিষয়ে থানায় জিডি এন্টি করি।
গত রবিবার রাত দেড়টায় সুজন কেরোসিন ঢেলে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় সে অগ্নিদগ্ধ হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে চিকিৎসার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ঢাকায় প্রেরণ করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মঙ্গলবার ভোরে মারা যায়। তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।