সিলেট সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে পে অর্ডার গায়েব : তোলপাড়
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট জেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিলের পে অর্ডার চুরি নিয়ে দিনভর চলে তোলপাড়। গতকাল রোববার দুপুর ২টার সাবরেজিস্ট্রারি অফিস থেকে পে অর্ডার খোয়া গেলে সন্ধ্যার দিকে টনক নড়ে সাব রেজিস্ট্রারের। ব্যাংকের মাধ্যমে এখবর জানাজানি হলে নগরীতে শুরু হয় তোলপাড়। পরবর্তীতে নাটকীয় ভাবে উদ্ধার হয় ৫১৯৯নং দলিলের রেজিস্ট্রারকৃত সোনালি ব্যাংক কোর্ট শাখার ১লাখ ৮হাজার ৫শত টাকা।
গতকাল সন্ধ্যার দিকে নগরীতে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত হন গণমাধ্যম কর্মীরা। তবে এই পে অর্ডারের টাকা আত্মসাত করার পরিকল্পনা ছিল রেজিস্ট্রার অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তাদের। এমনকি এর সাথে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সাব রেজিস্ট্রার আবু তালেম মিয়ার। পরিকল্পনা অনুযায়ি উদ্ধার হওয়া পে অর্ডারের চুরি হওয়া আবার পরবর্তীতে তা উদ্ধারের নাটক নিয়ে নানা ধরনের রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অফিস সূত্রে জানা যায়,গতকাল সকালে ৫১৯৯নং দলিলের মাধ্যমে জায়গা ক্রয় করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। আর ভূমির বিক্রেতা আছমা বেগমের পাওয়ার অব এ্যান্টির মাধ্যমে ভূমি বিক্রি করেন জামাল আহমদ সিদ্দিকী ১২লাখ টাকায়। পরবর্তীতে এই টাকা আত্মসাত করার পরিকল্পনা গ্রহণ হয় সাব রেজিস্ট্রারি অফিসে। আর পরিকল্পনা অনুযায়ি এইসব পে অর্ডার সরিয়ে ফেলা হয় অফিস থেকে। ব্যাংকের মাধ্যমে এখবর নগরীতে জানাজানি হলে সাব রেজিস্ট্রার অফিস এগুলো চুরি হয়েছে বলে জানায়। অফিস থেকে পে অর্ডার কিভাবে হারিয়ে যায় বা চুরি হয় এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি সাব রেজিস্ট্রার আবু তালেম মিয়া। এমনকি পে অর্ডারটি হারিয়ে বা চুরি হয়ে গেলেও এ ব্যাপারে দুপুর থেকে কোন ভূমিকা পালন করেননি সাব রেজিস্ট্রার আবু তালেম মিয়া।
চুরির অভিযোগ তুলে এ ঘটনায় দায় চাপানো হচ্ছে- ইমন আহমদ (১৮) সে খাদিমপাড়া এলাকার বাসাং-২৭ এর বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ও বিলাল আহমদ (২০) একই এলাকার বাসিন্দা মহরম আলীর ছেলের উপর। দীর্ঘদিন থেকে অন্যদের পাশাপাশি তারাও ওই অফিসে অঘোষিত ভাবে কাজ করে আসছে।
বিলাল জানায়, সে অফিসের বাহিরে দুপুর ২টার দিকে পে অর্ডার পেয়ে এগুলো সে পূর্ব পরিচিত ও একই অফিসে কর্মরত ইমনকে দেয়। পরবর্তীতে ইমন পে অর্ডার নিয়ে ব্যাংকে গেলে সে তা ভাঙ্গাতে পারেনি। ইমন জানায়, পে অর্ডার নিয়ে আমি ব্যাংকে যাই কিন্তু টাকা তুলতে পারিনি।
এ ব্যাপারে সাব রেজিস্ট্রার আবু তালেব মিয়া বলেন, বিলাল ও ইমন অফিস থেকে পে অর্ডার চুরি করে ভাঙ্গাতে গেলে ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা তা খবর পেয়ে উদ্ধার করি। আমরা পরবর্তীতে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এদিকে এ খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকরা সাব রেজিস্ট্রারি অফিসে যাওয়ার পর কারও সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি। এমনকি দরজা বন্ধ করে দুই ঘণ্টা ব্যাপী ইমন ও বিলালকে নিয়ে গোপন বৈঠক হয় সাব রেজিস্ট্রার আবু তালেম মিয়ার কক্ষে। পরে এনিয়ে সাংবাদিকরা ক্ষোভ ঝাড়লে সাব রেজিস্ট্রার এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি সোহেল আহাম্মদ বলেন, সাব রেজিস্ট্রার অফিস থেকে পে অর্ডার চুরি হওয়ার ঘটনায় আমাকে অবহিত করা হয়নি। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।